• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১, ১৬ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Songbad Prokash

ইনস্টাগ্রাম

টুইটার


লিংকডইন

পিন্টারেস্ট

গুগল নিউজ


ভারতে প্রতিদিন যৌতুকের বলি ২০ নারী


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: জুলাই ৪, ২০২৩, ১২:১৩ পিএম
ভারতে প্রতিদিন যৌতুকের বলি ২০ নারী

ভারতে যৌতুকপ্রথা একটি উল্লেখযোগ্য সামাজিক সমস্যা। দেশটিতে ১৯৬১ সাল থেকে যৌতুক দেওয়া এবং নেওয়া বেআইনি ঘোষণা করা হয়। এরপরও য🏅ৌতুক নেওয়ার প্রবণতা খুব একটা কমেনি, বরং কিছু এলাকায় নির্দিষ্ট আর্থসামাজিক অবস্থা ও সংস্কৃতির মানুষের মধ্যে বেড়েছে। দেশটিতে🏅 এখনো কনের পক্ষ বর পক্ষকে নগদ টাকা, কাপড় এবং গহনা উপহার দিয়ে থাকে।

মঙ্গলবার (৪ জুলাই) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে। সম্প্রতি ভোপালের কেন্দ্রীয় শহরের ২৭ বছর বয়সী শিক্ষক এ সামাজিক সমস্যা বন্ধে বিয়ের অনুষ্ঠান♌ কিংবা স্থানে পুলিশ অফিসার মোতায়েন এবং অভিযান পরিচালনা করার জন্য আবেদন করেছেন।

২৭ বছর𒉰 বয়সী ওই নারী শিক্ষকের নাম গুঞ্জন তিওয়ারি (ছদ্মনাম)। তিনি বিবিসিকে জানিয়েছেন, সম্প্রতি যৌতুকের কারণে কয়েক ডজন পুরুষ তাকে বিয়ে করতে অস্বীকৃতি জানানোয় এমন আবেদন করেছেন।

গুঞ্জন তিওয়ারি জানান, এ বছরের ফেব্রুয়ারিতে বিয়ের জন্য𝔉 তাকে দেখতে বাড়িতে আসেন পাত্র এবং তার পরিবার। তার বাবা-মা অতিথিদের সঙ্গে আনন্দ নিয়ে আলো🃏চনা ও গল্প করেন।

গুঞ্জন কখন এবং কীভাবে অতিথিদের সামনে উপস্থিত হবে তা নিয়ে অনেক সূক্ষ্ম পরিকল্পনা করা হয়েছিল আগে থেকেই। মা তার জন্য একটি সবুজ রঙের পোশাক বেছে নিয়েছিলেন কারণ তিনি 🐓ভেবেছিলেন এতে মেয়েকে আকর্ষণীয় লাগবে। এমনকি অমসৃণ দাঁতের কারণে তিনি গুঞ্জনকে না হাসতে পরামর্শ দিয়েছিলেন। যাতে পাত্র পক্ষের দাঁতের দিকে লক্ষ্য না ꦑকরে।

এক পর্যায়ে গুঞ্জন অতিথিদের জন্য গরম চা, স্ন্যাকস একটি ট্রেতে নিয়ে উপস্থিত হন। গুঞ্জনের ভাষায় সবাই তার দিকে তাকিয়ে রয়েছে। সবাই তাকে দেখছে। এ সময় পাত্র পক্ষ তাকে বেশ কিছু প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করেছিল। এর মধ্যে রয়েছে- তা শিক্ষাগত যোগ্যতা, কাজ এবং সে রান্না ক🎃রতে পারে কি-না ইত্যাদি। যদিও এ বিষয়গুলো তার সঙ্গে এতবার ঘটেছে যে বিষয়গুলোর সঙ্গে পরিচিত হয়ে উঠেছেন তিনি।

ঘরে ঢোকার আগে গুঞ্জꦕন তার বাবা-মাকে জিজ্ঞাসা করতে শুনেছিল যে তারা🐻 (পাত্র পক্ষ) কত যৌতুক আশা করছে।

গুঞ্জন তিওয়ারি বিবিসিকে জানিয়েছেন, আমি শুনেছিলাম পাত্র পক্ষ বাবা-মায়ের কাছে♕ যৌতুক হিসেবে ৫০ থেকে ৬০ লাখ টাকা (৬১ থেকে ৭৩ হাজার ডলার) চেয়েছে। আমার বাবা তাকে (ছে𓄧লের বাবাকে) জিজ্ঞেস করলেন তিনি মজা করছেন কি-না। তখন ছেলের বাবা বললেন “আপনার মেয়ে সুন্দর হলে আমরা কিছু ছাড় বা ডিসকাউন্ট দিতাম।” তাদের কথোপকথন এগিয়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে গুঞ্জন বুঝতে পেরেছিল পাত্র পক্ষ তার অমসৃণ দাঁতও দেখে ফেলেছে।

