বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের খুনি মেজর বজলুল হুদাকে ফাঁসিতে নয়, গলা কেটে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। কেন্দ্রীয় কারাগারে ফাঁসির বদলে তাকে ওই দিন গলা কেটে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে যেমন ভাইরাল হয়েছে, তেমনি মেজর হুদার ছোট ভাই ডিউক হুদাসহ নিকটজনরা প্রকাশ্যে এমন অভিযোগ করছেন। শুধু তা-ই নয়, তারা এ ব্যাপারে মামলারও প্রস্তুতি নিচ্ছেন। সবকিছু জানার পরও পরিস্থিতি অনুকূলে না থাকায় তারা এত দিন কোনো পদক্ষেপ নেননি বলে জানিয়েছেন।
মেজর (অব.) বজলুল হুদা ছিলেন আলমডাঙ্গা উপজেলার হাটবোয়ালিয়া গ্রামের প্রয়াত ডা. রিয়াজ উদ্দীন আহমেদের ছেলে। তিনি ছিলেন মেহেরপুর-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও মুক্তিযোদ্ধা। উচ্চ আদালতের আদেশে ১৪ বছর আগে ২০১০ সালের ২৮ জানুয়ারি রাতে ফাঁসি হয় মেজর বজলুল হুদার। কিন্তু ফাঁসির বিষয়টি মানতে নারাজ নিকটাত্মীয় ও এলাকাবাসী।
তারা বলছেন, মেজর বজলুল হুদাকে ফাঁসিতে নয়, গলা কেটে হত্যা করা হয়েছে। নিরাপত্তার অভাবে বজলুল হুদার গলা কাটার তথ্য গোপন করে রেখেছিল পরিবার ও এলাকাবাসী। চলতি বছরের ৫ আগস্ট হাসিনা সরকারের পতন হলে মুখ খুলতে শুরু করেছেন তারা।
জানা গেছে, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুসহ তার পরিবারের সদস্যদের খুন করে বজলুল হুদাসহ সেনাবাহিনীর কতিপয় সদস্য। বঙ্গবন্ধুকে খুনের দায়ে ফাঁসির আদেশে দণ্ডিত হন খুনিরা। ২০১০ সালের ২৮ জানুয়ারি রাতে মেজর (অব.) বজলুল হুদাসহ মোট ৫ জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। হুদার লাশ পরদিন সকাল ১০টায় আলমডাঙ্গার হাটবোয়ালিয়া গ্রামে তার নিজ বাড়িতে নেয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এর আগেই কয়েক হাজার পুলিশ, র্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য অবস্থান নিয়েছিলেন সেখানে। লাশ নেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে র্যাবের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ৫ মিনিটের মধ্যে লাশ দাফনের জন্য চাপ দিতে থাকেন তার পরিবারকে। কিন্তু পরিবারের সদস্য ও হাজার হাজার উপস্থিত মানুষের চাপের মুখে র্যাব কর্তারা তাদের অবস্থান থেকে পিছু হটেন। পরিবারের সদস্যরা নতুন করে লাশ গোসল দিতে গিয়ে দেখতে পান কফিনে শুধু রক্ত। লাশ নামানোর পর দেখা যায় মেজর হুদার গলা কাটা, কাটা স্থান জাল বোনার মোটা সুতা দিয়ে সেলাই করা।
মেজর হুদার লাশ গোসল করানো রফিকুল ইসলাম বলেন, “এটা একটা হত্যাকাণ্ড। লাশ জবাই করা ছিল। জবাই করে সুতা দ💯িয়ে সেলাই করা ছিল। কমপক্ষে ৫-৬ ইঞ্চি পরিꦗমাণ কাটা ছিল। তখনো রক্তক্ষরণ হচ্ছিল।”