• ঢাকা
  • সোমবার, ১৬ ডিসেম্বর, ২০২৪, ১ পৌষ ১৪৩১, ১৪ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Songbad Prokash

ইনস্টাগ্রাম

টুইটার


লিংকডইন

পিন্টারেস্ট

গুগল নিউজ


রম্য

বেশি বেশি মুড়ি খান, ভাতের ওপর চাপ কমান


ইমন চৌধুরী
প্রকাশিত: জুন ১২, ২০২২, ০৭:১৬ পিএম
বেশি বেশি মুড়ি খান, ভাতের ওপর চাপ কমান

বাজেট বিষয়টা একটা গোলমেলে বিষয়। সরকারি দল সবসময় একে স্বাগত জানায়। বিরোধী দল প্রত্যাখ্যান করে। এ যেন রেওয়াজ হয়ে দাঁড়িয়েছে আমাদের দেশে! একদল বলে জনবান্ধব! একদল বলে গণবিরোধী! একই জিনিস একইসঙ্গে জনবান্ধব এবং গণবিরোধী কী করে হয়— এ এক গভীর রহস্য!
সে যাক, আসুন আমরা বরং শুরুতেই একটা কৌতুক শুনে খানিকটা হালকা হই। কোনো এক দেশের বাজেটে একবার রুগ্‌ণ শিল্প পুনর্বাসনে বেশ কিছু টাকা বরাদ্দ দিলেন সে দেশের অর্থমন্ত্রী। এর কিছুদিন পর ব্যাংককের সমুদ্র সৈকতে দেখা হয়ে গেল দুই ব্যবসায়ী বন্ধুর। পানিতে পা ডুবিয়ে হাঁটছে দুজন। এক বন্ধু অন্য বন্ধুর কাছে জানতে চাইল, ‘কিরে, কীভাবে হলো সব? কীভাবে পারলি?’ 
জবাবে অন্য বন্ধু বলল, ‘আসলে কারখানাটা চালাতে পারছিলাম না। তারপর একদিন আগুন লেগে পুড়ে গেল সেটা। বিমা করা ছিল, আবার রুগ্‌ণ শিল্প পুনর্বাসন বরাদ্দ থেকেও বেশ কিছু টাকা বরাদ্দ পেলাম। ভাবলাম, যাই, কিছুদিন ঘুরে আসি। অনেক দিন সমুদ্র দেখা হয় না। আমার কথা তো শুনলি। তোর কী অবস্থা?’
‘আমার অবস্থা তোর চেয়েও খারাপ ছিল! কিছুদিন আগে খুব বন্যা হলোও, আমার পুরো কারখানাই পানিতে ডুবে গেয়েছিল।’

এবার অন্য বন্ধু আশেপাশে তাকিয়ে ফিসফিস করে জানতে চাইল, ‘বন্ধু, বন্যা লাগাও কীভাবে?’
তাই বলে ভাববেন না বাজেটের টাকা সব জলে যায়।💫 অনেক টাকা কলে যায় (কল-কারখানা বা শিল্প উন্নয়নে), কিছু হয়তো গলে (গলায়) যায়। জলেও যায় কিছু কিছু। সে সব তলে তলেই থাকুক, তাই বলে তো আর বাজেট💃 থেমে থাকতে পারে না।

সদ্য ঘোষিত জাতীয় বাজেটে হেলিকপ্টারের দাম কমেছে। শুনে একজন জানতে চাইলেন, ‘আচ্ছা ভাই, হেলিকপ্টারের দাম কমলে আমাদের কী লাভ?’
বললাম, ‘কী লাভ মানে! এখন থেকে হেলিকপ্টারে চড়বেনও! সবসময় রিকশা-বাসে চড়বেন নাকি! একটি হেলিকপ্টার কিনে নিন। এতে ট🎀্রাফিক জ্যামের উৎপাত থেকেও বাঁচতে পারবেন।’ 

ভদ্রলোক কী বুঝলেন জানি না। কিন্তু আর কথা বাড়ালেন না। চুপ মেরে গেলেন। এই এক সমস্যা! লোকজনকে ভালো পরামর্শ দিলে ন🌟িতে চা♊য় না।

