ফুটবলের সেরা কে ডিয়াগো ম্যারাডোনা নাকি এডসন অরান্তেস দো নাসিমেন্তো পেলে এই নিয়ে তর্ক থাকবে সব সময়। তবে, ফুটবলের সম্রাটকে বললে সবাই বলেই দিবে এক কথায় পেলে। যার ডাক নাম কালো মানিক। ব্রাজিলের সেই কালো মানিক পেলের সোমবার(২৩ অক্টোবর) জন্মদিন। ২৩ অক্টোবর ১৯৪০ সালে ব্রাজিলের শহর মানাস গ্যারিসের স্টেটে জন্ম ꧑এই কিংবদন্তির।🤡
ব্রাজিলের দারিদ্র্য এক পরিবারের জন্ম হয়েছিল পেলের। বাবা-মা তাদের বড় ছেলের নাম রেখেছিল বিশ্বখ্যাত বিজ্ঞানী টমাস আলভা এডিসনের সঙ্গে মিল রেখে। পেলের পুরো নাম ‘এডসন অরান্তেস দো নাসিমেন্তো’। অবশ্য বস্তির বন্ধুরা পেলেকে চিনত ‘ডিকো’ নামে। অভাবের সংসার তাই ছোট বেলা থেকেই পরিবারকে আর্থিকভাবে সাহায্য করতে কাজ করতেন চায়ের দোকানে। কিন্তু পাশাপাশি খেলতেন ফুটবলও। যেহেতু গরীব ঘরের ছেলে সে♐হেতু ফুটবল কেনার টাকা ছিল না তাই মুজার ভি🐻তর কাগজ ভরে ফুটবল বানিয়ে খেলতেন পেলে।
সে ছেলেটাই এক সময় রাজত্ব করেন ফুটবল মাঠে। ১৯৫০ সালের বিশ্বকাপে ফাইনালে মুখোমুখি হয় ব্রাজিল ও উরুগুয়ে। সেবার সেলেসাওদের হারিয়ে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হয় উরুগুয়ে। সেই বিশ্বকাপের পর পেলে তার বাবাকে বলেছিলেন তিনি ব্রাজিলের হয়ে বিশ্বকাপ জিতবꦚেন। তিনি সেটা করেছেনও। পেলে ১৯৫৮ সালে ব্রাজিলের হয়ে বিশ্বকাপ জেতেন।
গলিতে ফুটবল খেলার সময় তার এই প্রতিভা একদিন চোখে পড়ে স্যান্টোসের গ্রেট ওয়ালডেমার ডি ব্রিটোর। এখানꦿ থেকেই জীবনের মোড় ঘোরা শুরু তার। ১৫ বছরের পেলেকে গলি থেকে ওঠিয়ে ব্রিটো নিয়ে গেলেন স্যান্টোস ক্লাবে এবং অন্তর্ভুক্ত করেন স্যান্টোসের ‘বি’ টিমে। এখানেও সহজাত প্রতিভা দেখিয়ে এক বছরের মধ্যেই স্যান্টোসের মূল দলে নিজের জায়গা করে নেন পেলে। মূল দলে জায়গা পেয়ে ব্রাজিলের পেশাদার ফুটবল লীগে স্যান্টোসের হয়ে লীগের সর্বোচ্চ গোলদাতার পুরস্কারটি অর্জন করেন।
তার প্রতিভার খবর ছড়িয়ে পড়ল চারদিকে। ইউরোপের বড় বড় ক্লাবগুলো তাকে দলে নিতে শুরু করে দেয় কাড়াক𒀰াড়ি। কিন্তু সেবার পেলের ইউরোপে খেলা হয়ে ওঠেনি। তার কারণ হলো ব্রাজিলের সরকার আইন করে ঘোষণা দেন যে পেলে দেশের সম্পদ, তাই ইউরোপিয়ান লীগে পেলের কোনোদিন খেলা হয়নি।
পেলের আন্তর্জাতিক ফুটবলে অভিষেক হয় চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী আর্জেন্টিনার বিপক্ষে। সেই ম্যাচে ব্রাজিল আর্জেন্টিনার কাছে ২-১ গোলের ব্যবধানে হেরে গেলেও প্রথম ম্যাচেই বিশ্ব রেক🍸র্ডটি করতে ভুল করেননি তিনি। ১৬ বছর ৯ মাস বয়সে গোল করে অর্জন করেন আন্তর্জাতিক অঙ্গনের সর্বকনিষ্ঠ গোলদাতার রেকর্ড।
১৯৫৮ বিশ্বকাপেই বাবাকে দেওয়া কথা রেখেছিলেন পেলে। মারিও জাগালো, ভাভা, দিদি, গারিঞ্চাদের সঙ্গে🎉 কিশোর পেলে ব্রাজিলকে এনে দেন তাদের প্রথম বিশ্বকাপ। ফাইনালে সুইডেনের বᩚᩚᩚᩚᩚᩚᩚᩚᩚ𒀱ᩚᩚᩚিপক্ষে তার গোল বিশ্বকাপ ইতিহাসের অন্যতম সেরা গোল হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
এভাবে একে একে ১৯৫৮, ১৯৬২, ১৯৬৬ ও ১৯৭০ এর বিশ্বকাপে খেলেন পেলে। এর মধ্যে তিনবার (১৯৫৮, ১৯৬২ ও ১৯৭০) সালে বিশ্বকাপ জয়🍬ের গৌরব অর্জন করেন।
ক্যারিয়ারের ১৩৬৩ ম্যাচে পেলে গোল করেছেন ১২৮৩টি। ১৯৬৯ সালের নভেম্বরে ভাস্কো-দা-গামা ক্লাবের বিপক্ষে ব্রাজিলিয়ান লিগের এক ম্যাচে তার হাজারতম গোলের ক্লাবে প্রবেশ করেন। সেদিন পুরো ব্রাজিল মেতে উঠেছিল উৎসবে। কোনো একক খেলোয়াড়ের গোল করার ব্যাপারে এটিই ছিল বিশ্বরেকর্ড। আর ব্রাজিলের জার্সিতে ৯২ ম্যাচে ৭৭টি গোল করেন তিনি। কদিন আগেই যে রেকর্ড ভেঙেছ♉িলেন নেইমার।
ফুটবলের এই স🐲ম্রাট মৃত্যু বরণ করেন গত বছর বিশ্বকাপের সময়। ২৯ ডিসেম্বর ২০২২ সালে চির নিদ্রায় শায়িত হ🍌ন তিনি। তার বিদায়ে স্তব্ধ হয়ে পড়ে গোটা ফুটবল বিশ্ব। তিনি সবাইকে ছেড়ে চলে গেলেন। কিন্তু কথায় আছে ’কিং বদন্তির মৃত্যু নেই’ শুধু হয় প্রস্থান। শুভ জন্মদিন ফুটবলের সম্রাট পেলে, ওপারে ভালো থাকবেন।