খাবার গ্রহণের পর গুঞ্জনকে সম্ভাব্য বরের সঙ্গে একান্তে কথা বলার জন্য কয়েক মিনিটဣ সময🍨় দেওয়া হয়। তখন গুঞ্জন তাকে জানিয়ে দেন যৌতুক দিয়ে তিনি বিয়ে করবেন না।

পরবর্তীতে গুঞ্জনেꦦর এ বিয়েটাও আর হয়নি। তার মা বিয়ে না হওয়ায় গুঞ্জনের যৌতুক বিরোধী অবস্থানকে দায়ী করেছেন। এছাড়া তিনি মেয়ের উপর ক্ষিপ্ত ছিলেন এবং দুই সপ্তাহের বেশি সময় মেয়ের সঙ্গে কথ🐻া বলেননি।

গত ছয় বছর বিয়ের চেষ্টা করছেন গুঞ্জন। এই সময়ের মধ্যꦦে ১০০ থেকে ১৫০টি ছেলে পক্ষ তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে এর মধ্যে দুই ডজনেরও বেশি পক্ষ ত♎াকে দেখেছে।

ভারতে এ সমস্যা শ♈ুধু গুঞ্জন তিওয়ারির একার নয়। তার মতো অসংখ্য নারীর বিয়ে হচ্ছে না শুধুমাতꦿ্র যৌতুকের কারণে। যদিও দেশটিতে গত ৬০ বছরেরও বেশি সময় ধরে যৌতুক দেওয়া ও নেওয়া বেআইনি অবৈধ।

সাম্প্রতিক একটি সমীক্ষায়꧙ দেখা গেছে, দেশটিতে প্রায় ৯০ শতাংশ বিয়েতে যৌতুক দেওয়া ও নেওয়া হয়। ১৯৫০ থেকে ১৯৯৯ সালের মধ্যে যৌতুকের মাধ্যমে অর্থ প্রদানের পꦗরিমাণ ছিল প্রায় ২৫ হাজার কোটি ভারতীয় রুপি।

আর যৌতুকে এই মোটা অঙ্কের অর্থ পরিশোধ করতে অভিভাবকদের বিশাল অঙ্কের ঋণ গ্রহণ বা জমি ও বাড়িঘর বিক্রি করতে হয়েছে। যা দেশটির খুবই পরিচিত দৃশ্য। এ অর্থ প্রদানের পরও মেয়ে বা কনের সুখী জীবন নি💫শ্চিত হয় না।

দেশটির ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস𝓡 ব্যুরোর তথ্য অনুসারে, ২০১৭ সাল থেকে ২০২২ সালের মধ্যে ভারতে ৩৫ হাজার ৪৯৩ গৃহবধূকে হত্যা করা হয়েছে। যার মূল কারণ ছিল অপর্যাপ্ত যৌতুক। অর্থাৎ যৌতুকের জন্য গড়ে একদিনে ২০ জন নারীর প্রাণ হারিয়েছেন।

জাতিসংঘ বলছে, দেশটিতে প্রতিবছর জন্মের পূর্বে লিঙ্গ স্ক্রীনিং পরীক্ষা করে ♍প্রায় ৪ লাখ কন্যাশিশুর ভ্রূণ গর্ভপাত করানো হয়। এর প্রধান কারণ যৌতুক।

ভোপালের পুলিশ প্রধান হরিনারায়ণ চারি মিশ্রকে লেখা আবেদনে গুঞ্জন লিখেছেন, যৌতুক বন্ধে একমাত্র সমাধান হ🦂ল বিবাহের স্থানে অভিযান চালানো এবং যৌতুক দেওয়া বা গ্রহণকারীদের গ্রেপ্তার করা। শাস্তির ভয় এই নিষ্ঠুর ব্যবস্থা বন্ধ করতে সাহায্য করবে।

এ প্রসঙ্গে ভোপালের পুলিশ প্রধান হরিনারায়ণ চারি মিশ্র বলেন, “যৌতুক একটি সামাজিক কুফল এবং আমরা এটি বন্ধ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমি সমস্ত থানাকে নির্দেশ দিয়েছি 🌄যে কোনো নারী তাদের কাছে গেলে তাকে যথাযথ সাহায্য করতে।”

তিনি আরও বলেন, “পুলিশে🦩র সীমা🅷বদ্ধতা রয়েছে, তারা সর্বত্র উপস্থিত থাকতে পারে না। আমাদের মানসিকতা পরিবর্তন জরুরি। পাশাপাশি এই বিষয়ে আরও সচেতনতা বাড়াতে হবে।”

নারী অধিকার কর্মী কবিতা শ্রীবাস্তব বলেন, “পুলিশ অবশ্যই সাহায্য করতে পারে, কিন্তুඣ যৌতুক মোকাবিলা করা একটি জটিল বিষয়। ভারত একটি যৌতুক নিষেধাজ্ঞা আইন আছে এবং আমাদের আইনেরও আরও ভাল প্রয়োগ প্রয়োজন।”

Link copied!