কালোটাকার পক্ষে অবস্থান নিয়ে প্রথম বাজেট উপস্থাপন করতে যাচ্ছেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। প্রথমবারের মতো কোম্পানিও পাবে তার উদারতার সুযোগ। জমি, ফ্ল্যাট, নগদ টাকা, ব্যাংক সঞ্চয়, সিকিউরিটিজ সবই বৈধ করা যাব🅘ে। যা নিয়ে কেউ প্রশ্ন তুলতে পারবে না।
দেশে কালো টাকার পরিমাণ কত, এর সঠিক কোনো পরিসংখ্যান নেই। অর্থনীতিবিদ আবুল বারকাতের হিসাবে, জিডিপির তিন ভাগের 🌜এক ভাগই কালো। স্বাধীনতার পর থেকে অর্থনীতির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে এগোচ্ছে কালো টাকা।
আগামী অর্থবছর কালো টাকা সাদা করতে সরকারকে কর দিতে হবে মাত্র ১৫ শতাংশ।ꦕ যদিও প্রদর্শিত বা বৈধ আয়ের ওপর কর পরিশোধ করতে হবে তার দ্বিগুণ। নতুন বাজেটে ব্যক্তি শ্রেণীর সর্বোচ্চ করস🌱ীমা ২৫ থেকে বাড়িয়ে ৩০ শতাংশে উন্নীতের প্রস্তাব করা হচ্ছে। অর্থাৎ বৈধ আয়ের ওপর করাঘাত আরো বাড়ল।
দেশে দুই বছরের বেশি সময় ধরে উচ্চ মূল্যস্ফীতি বিরাজ করছে। টানা ২৪ মাস ধরে সার্বিক মূল্যস্ফীতির হার ৯ শতাংশের বেশি। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির চাপে পিষ্ট সাধারণ মানুষ। এ অবস্থায় ব্যক্তি শ্রেণীর করমুক্ত আয়ের সীমা বাড়ানোর প্রত্যাশা ছিল। যদিও বাজেটে এ ধরনের 🅺কোনো ঘোষণা থাকছে না। বিদ্যমান সাড়ে ৩ লাখ টাকাই বহাল রাখা হচ্ছে করমুক্ত আয়ের সীমা। চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ব্যক্তি শ্রেণীর আয়কর পরিশোধের ধাপ ছিল ছয়টি। আগামী অর্থবছরে সাতটি ধাপের প্রস্তাব করা হচ্ছে।
কালো টাকা দুই ধরনের। অনেকেই বৈধপথে আয় করলেও আয়কর নথিতে দেখান নাꦜ। কেউ কেউ একে অপ্রদর্শিত আয় বলেন। আর কিছু মানুষ আয় করেন অবৈধ উপায়ে। যেমন ঘুষ, দুর্নীতি, লুট ইত্🌳যাদি নানা উপায়ে। প্রথম ধরন নিয়ে সমাজে তেমন আপত্তি না থাকলেও অবৈধ আয় নিয়ে সমাজে আছে বিস্তর আপত্তি। আইনের চোখেও তা গুরুতর অপরাধ।
কালো টাকা প্রসঙ্গে একেক দেশের অবস্থান একেক রকম। তবে বেশিরভাগ দেশ এর বিরুদ্ধে কড়া আইনি ব্যবস্থা নেয়। আতংকে থাকেন অবৈধ সম্পদশালীরা। কিন্ত⛄ু বাংলাদেশে বারবার সাধারণ ক্ষমা দেওয়া হয়। এবার অবৈধ সম্পদধারী কোম্পানিকেও কালো টাকা সাদা🅺 করার সুযোগ দিচ্ছেন অর্থমন্ত্রী।
