• ঢাকা
  • শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১, ১৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Songbad Prokash

ইনস্টাগ্রাম

টুইটার


লিংকডইন

পিন্টারেস্ট

গুগল নিউজ


বাঙালি নারীর কপালে টিপ পরার ইতিহাস


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: এপ্রিল ৫, ২০২২, ০৪:১২ পিএম
বাঙালি নারীর কপালে টিপ পরার ইতিহাস

বাঙালি নারীর অঙ্গসজ্জার একটি অনুষঙ্গ হচ্ছে টি꧋প। নারীর সৌন্দর্যকে কয়েক গুণ বাড়িয়ে দেয় ছোট্ট এই বস্তুটি। কপালে বড় লাল টিপ আর হাত ভরা চুড়ি যেন নারীর শখের অংশ। তবে এই টিপ কী করে এলো বাঙালি সজ্জায়, সেটা এক দীর্ঘ ইতিহাস।

বাঙালি নারীর কপালে টিপ👍 পরার প্রচলন রয়েছে হাজার বছর ধরেই। কোনো বিশেষ জাতি, ধর্ম, বর্ণ এই প্রথার চালু করেনি। এটি বাঙালি নারীরা সাজের অংশ হিসেবেই ব্যবহার করে আসছেন।

বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটির সদস্য এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের সাবেক অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম বলেন, “ট🐻িপ পরা কেবল বাঙালি জাতির বা হিন্দু সম্প্রদায়ের কোনো ব্যাপার ছিল না। আঠারো শতকে টিপের ব্যবহার খুব সাধারণ ছিল। তৎকালীন ভারত, শ্রীলঙ্কা, নেপাল, বার্মা (বর্তমান মিয়ানমার), ফিলিপাইন, ইন্দোনেশিয়ার নারীরা টিপ ব্যবহার করতেন। সব ধর্মের নারীর মধ্যেই টিপ পরার প্রচলন ছিল। মুসলমান নারীদের মধ্যেও টিপের ব্যবহার ছিল।”

অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম আরও বলেন, “আঠারো বা উনিশ শতকের আগে টিপ নারীদের শ্রেণি, মর্যাদা ইত্যাদির প্রতীক হিসেবে ব্যবহার হতো। এরপর থেকে টিপ সবার কাছেই সাধারণ সৌন্দর্য চর্চার উপাদান হয়ে ওঠে। টিপকে এখন মানুষ সৌন্দর্য হিসেবে ব্যবহার করছে। কিন্তু এই টিপের একটা প্রতীকী ব্যাপারও 🌞আছে। এটি ব্যক্তির ‘থার্ড আই’ হিসেবে চিহ্নিত। যার অর্থ হচ্ছে দূরদৃষ্টি প্ꦇরকাশক। এটা প্রতীকী হয়ে ধীরে ধীরে টিপে পরিণত হয়েছে।”

নারীরা যখন শাড়ি বা কোনো রঙিন পোশাক পরেন, তখন কপালে এꦚকটি টিপ চেহারা বদলে দেয়। নারীর অঙ্গসজ্জার এই অনুষঙ্গ তাই যুগের পরিবর্তনের পরও আরও বিস্তৃত রূপ নিয়েছে।

টিপ প্রসঙ্গে ‘ইতিহাসের অলিগলি’ বইয়ে জিয়াউল হক লিখেছেন, “কপালে টিপ বাঙালি তথা আধুনিক বাঙালি নারীর প্রাᩚᩚᩚᩚᩚᩚ⁤⁤⁤⁤ᩚ⁤⁤⁤⁤ᩚ⁤⁤⁤⁤ᩚ𒀱ᩚᩚᩚত্যহিক জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশে পরিণত হচ্ছে। স্থান-কাল আর পাত্র, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষ নারীরা পুরুষের তুলনায় সৌন্দর্য চর্চা করেন বেশি।...বাঙালি নার💛ীদের ক্ষেত্রে কপালে বড় একটি টিপ দেওয়া, তার সৌন্দর্য চর্চার অন্যতম এক অনুষঙ্গে পরিণত হয়েছে। পাক-ভারত উপমহাদেশে এটা প্রায় প্রতিটি নারীর জন্যই একরকম বাধ্যতামূলক বিষয় যেন।”

টিপের প্রচলন শুরুর ইতিহাস জানিয়ে জিয়াউল হক জানান, টিপ পরার রীতি চালু হয়েছে প্রায় ৯৫০০ থেকে ১১৫০০ বছর আগে। এটি বাল্মীকি যুগের কথা। সেই সময় তৎকালীন হিন্দু সমাজে জাতিভেদ বা শ্রেণিভেদ প্রবল ছিল। ব্রাহ্মণরা উচ্চ শ্রেণির, তারা ঈশ্বরের অতি নিকটজন, পূত-পবিত্র। পবিত্রতার প্রতীক হিসেবে তারা কপালে সাদা তিলক (চন্দন তিলক) দিতেন। এখনও দেন। ক্ষৈত্রিয় হলো যোদ্ধা শ্রেণি, তাদেরকে বীর হিসেবে গণ্য করা হতো। ক্ষিপ্ততা, হিংস্রতা ও সাহসের প্রতীক হিসেবে তারা কপালে লাল টিপ দিতেন। বৈশ্য শ্রেণির লোকজন হলো ব্যবসায়ী, পেশাই হলো ব্যবসা। এরা কপালে হলুদ রঙের টিপ ব্যবহার করতেন। আর সমাজে নিচু শ্রেণি হলো শূদ্ররা। তাদের জন্য বরাদ্দ ছিল কালো♈ রঙের টিপ। তারা কপালে কালো টিপ ব্যবহার করতো।

জিয়াউল হক লিখেন, “নারীদের মধ্যেও টিপ পরার ভিন্ন মাত্রা প্রতিষ্ঠা হয়। শ্রেণিভেদ অনুসারে নারীরাও ভিন্ন টিপ ব্যবহার করতেন। সেই সময় যেসব নারীকে (দেবদাসী) মন্দিরে উৎসর্গ করা হতো, ꦜতাদের চিহ্নিত করার জন্যও টিপ দেওয়ার রীতি চালু ছিল। সমাজের উচ্চ বর্ণের বিবাহিত নারীরাও বিয়ের চিহ্নস্বরূপ কপালে সিঁদুরের টিপ পরতেন।”

তবে যুগের সঙ্গে সঙ্গে টিপ বস্তুটি আর ধর্মীয় বলয়ে আবদ্ধ নেই। বাঙালির পোশাক ও সজ্জার সংস্কৃতিতে টিপ🌳 একটি গুরুত্বপূর্ণ অবস্থান দখল করে আছে।

সূত্র : বিবিসি বাংলা অনলাইন

Link copied!