সপ্তাহখানে ধরে বোতলজাত সয়াবিন তেলের সংকট দেখা দিয়েছে। রাজধানীর খিলগাঁওয়ের বাসিন্দা হাফিজ আদনান রিয়াদ তালতলা সিটি করপোরেশন মার্কেটে যে মুদি দোকানটি থেকে সব সময় কেনাকাটা করেন সেখানে গিয়ে জানতে পার🍰েন, এক সপ্তাহ ধরে সেই দোকানি সয়াবিন তেল বিক্রি করতে পারছেন না। কারণ সাপ্লাই আসছে না। 𒈔ডিলাররা অর্ডার কেটে আবার টাকা ফেরত দিয়ে গেছে। ওই বাজারে পাঁচটি মুদিদোকান ঘুরে মাত্র একটি দোকানে দুই লিটারের সয়াবিন তেলের বোতল পান হাফিজ আদনান রিয়াদ।
কারওয়ান ꦐবাজারে ৬ দোকান ঘুরে পাঁচ লিটার সয়াবিন তেল কিনেছেন আনোয়ার হোসেন। তাও গায়ের দাম ৮১৮ টাকায় পাননি। পরিচিত দোকানি বলে ১২ টাকা বেশি দিয়ে পেয়েছেন।
হতাশা প্রকাশ করে ঢাকার তেজতুরি🌠 বাজারের এ বাসিন্দা বলেন, যেখানেই যাই, তেল নাই। থাকলেও সংকটের অজুহাতে ২০ টাকা বেশি চা💞চ্ছেন। কপাল ভালো, পরিচিত দোকানি থেকে নিতে পেরে।
একইভাবে খিলগাঁও সি ব্লকের মুদি দোকানি হিরু আহমেদ জানান, কয়েকদিন ধরে তার দোকানে আগের কেনা দুই লিটারের বোতল থাকলেও এক ও পাঁচ লিটারের বোতলজাত সয়াবিন তেল নেই। ঠিকমতো সরবরাহ না থাকা𓂃র কথা জানালেন তিনিও। তবে দুয়েক দিনের মধ্যে পাঁচ লিটারের♊ তেল পাওয়া যাবে বলে তিনি আশা করছেন। সরবরাহজনিত সংকট ছাড়াও ভোজ্য তেলের দাম বাড়তে পারে বলে জানান তিনি।
খিলগাঁও,﷽ শেওড়াপাড়া বা মহানগরের মতো তেজগাঁও এলাকার মুদি দোকানগুলোতেও একই অবস্থা দেখা গেছে। পশ্চিম নাখালপাড়ার মুদি দোকানি রফিকুল ইসলাম ও সোহেল রানা জানান, গত কয়েকদিন ধরে তারা এক বা আধা লিটারের তেল পাচ্ছেন না। অল্পকিছু দুই লিটারের তেল পেয়েছেন। অনেক ক্রেতা এক লিটারের তেল না পেয়ে ফিরে যাচ্ছেন। আবার দুই লিটার তেলও দোকানিরা তাদের চাহিদামতো পাচ্ছেন না। ২০ লিটারের অর্ডার দিলে ৫ লিটার দিচ্ছে ডিলাররা।
ভোজ্য তেলের সরবরাহ ঘাটতি নিয়ে ভিন্ন অভিযোগ করেছেন মহাখালী, কলমিলতা বাজারের ব্যবসায়ীরা। তারা বলছেন, বাজারে গত তিন সপ্তাহ যাবৎ খোলা সয়াবিন তেল পাওয়া যাচ্ছে না। আবার বোতলজাত সয়াবিনেরও সংকট চলছে অনেকদিন ধর🌼ে। তারা অভিযোগ করেন, সিটি গ্রুপের তীর, টিকে গ্রুপের পুষ্টি ও রূপচাঁদা ব্র্যান্ডের তেল🐼 দেওয়ার আগে শর্ত জুড়ে দিচ্ছে ডিলাররা।
মহাখালী কাঁচাবাজারে তিনজন দোকানির সঙ্গে কথা হয়। তাদের মধ্যে মনির ট্রেডার্সের মামুনুর রশিদ, লুৎফর ট্রেডার্সের লুৎফর রহমান ও অ꧋পর দোকানি কামাল হোসেন জানান, গত ১০ থেক🐭ে ১৫ দিন যাবৎ তারা অর্ডার দিয়ে তেল পাচ্ছেন না। বেশিরভাগ কোম্পানিই তেল সরবরাহ করছে না। আবার তীর, পুষ্টি ও রূপচাঁদা সয়াবিন তেল পেতে হলে ওইসব কোম্পানির অন্য কোনো পণ্য কিনতে হবেÑ এমন শর্ত মেনে নিতে হচ্ছে।