আগামী অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে এ বিষয়ে রাখা বিধানে উল্লেখ রয়েছে, ‘দেশের প্রচলিত আইনে যা-ই থাকুক না কেন, কোনো করদাতা স্থাবর সম্পত্তি যেমন▨ ফ্ল্যাট, অ্যাপার্টমেন্ট ও ভূমির জন্য নির্দিষ্ট করহার এꦐবং নগদসহ অন্যান্য পরিসম্পদের ওপর ১৫ শতাংশ কর পরিশোধ করলে কোনো কর্তৃপক্ষ কোনো প্রকারের প্রশ্ন উত্থাপন করতে পারবে না।’
সরকার এ সুযোগ দিলে বৈধ করদাতারা নিরুৎসাহিত হবেন বলে মনে করেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আবদুল মজিদ।𒈔 তিনি বলেন, “করদাতারা এতে ক্ষুব্ধ হবেন। কারণ, তারা ৩০ শতাংশ দেবেন আর অপ্রদর্শিত আয়কারীরা দেবেন ১৫ শতাংশ। এটা অন্যায্যতা। এতে করদᩚᩚᩚᩚᩚᩚᩚᩚᩚ𒀱ᩚᩚᩚাতারা নিরুৎসাহিত হবেন। কেননা কর দিলে তাদেরকে অডিটের আওতায় আনা হয়, হাজারো প্রশ্ন করা হয়। অথচ অপ্রদর্শিতদের ক্ষেত্রে কোনো প্রশ্ন থাকবে না! এটি হতে পারে না।”
কর্মকর্তারা জানান, ১৫ শতাংশ কর দিয়ে নগদ টাকা, ব্যাংক সঞ্চয়, সিকিউরিটিজ সবই বৈধ ক🅠রা যাবে। জমি ও ফ্ল্যাটও বৈধ করা যাবে। এক্ষেত্রে দিতে হবে নির্ধারিত কর। কর্মকর্তারা জানান, ফ্ল্যাটের কর নির্ধারণের জন্য ঢাকাকে পাঁচটি অঞ্চলে বিভক্ত করা হয়েছে। বর্গফুট প্রতি সর্বনিম্ন কর তিন হাজার টাকা। ঢাকার বাইরের অঞ্চলগুলোকেও কয়েকটি ভাগে বিভক্ত করে কর নির্ধারণ করা হয়েছে। বাণিজ্যিক স্থাপনার ফ্ল্যাট বৈধ করতে দ্বিগুন কর দিতে হব𒉰ে। ভূমির ক্ষেত্রেও দাম বিবেচনায় কর নির্ধারণ করেছে এনবিআর।
এনবিআর কর্মকর্তারা জানান, আয়কর রিটার্ন জমায় ডকুমেন্টস ভেরিফিকেশন সিস্টেম (ডিভিএস) চালু হওয়ায় অনেক কোম্পানি বিপাকে পড়েছে সম্পদ নিয়ে। কারণ সম্পদ অর্জনে অনেক কোম্পানির বিচ্যুতি রয়েছে। তাই এবার কোম্পানিকে দেওয়া হচ্ছে সুবিধা। আগামী অর্থবছর জুড়ে রিটার্ন বা সং﷽শোধিত রিটার্ন দিয়ে কালো সম্পদ দেখানো যাবে।
বাজেটে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দেওয়াকে অবশ্য অসাংবিধানিক বলে মনে করেন দুদকের সাবেক মহাপরিচালক (লিগ্যাল অ্যান্ড প্রসিকিউশন) মঈদুল ইসলাম। তিনি বলেন, “এটা সম্পূর্ণভাবে অনৈতিক ও অসাংবিধানিক। সংবিধানের অনুচ্ছেদ 🐷২০-এ বলা হয়েছে, অনুপার্জিত আয় কেউ ভোগ করতে পারবে না। এটা করে দুর্নীতির বিরুদ্ধে সফল হওয়া যাবে না। দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স বলে আবার দুর্নীতির সম্পদে ১৫ শতাংশ করে দিলে হালাল! এটা তো দ্বিমুখী নীতি। এতে অবৈধ আয় ক𒁏রাকে উৎসাহিত করা হবে। অবৈধ আয় যারা করে তাদেরকে সুরক্ষা দেওয়া হবে। আর সরকার ১৫ শতাংশ কর নিলে নিক, কিন্তু প্রশ্ন কেন করা যাবে না? উৎস তো জানতে হবে।”