১৫ হাজার কিলোমিটার পায়ে হেঁটে বাংলাদেশে এলেন রোহান

দিন দিন পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে। আর এই পরিবেশকে রক্ষায় সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে ভারতের ২৭ রাজ্য ঘুরে পায়ে হেঁটে মেহেরপুরে রোহান আগারওয়াল নামের এক ভারতীয় যুবক। প্রায় ৯১০ দিনে ১৫ হাজার কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়েছেন তিনি। বাংলাদেশের ৪০টি জেলাও ঘুরেছেন। প্লাস্টিকের ভয়াবহতা থেকে পরিবেশকে রক্ষায় মানুষকে সচেতনতা সৃষ্টির লক্👍ষ্যে কাজ করছেন তিনি।

মহারাষ্ট্রের নাগপুরের যুবক রোহন আগারওয়াল। ছুটে চলেছেন বাংলাদেশের পথে-প্রান্তরে। কখনো পায়ে হেঁটে আবার কখনো কারও সাহায্য নিয়ে পাড়ি দিয়েছেন ভারতের ২৭টি রাজ্য। পথচারি কিংবা শিক্ষার্থী অথবা চায়ের আড্ডায় প্লাস্টিকের ভয়াবহতা সম্পর্কে বুঝাচ্ছেন ২১ বছর বয়স🔯ী এই যুবক।

নিজ দেশ থেকে ২০২০ সালের ২৫ আগষ্ট উত্তর প্রদেশের বারানসিতে গঙ্গার তীর থেকে পায়ে হেঁটে যাত্রা শুরু করেন রোহন আগরওয়া꧙ল। এর মধ্যে ভারতের রাজস্থান, হরিয়ানা, দিল্লি, চন্ডিগড়, হিমাচল, উত্তরখন্ড, মধ্য প্রদেশ, মহারাষ্ট্র, অন্ধ্রপ্রদেশ, তেলেঙ্গানা, তামিলনাডু, পন্ডিচেরি, কর্নাটক, কেরালা ও গোয়াসহ ভারতের ২৭টি রাজ্য শেষ করেছেন। বাংলাদেশের ৩৯টি জেলা ঘুরে তিনি মেহেরপুরে আসেন।

রোববার (১৯ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে মেহেরপুর শহরে প্রবেশ করে🌳ন তিনি। এরপর সোমবাജর (২০ ফেব্রুয়ারি) সকালে মেহেরপুর পৌর মেয়র মাহাফুজুর রহমান রিটনসহ বিভিন্ন পর্যায়ের মানুষের সঙ্গে দেখা করে তার উদ্দেশ্য সম্পর্কে জানান।

সাজেদুর রহমান নামের একজন বলেন, “পরিবেশ আমাদের জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। সেক্ষেত্রে বাংলাদেশে পরিবেশ অবস্থা খ💜ুবই খারাপ। পরিবেশ দূষণেরꦓ ফলে আমরা অসুস্থ হয়ে পড়ি বিভিন্ন ধরনের শারীরিক সমস্যায় পড়ি। আমরা পরিবেশের বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে দেখি না। রোহন আগারওয়াল ভারতসহ বাংলাদেশর বিভিন্ন জেলায় পরিবেশ নিয়ে কাজ করছে। বিভিন্ন দেশ থেকে আমাদের দেশে অনেকেই আসে সচেতনতা সৃষ্টিতে কাজ করার জন্য আমার মনে হয়েছে এই ধরনের উদ্যোগ বাংলাদেশ থেকে নেওয়া হলে আমরা পরিবেশ রক্ষা করতে পারব।”

তুহিন ইসলাম নামের একজন বলেন, “আমি তার সঙ্গে অনেক্ষণ সময় কাটিয়েছি। তার সঙ্গে কথা বলে তার এমন উদ্যোগ আমার ভালো লেগেছে। দিন দিন পরিবেশের ভারসাম্য নষ্🌼ট হচ্ছে। নির্মল সেই পরিবেশ আর নেই। ব্যবহার বেড়েছে প্লাস্টিক আর পরিথিনের। ক্ষতির সন্মুখীন হচ্ছে মানুষ। আমরা আসলে ভালোভাবে নির্মল বিশুদ্ধ বাতাসে বাঁচতে চাই। আমাদের সুস্থ থাকতে হলে সে👍ই পরিবেশ দরকার। এখন বর্তমানে বিশুদ্ধ পরিবেশ পাওয়া দুরূহ হয়ে পড়েছে। তার এই কার্যক্রম আমাদের সাধারণ মানুষদের অনুপ্রাণিত করছে।”

ভারত থেকে পায়ে হেঁটে আসা রোহন আগারওয়াল বলেন, “আমার বয়স ২১ বছর। ১৮ বছর বয়সে আমি এই যাত্রা শুরু করি। আমি ভারত ও নেপাল ভ্রমণ করেছি। এখন ম🍬েহেরপুরে এসেছি। কখনো পায়ে হেঁটে আবার কখনো কারও সাহায্য নিয়ে ৯১০ দিনে আমি ১৫ হাজার কিলোমিটার ভ্রমণ করেছি। আমার এই যাত্রা শুরু করার মূল উদ্দেশ্য হলো পরিবেশ নিয়ে মানুষকে সচেতন করা।”

রোহন আগারওয়াল বলেন, “আমরা আজ পর্যন্ত যা পেয়েছি তা শুধু পরিবেশই দিয়েছে। বিনিময়ে আমরা শুধুমাত্র সমস্যা আর দূষণই দিয়েছি। আর এটা এখন বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। আজকে আমরা দেখছি বন্যা, ঘূর্নিঝড়, ভূমিকম্প বৃদ্ধি পাচ্ছে। আর এটা শুধু মানুষ কিংবা পশু পাখি নয়, পুরো পৃথিবীর একটি বিপদজনক বিষয়। এটা যদি চলতে থাকে এবং ভবিষ্যতে যদি আরও বেড়ে যায় তাহলে, আমরা হুমকির মুখে পড়ব। এ জন্🏅যই আমি প্লাস্টিক এবং এর বিপজ্জনক প্রভাব সম্পর্কে সচেতনতা তৈরি করা এবং বৈচিত্রের মধ্যে ঐক্যের বার্তা দেওয়ার লক্ষ্যে কাজ করছি।”

তিনি আরও বলেন, “আমি ভারত ও বাংলাদেশের অনেক স্কুল ও ইনস্টিটিউট পরিদর্শন করেছি। তারপর আমি সাইবেরিয়ার ওমিয়াকোমে হেঁটে যাব। যেখানে তাপমাত্রা মাইনাস ৭২ ডিগ্রি এবং এটি পৃথিবীর সবচেয়ে শীতল স্থান। আমার আশ♉া আমিই দক্ষিণ এশীয় হিসেবে প্রথম স্থলপথে সেখানে পৌঁছাব। সাইবেরিয়া যাওয়ার পথে পাঁচ বছরে আমার দক্ষিণ এশিয়ার ২০টি দেশ অতিক্রম করার ইচ্ছা আছে। আমি সবার ভালোবাসা নিয়ে সামনে এগিয়ে যেতে চাই। আমাকে সর্বস্তরের মানুষ সাহায্য করছে। আমি ব্যক্তিগতভাবে এই যাত্রা শুরু করেছি।”