দেশের সবচেয়ে বড় রপ্তানিমুখী শিল্প হিসেবে পোশাক খাত দীর্ঘদিন ধরে আটকে ছিল পশ্চিমের দেশগুলোর একচেটিয়া বাজারে। কয়েক দশক ধরে ইউরোপ ও আমেরিকায় সবচেয়ে বেশি পোশাক রপ্তানি করে আসছে বাংলাদেশ। তবে নানা কারণে মাঝে মাঝেই রপ্তানি থমকে যায়। কখনও হ্রাস পায়, কখনও অনিশ্চয়তা এসে ঘিরে ধরে প্রচলিত বাজারে বাজারে। যে কারণে বহুদিন ধরে🌟ই নতুন বাজারের সন্ধান করছিলেন রপ্তানিকারকরা।
পোশাকখাত সংশ্লিষ্টরা জানাচ্ছেন, পশ্চিমের এক চেটিয়া বাজারের পাশাপাশি পোশাকের নতুন বাজারের সন্ধান চলছে অনেকদিন থেকেই। বিভিন্ন দেশ বাংলাদেশি পোশাক কেনার ব্যাপারে আগ্রহও দেখিয়েছে। সেই তালিকায় বর্তমানে নতুন বাজার হিসেবে আশা জাগাচ্ছে জাপান, অস্ট্রেলিয়া, দক্ষিণ কোরিয়া, চীন, রাশিয়া🌜 ও মধ্যপ্রাচ্য। নতুন এসব বাজারে বাংলাদেশের পোশাকের রপ্তানিতে সাম্প্রতিক প্রবৃদ্ধি বেড়েছে ১০ শতাংশ।
সূত্রমতে, চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকের জুলাই-এপ্রিলে নতুন বাজারে মোট ৭ দশমিক ৭০ বিꦓলিয়ন ডলার মূল্যের পোশাক রপ্তানি হয়েছে। অথচ আগের অর্থবছরে একই সময়ে তা ছিল ৭ বিলিয়ন ডলারে। এর মধ্যে জাপানে রপ্তানি ৬ দশমিক ১৪ শতাংশ বেড়ে ১ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হয়েছে। একই সঙ্গে অস্ট্রেলিয়ায় রপ্তানি বেড়েছে ১৭ দশমিক ১৮ শতাংশ, দক্ষ🐓িণ কোরিয়ায় বেড়েছে ১৪.৭৩ শতাংশ।
তবে পশ্চিমের পাশাপাশি নতুন বাজার শুধু প্রাচ্যের দিকেই সম্প্রসারিত হয়নি, মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলিতেও চাহিদা বেড়েছে বাংলাদেশি তৈরি পোশাকের। ফলে মধ্যপ্রাচ্যে রপ্তানির প্রবৃদ্ধিও🧸 উল্লেখযোগ্য। তথ্যমতে, সৌদি আরবে দেশীয় পোশাক রপ্তানি বেড়েছে ৫৮ শতাংশ। তুরস্কে বেড়েছে ৫৪ শতাংশ আর সংযুক্ত আরব আমিরাতে বে🐼ড়েছে ৪১ দশমিক ৯৬ শতাংশ।
বাংলাদেশ গার্মেন্টস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিজিএমইএ) সভাপতি এস এম মান্নান কচি গণমাধ্যমকে জানান, জাপান, অস্ট্রেলিয়া, দক্ষিণ কোরিয়া, চীন, রাশিয়া ও মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য বাজারে পোশাক রপ্তানিতে আরও প্রবৃদ্ধি হওয়ার সম্ভাবনা আছ𝄹ে।
তবে বিজিএমইএ সভাপতি মনে করেন পোশাক রপ্তানিতে প্রতিযোগিতা সক্ষমতা বাড়াতে প্রতিযোগী দেশগুলো যেরকম প্রণোদনা দিয়ে থাকে, বাংলাদেশের🔜 রপ্তানিকারকদেꦕর জন্যও সেরকম বিকল্প প্রণোদনা চালু করা করা যায়। এজন্য সরকারকে এগিয়ে আসতে হবে।
তথ্যমতে, বর্তমানে তৈরি পোশাক রপ্তানিতে বিশ্বে একক দেশ হিসেবে চীনের অবস্থান শীর্ষে। বাংলাদেশ রয়েছে দ্বিতীয় অবস্থানে। বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডাব্লিউটিও) সাম্প্রতিক হ𝓰িসাবে, বিশ্বে মোট পোশাক রপ্তানিতে বাংলাদেশের দখলে রয়েছে ৬ দশমিক ৪ শতাংশ হিস্যা। বিগত ২০২১-২২ অর্থবছরে শুধু তৈরি পোশাকখাত থেকেই বাংলাদেশের রপ্তানি আয় হয়েছে ৪২ দশমিক ৬১৩ বিলিয়ন ডলার। যা দেশের মোট রপ্তানির ৮১ দশমিক ৮১ শতাংশ।
রপ্তানি উন𓃲্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্য অনুসারে, ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসে তৈরি পোশাকখাতে রপ্তানির পরিমাণ ছি🐼ল ৩৮ দশমিক ৫৮ বিলিয়ন ডলার। চলতি অর্থবছরের একই সময়ে বৈশ্বিক বাজারে সামগ্রিক রপ্তানি বেড়ে হয়েছে ৪০ দশমিক ৪৯ বিলিয়ন ডলার। প্রতিবছর রপ্তানি বাড়লেও এতদিন পশ্চিমের দেশগুলিই ছিল একমাত্র ভরসা। তবে নতুন বাজার খুলে যাওয়ায় সম্ভাবনার নতুন দিগন্তের দেখা পেয়েছে বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানিকারকরা।
বিজিএমইএ সভা♏পতি এস এম মান্নান কচি বলেন, “আমরা ইতিমধ্যে নতুন বাজারে দুই অঙ্কের প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছি। সরকার ২০২৯ সাল অবধি নীতি সহায়তা, বিশেষ করে নগদ প্রণোদনা অব্যাহত রাখলে নতুন বাজারে হিস্যা আরও বাড়বে। যা বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের বাজারে বৈচিত্র্য আনতে ♏সহায়তা করবে।”
খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, করোনা মহামারির ধাক্কা সামলে পোশাকের ইউরোপ-আমেরিকার বাজার পুনরুদ্ধার শুরু হওয়া𒐪র স🌸ময়ই ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ বেঁধে তা থমকে যায়। তবে গত কয়েক বছরে নতুন বাজার বাংলাদেশের তৈরি পোশাকখাতেন নতুন দিগন্ত হয়ে দেখা দিয়েছে।