জেলা প্রশাসক (ডিসি) পদ নিয়ে সচিবালয়ে হট্টগোলের ঘটনায় ১৭ জন উপ-সচিবকে শাস্তি দেওয়ার সুপারিশ করেছে এ ঘটনায় গঠিত কমিটি। সংশ্লিষ্ট সূত্রে তাদের নাম পাওয়া গেছে। সচিবালয়ের জনপ্রশাসন মন্ত্রণাল𒐪য়ে হাতাহাতির ঘটনায় শাস্তির মুখে থাক𝓰া ১৭ কর্মকর্তার মধ্যে ১৫ জন পুরুষ এবং নারী কর্মকর্তা আছেন দুই জন। এই কর্মকর্তাদের সবাই উপসচিব।
গত ১০ সেপ্টেম্বর ডিসি নিয়োগকে কেন্দ্র করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের দ্বিতীয় তলায় যুগ্মসচিবের (মাঠ প্রশাসন) রুমে হাতাহাতিতে জড়ান বেশ কয়েকজন উপসচিব। ওই ঘটনার পর সেই যুগ্মসচিবকে ঢাকার বাইরে বদলি করা হয়। অন্যদিকে উপসচিবদের দোষ নির্ধারণে এক সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন হয়। স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সিনিয়র সচিব এম এ আকমল হোসেন আজাদের নেতৃত্বে তদন্ত কমিটি আট জনকে গুরুদণ্ড, চার জনকে লঘুদণ্ড ও পাঁচ 😼জনকে তিরস্কার-এর শাস্তি দেওয়ার সুপারিশ করে।
গুরুদণ্ড দেওয়ার জন্য সুপারিশ করা হয়েছে নুরজাহান খানম, মো. নুরুল করিম ভূঁইয়া, মো. জসিম উদ্দিন, রে💜বেকা খান, মো. সাইফুল হাসান, মোহাম্মদ জয়নুল আবেদিন,🐬 নুরুল হাফিজ এবং মোতাকাব্বীর আহমেদের বিরুদ্ধে।
লঘুদণ্ডের সুপারꦫিশ থাকা চার কর্মকতা হলেন হাসান হাবীব, মো. আ. কুদদূস, আব্দুল মালেꩵক, মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম নজরুল।
অন্যদিকে শাস্তি হিসেবে `তিরস্কার` করার সুপারিশ থাকা পাঁচ জন হলেন মো. সগীর হোসেন, মো. মুনিরুজ্জামান, এস এ꧑ম জাহাঙ্গীর হোসেন, মো. হেমায়েত উদ্দীন, মো. তোফায়েল হোসেন। `তিরস্কার` লঘুদণ্ডের মধ্যে সবচেয়ে কম মাত্রার দণ্ড।
এ বিষয়ে নাম প্রকাশ করে প্রশাসনের কোনো কর্মকর্তা মন্তব্য করতে রাজি 𓄧হননি। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের এক দায়িত্বশীল কর্মকর্তা বলেন, “সরকার যদি প্রশাসনে নিয়ন্ত্রণ দৃশ্যমান করতে চায় তাহলে এই কর্মকর্তাদের শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।` তিনি বলেন, `অন্য সরকারের মতো হাতে পায়ে ধরলে মাফ করা যাবে না। তেমন হলে ভবিষ্যতে আরও এমন ঘটনা ঘটবে, যাতে প্রশাসনের বড় ক্ষতি হয়ে যাবে।”
সোমবার (৩০ সেপ্টেম্বর) সচিবালয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এক ব্রিফিংয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব ড. মো. মোখলেস উর রহমান বলেন, গত ১০ সেপ্টেম্বর আমাদের মন্ত্রণালয়ে একটি আনরেস্ট (অসন্তোষ) হয়েছিল। সেটার জন্য এক সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছিল। এটার প্রধান ছিলেন স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সিনিয়র সচিব এম এ আকমল হোসেন আজাদ। তার রিপোর্ট পাওয়া গেছে। বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা থেকেও প্রতিবেদন পাওয়া গেছে, সাক্ষী-প্রমাণ পাওয়া✃ গেছে।
জ্যেষ্ঠ সচিব জানান, ১৭ জ𓆉নকে তিনি জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন। তিনটি পর্যায়ে তিনি সাজেস্ট করেছেন কী কী ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে। আটজনের বিষয় বলা হয়েছে, তদন্তসাপেক্ষে কিছু পদ্ধতি অনুসরণ করে গুরুদণ্ড দেওয়া যেতে পারে। চারজনের বিষয় বলা হয়েছে তদন্ত সাপেক্ষে বিধিবিধান অনুযায়ী লঘুদণ্ড দেওয়া যেতে পারে। আর পাঁচজনের ব্যাপারে বল🦹া হয়েছে, তাদের শাস্তি তিরস্কার দেওয়া যেতে পারে। তাদের সাবধান করা, যাতে ভবিষ্যতে এটা না করে।
তিনি বলেন, “একজন সরকারি কর্মকর্তা যখন এ বিষয়গুলো ফেস করেন তখন অনেকগুলো স্টেজ আছে, সেগুলো সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। একটা পর্যায়ে দেখা যায় অনেকের সংশ্লিষ্টতা ছিল, আবার অনেকের ছিল না। আবার অনেক সময় দেখা যায় নিঃস্বার্থ ক্ষমা প্রার্থনা করেছে। এরকম হয়ে গেলে অনেক সময় আমরা সেগুলো দেখি। এখন এ বিষয়গুলো প্রসেস করা হবে। কারণ জাতি, মানুষ জানতে চায়। আমি ডিসি হতে পারিনি, সেজন🍎্য এরকম একটা আন্দোলন মন্ত্রণালয়ের মধ্যে, এটা কেউ ভালোভাবে নেয়নি।”
ড. মো. মোখলেস উর রহমান বলেন, “আমাদের সিনিয়র কলিগরা ন🍬েয়নি, কলিগরা নেয়নি, আমাদের জুনিয়র কলিগরা নেয়নি সর্বোপরি আপনারা নেননি এবং সত্যি কথা বলতে কি, জনগণ ভালোভাবে নেয়🌞নি। অনেকে বলছে এগুলো যদি কঠোর হস্তে দমন না করেন, ব্যবস্থা না নেন, আমাদের প্রশাসন ভেঙে পড়বে, শৃঙ্খলা থাকবে না। প্রশাসনের একটি বড় দিক হলো শৃঙ্খলা। শৃঙ্খলা রক্ষার্থে প্রয়োজনীয় যা যা করার... আমিও আইনের ঊর্ধ্বে না, আপনারাও আইনের ঊর্ধ্বে নন, আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর জনপ্রশাসনে বিশৃঙ্খল পরিস্𓃲থিতি তৈরি হয়। মাসখানেক পর যখন পরিস্থিতির উন্নতি 𝓰হচ্ছিল ঠিক তখনি ডিসি পদায়নকে কেন্দ্র করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে হাতাহাতির ঘটনায় সচিবালয়ে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া হয়। তখন প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তারা সরকারকে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান। এরই পরিপ্রেক্ষিতে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।