টিকটক প্রোফাইলের নাম ‘সম্রাট ৯২৬’। ফলোয়ার ৩ লাখ ৬০ হাজারের বেশি। তার ভিডিওগুলোর লাইকের সংখ্যা ৬৪ লাখ। এমন পরিসংখ্যান থেকে বোঝাই যাচ্ছে তিনি একজন টিকটক তারকা। অথচ পেশায় তিনি একজন পুলিশ কর্মকর্তা। দায়িত্ব পালনকালে বিভিন্ন 🔯গান ও সংলাপের সঙ্গে ঠোঁট মিলিয়ে শারীরিক নানা অঙ্গভঙ্গির ভিডিও প্রকাশ করেন প্রোফাইল থেক🥂ে।
এমন আরেকজন পুলিশ সদস্যের টিকটক প্রোফাইলের নাম ‘নিজাম’। তার ফলোয়ার সংখ্যা প্রায় এক লাখ। লাইকের সংখ্যা ৬ লাখ ৫ হাজার। টিকটকের নিয়মে তিনি💫 মাত্রই তারকার খাতায় নাম লিখিয়েছেন। এই পুলিশ সদস্যও দায়িত্ব পালনকালে বিভিন্ন অঙ্গভঙ্গিতে ভিডিও প্রকাশ করে থাকেন।
তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে,🍸 কেবল বিনোদনের জন্য তারা টিকটক করেন। দায়িত্বে অবহেলা করে ভিডিও ধারণ করেন না। তাছাড়া আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা টিকটক কর🔜তে পারবেন না—এমন কোনো নির্দেশনা পাননি তারা।
টিকটকের দুনিয়া ঘুরলে এ রকম আ🤪রও অসংখ্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যকে দেখা যাবে। তাদের মধ্যে কেউ 🉐মাত্রই অ্যাকাউন্ট খুলেছেন। আবার কেউ পেয়ে গেছেন জনপ্রিয়তা। মূলত আয়ের সুযোগ ও জনপ্রিয়তার মোহ তাদের টিকটক দুনিয়ায় নিয়ে আসছে।
এ বিষয়ে কথা হয় পুলিশের মুখপাত্র সহকারী মহাপরিদর্শক (এআইজি) সোহেল রানার সঙ্গে। তিনি বলেন, “কোনো পুলিশ সদস্য টিকটক করেন কি না, সে বিষয়ে আমাদের কাছে কোনো তথ্য নেই। পুলিশ মানুষের সেবক। তারা যদౠি টিকটকের মতো বিতর্কিত অ্যাপে নিজেদের উপস্থিত♒ি জানান দেন, তাহলে সেটা পুলিশের ভাবমূর্তি নষ্ট করবে। যদি কেউ করে থাকেন তাহলে এ বিষয়ে কী করা যায়, আমরা ভেবে দেখব।”
সম্প্রতি টিকটকের আড়ালে সারা দেশে মানব পাচারের নেটওয়ার্কের সন্ধান পেয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। সম্প্রতি ভারতের বেঙ্গালুরুতে বাংলাদেশি এক তরুণীকে বিবস্ত্র করে নির্যাতনের ভিডিও ভাই🎶রাল হয়। ওই ঘটনায় বেঙ্গালুরু পুলিশ ছয়জনকে গ্রেপ্তার করেছে। এদের মধ্যে টিকটক হৃদয়সহ দুজন পালানোর সময় গুলিবিদ্ধ হয় বলে জানিয়েছে ভারতের পুলিশ। এর সূত্র ধরে মানব পাচার চক্রের একাধিক সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, টিকটকে মডেল বানানোর লোভ দেখিয়ে সারা দেশে মানব পাচারের নেটওয়ার্ক গড়ে তুলেছে চক্রের সদস্যরা। দেশের প্রতিটি জেলা, থানা, এমনকি গ্রামপর্যায়েও তাদের নিয়োজিত লোকজন রয়েছে।
শুধু মানব পাচার নয়। টিকটককে কেন্✱দ্র করে সংসার ভাঙছে। আত্মহত্যার ঘটনা ঘটছে। এমনকি ঘটেছে হত্যাকাণ্ডও। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ💜ই টিকটক ভিডিও একধরনের নেশা। এই নেশা কোনো কোনো ক্ষেত্রে মাদকের চেয়ে ভয়াবহ।
দেশে টিকটক বন্ধে কয়েকবার উচ্চ আদালতে রিট করা হলেও কোনো সুফল মেলেনি। সবশেষ মানবাধিকার সংগঠন ল অ্যান্ড লাইফ ফাউন্ডেশনের পক꧂্ষে এ রিট করা হয়। রিটের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির পল্লব। তিনি বলেন “টিকটক, লাইকি অ্যাপ ব্যবহার করে দেশের শিশু-কিশোর এবং যুবসমাজ বিভিন্ন অনৈতিক কর্মকাণ্ডে 🔯লিপ্ত হচ্ছে। এ ছাড়া সম্প্রতি নারী পাচারের ঘটনা এবং বাংলাদেশ থেকে দেশের বাইরে অর্থ পাচারের ঘটনায়ও টিকটক, লাইকি ও বিগো লাইভের সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে, যা অত্যন্ত আশঙ্কাজনক এবং দেশের ও জনস্বার্থের পরিপন্থী। এটা শৃঙ্খলা ও মূল্যবোধেরও পরিপন্থী।”
মনোরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. এস এ🏅ম আতিকুর রহমান বলেন, “পুলিশরাও দেখছি টিকটক করছেন আজকাল। অবাকই হয়েছি আমি এতে। এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। মূলত টিকটকে যা হচ্ছে তা মূলত বাস্তবতাবিবর্জিত। এমন কর্মকাণ্ডে আসক্তরা পরিবার, সমাজ বা রাষ্ট্র থেকে দিন দিন বিচ্ছিন্ন হতে পারে। এসব কর্মকাণ্ডের কারণে মিথ্যা করেও হলেও অনেকে নিজেদের অভিনয়শিল্পী ভাবতে পারেন। সস্তা জন෴প্রিয়তার নামে এমন আসক্তি ভয়াবহ।”
টিকটক ব্যবহার রোধে ব্যক্তিগত সচেতনতা,🌃 পারিবারিক ও প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা প☂্রদান, প্রযুক্তিগত সক্ষমতা তৈরি এবং কঠোর আইন প্রয়োগের কোনো বিকল্প নেই।