লুৎফর রহমান বলেন, শর্ত🍒 মেনে পণ্য কিনতে ও বেচতে পারব না। তাই এখন দোকানে তেল রাখছি না। ক্রেতাদের কাছে তো শর্ত দি🍒য়ে আমরা পণ্য বিক্রি করতে পারি না। মামুনুর রশিদ বলেন, তীরের এক বা দুই লিটার সয়াবিন তেল কিনলে তাদের পোলাওয়ের চাল, আটা, লবণ বা অন্য কোনো পণ্য কিনতে হচ্ছে। তাদের শর্তমতো পণ্য কিনে আমরা বেচতে পারি না।
কামাল হোসেন বলেন, এক কার্টন তেল (৫ লিটারের ৪টি, ১ লඣিটারের ১৬টি) কিনলে পোলাও চাল, আটা, চা পাতা, লবণ বা অন্য কোনো পণ্য নেওয়ার শর্তে তারা তেল বিক্রি করছে। গত কয়েকদিন দিন ধরে এই অবস্থা চলছে। গত এক সপ্তাহ যাবৎ বাজারে তেল সরবরাহ বন্ধ রয়েছে বলে জানান কলমিলতা বাজারের ব্যবসায়ী আশরাফুল হক।
বাজারে তেলের সংকট নিয়ে জানতে চাইলে সিটি গ্রুপের পরিচালক বিশ্বজিৎ সাহা বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম অনেক বেড়ে গেছে। আমরা বাংলাদেশ ট্যারিফ কমিশনের (বিটিসি) কাছে ১০ দিন আগে দাম বাড়ানোর জন্য চিঠি দিয়েছিলাম। তারা আজ (বৃহস্পতিবার) ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠক করেছে। এখন বাণিজ্য মন্ত্রণালℱয় থেকে সিদ্ধান্ত এলে আমরা এ ব্যাপারে কথা বলতে পারব।
তেল সরবরাহের সময় একই কোম্পানির চাল, লবণ ও চা-পাতা নেওয়ার শর্তের যে অভিযোগ সে বিষয়ে তিনি বলেন, এটি দোকানদারদের একটা কৌশল হতে পারে, আমাদের না। কেননা তারা এক কেজি পোলাওয়ের চ♛াল থেকে ২০ টাকা আর এক লিটার সয়াবিন তেল থেকে লাভ করে চার টাকা। এখন দুটো একসঙ্ꦛগে বিক্রি করে ২৪ টাকা লাভ করার চিন্তা তাদের থাকতে পারে। আমরা এ-রকম কোনো শর্ত দিচ্ছি না।
তেলের দাম বৃদ্ধি সম্পর্কে বৈঠকে কী আলোচনা হয়েছে জানতে চাইলে বিটিসির বাণিজ্য নীতি বিভাগের যুগ্ম প্র🦹ধান (যুগ্ম সচিব) এ কে এম মকসুদুল আরেফীন বলেন, আমি একটি প্রশিক্ষণে আছি। এ ব্যাপারে আমার কিছু জানা নেই।
ভোজ্য তেল সরবরাহ করার সময় শর্ত আরোপের বিষয়ে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মোহাম্মদ আলীম আখতার খান বলেন, “আমাদের কাছে এমন অভিযোগ এখনও আসেনি। তবে শু🦹ক্রবার ও শনিবার বিভিন্ন বাজারে আমরা টিম পাঠাব। এ ধরনের শর্ত আরোপ করা হলে বলব, বিষয়টা খুব খারাপ। ঢাকাতেই ২৫ হাজারের বেশি দোকান আছে। আমরা অল্প কিছু দোকানে অভিযান চালাতে পারি। মানুষের মধ্যে নৈতিকতা তৈরি না হলে সমস্যার সমাধান করা কঠিন।”