• ঢাকা
  • বুধবার, ২৮ আগস্ট, ২০২৪, ১৩ ভাদ্র ১৪৩১, ২২ সফর ১৪৪৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Songbad Prokash

ইনস্টাগ্রাম

টুইটার


লিংকডইন

পিন্টারেস্ট

গুগল নিউজ


স্বামীর জন্য স্কুলে বিশ্রামাগার, আছে ফ্রিজ-টিভি-গ্যাসের চুলা


কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি
প্রকাশিত: আগস্ট ২৮, ২০২৪, ১০:৪৫ এএম
স্বামীর জন্য স্কুলে বিশ্রামাগার, আছে ফ্রিজ-টিভি-গ্যাসের চুলা

জেলা শহরের ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কুড়িগ্রাম সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রুখ𒁃সানা পারভীন। ২০১০ সালে স্কুলটিতে যোগদান করেন তিনি। যোগদানের পর থেকেই স্কুলটিকে অনিয়ম আর স্বেচ্ছাচারিতার আঁতুড়ঘরে পরিণত করেন। এমনকি স্কুলের বিজ্ঞানাগারে (ল্যাব) স্বামীর বিশ্রামের জন্য পেতেছেন বিছানা।

সম্প্রতি স্কুলে গিয়ে দেখা গেছে, 🐟প্রশাসনিক ভবনের দ্ব♑িতীয় তলায় বিজ্ঞান ল্যাবের ভেতর ব্যবহারিক উপকরণ রাখার আলমারি দিয়ে পার্টিশন বানিয়ে স্বামীর জন্য তৈরি করেছেন বিশ্রামাগার। সেখানে বিছানা পেতে পাশে রাখা হয়েছে টেলিভিশন ও আলনা। রাখা হয়েছে একটি হাইস্পিড স্ট্যান্ড ফ্যান। শিক্ষক মিলনায়তনের পাশে তৈরি করা হয়েছে রান্নাঘর। রান্নাঘরে ফ্রিজ, গ্যাসের চুলা, রাইস কুকার, শোকেসে রাখা প্লেট-বাটি-গ্লাস।

স্কুলের সহকারী শিক্ষক ও আয়াদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রধান শিক্ষক রুখসানা পারভীনের পৈত্রিক নিবাস গোপালগঞ্জে। তার স্বামীর বাড়ি লালমনিরহাট জেলা সদরে। লালমনিরহাট থেকে প্রাইভেটকারে করে স্বামী রেজাউল করিমসহ নিয়মিত স্কুলে যাতায়াত করেন। স্কুল যেন তাদের 🌞দ্বিতীয় সংসার। স্কুল চলাকালীন তার স্বামী দিনভর স্কুলে থাকতেন। বেশির ভাগ সময় তার স্বামী বিজ্ঞানাগারে তৈরি করা বিশ্রামাগারে অবস্থান করতেন। এই দম্পতির জন্য স্কুলে তৈরি করা রান্নাঘরে নিয়মিত দুপুরের খাবার রান্না করা হয়। বাজারের জন্য পিয়ন এবং রান্নার কাজে স্কুলের আয়াকে নিয়োজিত করা হয়েছে। শুধু দুপুꦜরের রান্না নয়, বাড়ি ফিরে রাতের রান্নার উপকরণ স্কুলের রন্ধনশালা থেকেই প্রস্তুত করে নিয়ে যান প্রধান শিক্ষক।

শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মতো কুড়িগ্রাম সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা প্রতিষ্ঠান প্রধানের বিরুদ্ধে স্বেচ্ছাচারিতা, স্বৈরাচারী আচরণ, দুর্নীতি ও অনিয়মের নানা অভিযোগ তুলে তাকে অপসারণের দাবিতে আন্দোলনে নেমেছে🔯। স্কুলটির বর্তমান ও সাবেক শিক্ষার্থীরা গত দুই দিন ধরে স্কুল ও স্কুলের সামনে অবস্থিত বিজয়স্তম্ভ প্রাঙ্গণে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছে। বৃহস্পতিবারও দিনভর আন্দোলন করেছে তারা। এদিন বিকালে স্কুলের প্রশাসনিক ভবনসহ বিভিন্ন কক্ষে তালা ঝুলিয়ে দিয়ে সকল ধরনের শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ রাখার ঘোষণা দেয় শিক্ষার্থীরা। প্রধান শিক্ষকের অপসারণ ও তার দায়িত্বকালীন গত ১৫ বছরে স্কুলের আয়ব্যয়ের হিসাব প্রদানের দাবিতে তারা অনড় অবস্থান গ্রহণ🍃 করেছে। শিক্ষার্থীদের আন্দোলন আঁচ করতে পেরে গা ঢাকা দিয়েছেন প্রধান শিক্ষক রুখসানা পারভীন। গত দুই দিন ধরে স্কুলে অনুপস্থিত তিনি।

সহকারী শিক্ষকরা বলছেন, “স্কুলটি একদিকে প্রধান শিক্ষকের প্রমোদখানা, আরেকদিকে যেন দ্বিতীয় হারুনের হোটেল! কো🐟নও নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে স্কুলে একরকম ভীতিকর পরিবেশ তৈরি করেছেন প্রধান শিক্ষক। তিনি বেপরোয়াভাবে স্কুল পরিচালনা করছেন। গোপালগঞ্জে বাড়ি হওয়ায় তিনি সবসময় শিক্ষকদের থ্রেটের ওপর রাখতেন। বদলির ভয় দেখাতেন। ফলে ভয়ে কেউ মুখ খুলতেন না।”

তারা আরও জানান, গত ১৫ বছরে প্রধান শিক্ষক স্কুল ফান্ডের লাখ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন। ভর্তি বাণিজ্যস♚হ নানা অনিয়ম ও অনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিলেন। এ কাজে তাকে সহায়তা করেছেন জেলার কিছু সাংবাদিক নেতা ও রাজনীতিক। ভয়ে সাধার🐎ণ শিক্ষকরা কিছু বলতে পারতেন না। স্কুলশিক্ষার্থীদের আন্দোলনের পর শিক্ষকরা সাহস ফিরে পেয়েছেন। তারা শিক্ষার্থীদের দাবির সঙ্গে একমত পোষণ করেছেন। তবে প্রধান শিক্ষক স্কুলে আসছেন না। তিনি ছুটির আবেদন দিলেও তার ছুটি মঞ্জুর হয়নি।

সহকারী প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক) তুষার কুমার রক্ষিত বলেন, “স্কুলের ভেতর স্বামীর জন্য বিশ্রামাগার আর রন্ধনশালা তৈরি বিধিসম্মত নয়। কিন্তু আমাদের সবার মুখ এতদিন বন্ধ ছিল। আমাদের কিছু বলার ক্ষমতা ছিল না। কথা বললেই বদলির হুমকি। মর্নিং থেকে দিবা, দিবা থেকে মর্নিং শিফটে দেওয়াসহ নানা ধরনের হয়রানির হুমকি আমাদের দমিয়ে রেখেছিল। এখন আমরা শিক্ষার্থীদের দাবি ও আন্দোলনের সঙ্গে একাত্মত🧸া প্রকাশ করেছি। বিষয়টি আমরা জেলা প্রশাসক ও উপপরিচালককে লিখিত আকারে জানিয়েছি।”

Link copied!