এবারের বাজেটে রডের দামও কম♐েছে। যদিও রডের দাম কম-বৃদ্ধিতে কিছু যায় আসে না। কারণ বাঙালি রডের বিকল্প অনেক আগেই আবিষ্কার করে রেখেছে। ঠিক ধরেছেন। বাঁশের কথাই বলছি। দেশে বিভিন্ন স্থাপনা বা ভবন নির্মাণে রডের পরিবর্তে বাঁশের সংবাদ প্রায়ই চোখে পড়ে আমাদের। সুতরাং রড নিয়ে ভাবনা আর না আর না। রডের বিকল্প হিসাবে আছে বাঁশ। এ একটা জিনিস ব্যবহার করতে এবং অন্যকে দিতে বাঙালি দারুণ দক্ষ।

আরেকটা কৌতুক শুনুন। হঠাৎ লোকসানের মুখে পড়া এক মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানি একটি নতুন সিদ্ধান্ত নিল। কোম্পানির কর্মচারীদের বার্ষিক বোনাসের বাজেট বাঁচাতে একটা নোটিশ টানিয়ে দেওয়া হলো অফিসের সদর দরজার সামনে। তাতে লেখা—আপনি যদি দামি কাপড় পরে অফিসে আসেন, তাহলে আমরা বুঝব আপনি খুবই সচ্ছ্বল! সুতরাং বোনাসের এই সামান্য কটা টাকা না হলেও আপনার চলবে। তাই আপনি এ বছর বোনাস পাবেন না। আপনি যদি আজেবাজে কাপড় পরে অফিসে আসেন, তাহলে আমরা বুঝে নেবো, আপনি ফালতু খরচ করেন। তাই বার্ষিক বোনাসের টাকা আপনাকে দেও💫য়া হবে না। কেননা আপনি সেটাও উড়িয়ে দেবেন বা বাজে খরচ করবেন। আর আপনি যদি একদম ঠিকঠাক কাপড় পরে অফিসে আসেন, সে ক্ষেত্রে আমরা বুঝে নেবো আপনি বেশ ভালোই আছেন। তাহলে বোনাসের টাকা নিয়ে করবেনটা কী শুনি?

বোনাস প্রসঙ্গ থাক। আমরা আবার বাজেটে ফিরি। সরকার এবারের বাজেটকে গরীববান্ধব বাজেট বলতেই পারে। কারণ এবারের বাজেটে মুড়👍ির দাম কমেছে। চারদিকে চাল নিয়ে নানা চালবাজির মধ্যে মুড়ির দাম কমায় মুড়িপ্রেমীরা আনন্দিত হতেই পারেন। আর যাই হোক, দ্রব্যমূল্যের ঘোড়া যখন কিছুতেই থামতে চাচ্ছে না, তখন বসে বসে অন্তত মুড়ি চিবানোর রাস্তাটা খোলা আছে। অস্থির চালের বাজারের এ সময়ে এখন বলাই যায়, বেশি বেশি মুড়ি খান, ভাতের ওপর চাপ কমান!

বাজেট নিয়ে এইসব বাজে টক চাইলে আরও করতে পারি। কিন্তু পাঠকের সময় নষ্ট করা ঠিক না। শেষ করছি আরেকটি কৌতুক দিয়ে। এক ছেলে প্রার্থনায় বিধাতার কাছে সবসময় শুধু টাকা চায়। মাত্র পঞ্চাশ হাজার টাকা। কিন্তু♚ কেউ তাকে সে টাকা দেয় না। একদিন সে একটা চিঠি লিখে পোস্ট অফিসে রেখে এলো। ঘটনাক্রমে এ চিঠি পড়ল অর্থমন্ত্রীর হাতে। তিনি ছেলেটার জন্য তার বাজেট থেকে পঁচিশ হাজার টাকা বরাদ্দ দিলেন। টাকা পেয়ে ছেলেটা বিধাতার উদ্দেশ্যে আরেকটা চিঠি লিখল। চিঠিতে লেখা—হে বিধাতা, এরপর টাকা পাঠালে সরাসরি আমার কাছে টাকা পাঠাবেন। অর্থ মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে পাঠালে তারা ট্যাক্স কেটে রেখে দেয়!

Link copied!