ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানের মুখে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে ক্ষমতাচ্যুত হয়ে শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে ভারতে আশ্রয়ಞ নিয়েছেন। গত ৫ আগস্ট থেকে তিনি ভারতের রাজধানী দিল্লিতেই অবস্থান করছেন। তার সঙ্গে থাকা কূটনৈতিক লাল পাসপোর্ট ব্যবহার করে তিনি ৪৫ দিন বৈধভাবে দেশটিতে অবস্থানের সুযোগ পেয়েছেন।
তবে তার ভিসার মেয়াদ বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) শেষ হয়ে যাচ্ছে। অন্যদিকে অন্তর্বর্তীকাল𝄹ীন সরকার শেখ হাসিনার কূটনৈতিক পাসপোর্ট বাতিল করেছে। ফলে এখন থেকে শেখ হাসিনা ভার🅺তে বৈধভাবে আর অবস্থান করতে পারবেন না। ফলে কোন স্ট্যাটাস বা পরিচয়ে তিনি সেখানে থাকবেন তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম জি নিউজে সম্প্রতি প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শুক্রবার (২০ সেপ্টেম্বর) থেকে শেখ হাসিনা কোন আইনে ভারতে থাকবেন তা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে প্রশ্ন দেখা🃏 দিয়েছে।
প্রতিবেদনে ভারতের ꦍপররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্রের উদ্ধৃতি দিয়ে বলা হয়েছে, কূটনৈতিক পাসপোর্টে শেখ হাসিনার ভারতে থাকার মেয়াদ শেষ হলেও তাকে বাংলাদেশের হাতে তুলে দেওয়ার সম্ভাবনাꦏ নেই।
এর আগে মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বলেন, “সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতে কোন স্ট্যাটাসে (শ্রেণি বা মর্যাদায়) রয়েছেন, সেটা অন্তর্বর্তী সরকারের জানা নেই। শেখ হাসিনার ভারতে অবস্থানের বিষয়ে এখন পর্যন্ত দিল্লির কাছে আনুষ্ঠꦿানিকভাবে জানতেও চায়নি বাংলাদেশ।”
জি নিউজ বলছে, কোনো কোনౠো মহলের ধারণা, শেখ হাসিনাকে হয়তো তিব্বতের ধর্মগুরু দলাই লামার মতো ‘সাময়িকভাবে’ রাজনৈতিক আশ্রয় দেওয়া হতে পারে। বাংলাদেশ সরকার তার কূটনৈতিক পাসপোর্ট বাতিল করায় ভারতে থাকার বিষয়টি এখন দেশটির সিদ্ধান্তের ওপরেই নির্ভর করছে।
এর আগে গত ৫ সেপ্টেম্বর অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের একটি সাক্ষাৎকার প্রকাশ করে ভারতীয় বার্তা সংস্থা প্রেস ট্রাস্ট অব ইন্ডিয়া (পিটিআই)। দীর্ঘ সেই সাক্♈ষাৎকারে বিগত সরকারের আমলে ঘটে যাওয়া নৃশংসতার ন্যায়বিচারে শেখ হাসিনাকে দেশে ফেরানো প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেন প্রধান উপদেষ্টা।
ড. ইউনূস পিটিআইকে বলেন, “ভারতে শেখ হাসিনা অবস্থানের কারণে কেউ স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করছে না। আমরা তাকে ফেরাতে চাই। তিনি সেখানে থেকে যেসব কথা বলছেন তা সমস্যার সৃষ্টি করছে। তিনি ভারতে অবস্থান করে বিভিন্ন নির্দেশনা দিচ্ছেন। বিষয়টি কেউ ভালোভাবে নিচ্ছ💖ে না। এমন নয়, স্বাভাবিক পথেই সেখানে গেছেন। জনগণের অভ্যুত্থান এবং জনরোষের কারণে সেখানে গেছেন।”
অনেকের মতে, ভারত যেহেতু শেখ হাসিনাকে ফেরত𓄧 দেবে না এবং সেখানে থাকার জন্য তার কোনো বৈধ অনুমোদনও থাকবে না তাই শুক্রবার থেকে তিনি দেশটিতে ‘উদ্বাস্তু’ হয়ে পড়ছেন। আবার অনেকেই গণহত্যা, গুমসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে অভিযুক্ত শেখ হাসিনাকে ফেরত এনে বিচারের মুখোমুখি করতে দাবি জানাচ্ছেন। তাছাড়া ইতোমধ্যে তার বিরুদ্ধে ১৮০টিরও বেশি মামলা হয়েছে।
শেখ হাসিনাকে ভারতের কাছে ফেরত চাওয়ার ব্যাপারে ইঙ্গিত দিয়েছে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার। যদিও এখন অবধি আনুষ্ঠানিকভাবে ঢাকা পক্ষ থেকে কোনো দাবি জানা🍬নো হয়নি। তবে আইন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাংলাদেশ শেখ হাসিনাকে চাইলে ভারত তাকে ফেরত দিতে বাধ্য থাকবে। কারণ দুই দেশের মধ্যে ২০১৩ সালে সম্পাদিত এবং ২০১৬ সালে সংশোধিত প্রত্যর্পণ চুক্তির আওতায় শেখ হাসিনা আইনি কাঠামোর মধ্যে চলে আসতে পারেন।
এদিকে, ভারত সরকারের কাছে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফেরত চাওয়া হবে বলে 💝জানিয়েছেন আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে উপদেষ্টা পরিষদ ও সা♕ংবিধানিক কাঠামো সংস্কারে গঠিত কমিটির সঙ্গে বৈঠক শেষে তিনি এ কথা জানান।