দিন দিন ডায়াবিটিস রোগীর সংখ্যা বাড়ছেই। অল্প বয়েসই এখন ডায়াবিটিসে আক্রান্ত হতে দেখা যাচ্ছে। রক্তে শর্করা বেড়ে যাওয়াই হচ্ছে ডায়াবিটিস। যা এখন প্রায় সব বয়সী মানুষের মধ্যে দেখা যাচ্ছে। একবার এই রোগে আক্রান্ত হলে সারাজীবন ভুগতে হয়। নিয়মমাফিক চলাফেরা, নিয়মিত ওষুধ খাওয়ার মাধ্যমে রোগটিকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে হ✨য়।
ডায়াবিটিস রোগীরা নানা ধরণের শারীরিক জটিলতায় ভুগেন। এরমধ্যে একটি হলো দাঁতের সমস্যা। যাদের ডায়াবিটিস রয়েছে তাদের দাঁত নিয়ে বিশেষ সতর্ক হতে হবে। চিকিৎসকেরা জানান, রক্তেܫ শর্করা বাড়তে থাকলে এমন কিছু সমস্যা দেখা দেয়, যা সাধারণত ডায়াবিটিসের বলে মনে হয় না। কিন্তু এসব সমস্যা ডায়াবিটিসের জন্যই হচ্ছে। এর মধ্যে অন্যতম হলো দাঁতের সমস্যা। রক্তে চিনির মাত্রা বাড়লে নানা অঙ্গপ্রত্যঙ্গ বিকল হতে শুরু করে। তাই ডায়াবিটিসে আক্রান্ত রোগীদের চোখ, কিডনি, হৃদ্যন্ত্র, স্নায়ুর পাশাপাশি দাঁত ও মাড়ির সমস্যা হয়।
অনেকে দাঁতের ক্ষেত্রে অনেক বেশি সচেতন। এরপরও দাঁতের সমস্যা হচ্ছে। এর অন্যতম কারণ ডায়াবিটিসের মতো ক্রনিক অসুখ। চিকিৎসকরা জানান, ডায়াবেটিকদের ক্ষেত্রে মূল সমস্যা হলো ড্রাই মাউথের সমস্যা। মুখের লালারস শুকিয়ে যাওয়া। ‘হাইপোস্যালাইভেশন’-এর কারণেই দাঁতের অসুখের ঝুঁকি বাড়ে। মুখের লালা গ্রন্থি 🍌থেকে অনবরত লালারসের ক্🍌ষরণ হতে থাকে। এই লালারসই মুখের মধ্যে জমে থাকা খাবারের টুকরো, নানা জীবাণুর বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। ডায়াবিটিস রোগীদের মুখে লালার মাত্রা কমে যায়। তাই জীবাণুগুলো হামলা করে সহজেই। এতে দাঁতের গোড়া আর মাড়িতে সংক্রমণের ঝুঁকিও বাড়ে।
ডা𝓰য়াবিটিস রোগীদের দাঁতের বিষয়ে অতিরিক্ত সতর্ক থাকতে হবে বলে জানান চিকিৎসকরা। দন্ত্যচিকিৎসকরা জানান, ডায়াবিটিসের কারণে রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা অনেক কমে যায়। লালারসেও চিনির মাত্রা বেশি থাকে। তাই জীবাণুরা আক্রমণ করে। জীবাণুরা যে অ্যাসিড ক্ষরণ করে সেই অ্যাসিডেই দাঁতের ক্ষয় হয়। তাই ডায়াবিটিস রোগীদের দাঁতের বাড়তি যত্ন নিতে হয়।
ডায়াবিটিস থাকলে সাধারণত স্নায়ুর কার্যকারিতা ও সংবেদনশীলতা কমে যায়। রোগীদের দাঁতে শিরশিরানি কিংবা ব্যথা চট করে তাঁরা টের পান না। পরে তা গুরুতর হয়ে উঠতে পারে। তাই বছরে ♏অন্তত এক বার চিকিৎসকের কাছে পরীক্ষা করা জরুরি বলে জানান বিশেষজ্ঞরা।
এছাড়াও ঘরোয়াভাবে ড🦹ায়াবিটিস আক্রান্ত রোগীরা দ🀅াঁতের যত্ন নিতে হবে। দাঁতের যত্নে ডায়াবিটিস রোগীরা কিছু ভুল করেন যা এড়িয়ে চলা দরকার।
- অনেকে ডায়াবিটিস রোগী শুধু সকালে ঘুম থেকে উঠেই ব্রাশ করেন। সারাদিন আর ব্রাশ করেন না। কিন্তু ডায়াবিটিস রোগীদের সারা দিনে অন্তত দু’বার ব্রাশ করা জরুরি। দাঁতের যত্নে এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
- যেকোন টুথপেস্ট দিয়েই ব্রাশ করেন ডায়াবিটিস রোগীরা। যা মোটেও উচিত নয়। বরং বাজারে সুগার ফ্রি টুথপেস্ট পাওয়া যায়। সেই টুথপেস্ট ব্যবহার করতে হবে। চিনিযুক্ত টুথপেস্ট ব্যবহার করলে দাঁতের ক্ষতি হবে।
- সঠিক পদ্ধতিতে ব্রাশ করতে হবে। ব্রাশ করার পাশাপাশি ফ্লসিং করবেন। দাঁতের ফাঁকে যেন খাবার আটকে না থাকে খেয়াল রাখবেন। রাতে ঘুমোনোর আগে ব্রাশ করুন। রাতে ঘুমোনোর সময়ে আমাদের মুখ বন্ধ থাকে। এতে মুখে জীবাণুদের সংক্রমণ হয় না। তাই সকালে ঘুম থেকে উঠেই সঙ্গে সঙ্গে ব্রাশ না করলেও চলবে। বরং নাস্তা শেষে ব্রাশ করে নিন।
- ডায়াবিটিসের রোগীরা মিষ্টি খাবার খেতে পারবেন না। তবুও মাঝেমধ্যে একটু তো খাওয়াই হয় মিষ্টি। এসব খাবার খাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে কুলকুচি করে নিন। চা, কফি খাওয়ার পরেও ভালোভাবে কুলকুচি করুন।
- ধূমপানের অভ্যাস ত্যাগ করুন। এটি দাঁতের ভয়ানক ক্ষতি করে। ধূমপান করলে দাঁতের সমস্যা আরও কয়েক গুণ বেড়ে যাবে।