• ঢাকা
  • বুধবার, ২৮ আগস্ট, ২০২৪, ১২ ভাদ্র ১৪৩১, ২২ সফর ১৪৪৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Songbad Prokash

ইনস্টাগ্রাম

টুইটার


লিংকডইন

পিন্টারেস্ট

গুগল নিউজ


শবে বরাতে হালুয়া-রুটির প্রচলন হলো যেভাবে


ঝুমকি বসু
প্রকাশিত: মার্চ ৭, ২০২৩, ০৯:২১ পিএম
শবে বরাতে হালুয়া-রুটির প্রচলন হলো যেভাবে

‘লাইলাতুল বরাত’ বা ‘শবে বরাত’ হচ্ছে ‘সৌভাগ্যের রাত’। মুসলমানরা রাতটিকে বিশেষ ফজিলতপূর্ণ মনে করে ইবাদত করে থাকেন। তবে বাংলাদেশে শবে বরাত পালনের সঙ্গে যুক্ত হয়ে গেছে হালুয়া-রুটির সংস্কৃতি। এ সম্পর্কে ইসলাম ধর্মে কোনো নির্দেশনা নেই। তারপরও বাংলাদেশে প্রচলিত ও গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে গেছে, বাড়িতে হালুয়া-রুটি বানানো এবং তা প্রতিবেশীর𒊎 মাঝে বিতরণ করা। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, হালুয়া-রুটি তৈরির এ সংস্কৃতি বাংলাদেশ ভূখণ্ডে কিভাবে চালু হয়েছে? ইসলামের ইতিহাস 𝕴যারা বিশ্লেষণ করেন, তাদের অনেকেই মনে করেন যে বাংলাদেশের সমাজ বৃহত্তর মুসলিম উম্মাহর অংশ।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতির অধ্যাপক মুহাম্মদ ইব্রাহিম বলেন, এয়োদশ শতাব্দীতে ভারতের দিল্লিতে ইস🔯লাম রাজনৈতিকভাবে আসে। সে সময় তৎকালীন বাংলাদেশ ভূখণ্ডেও ইসলাম ধর্মের আবির্ভাব হয়।

অধ্যাপক মুহাম্মদ ইব্রাহিম বলেন, মহানবী (সাঃ) সাহাবাদের যুগেও এ উপমহাদেশে তার ঘনিষ্ঠজনরা সুদূর আরব থেকে ইসলাম যে বিভিন্ন দেশে এসেছে, এগুলোর সঙ্গে কিছু কিছু দেশজ উপাদান যুক্ত হয়েছে। আমরা জানি যে মহানবী মিষ্টি খুব পছন্দ করতেন। তা👍র পছন্দের জিনিসকে উম্মতরা পছন্দ করবে সেটাও তাকে পছন্দ করার একটি ধরণ। ফলে মিষ্টির একটা জনপ্রিয়তা মুসলিম সমাজে আছে।

শবে বরাতের সময় হালুয়া-রুটি বানানো এবং বিতরণ করার সঙ্গে আনন্দ ভাগ করে নেওয়ার একটি সম্পর্ক আছে উল্লেখ কর🌊ে অধ্যাপক ইব্রাহিম বলেন, আনন্দের ভাগটা অন্যদের দেওয়ার জন্যই বিতরণ করার রেওয়াজটা হয়েছে।🐭 এর সাথে ধর্মীয় অনুভূতি এবং সামাজিকতা রক্ষা দুটো বিষয় জড়িত আছে।

🍷যেহেতু হালুয়া বানানোর উপাদান বাংলাদেশে আছে সেজন্য সেটি এসেছে। মূলত, মিষ্টি অর্থেই হালুয়ার প্ജরচলন হয়েছিল।

বাংলাদেশ ভূখণ্ডে শবে বরাত পালনের ব্যাপক প্রচলন শুরু হয় ১৯’শ শতকের শেষের দিকে। তখন ঢাকার নবাবরা বেশ ঘ🍒টা করেই শবে বরাত পালন করতেন বলে জানিয়েছেন ইতিহাসবিদ অধ্যাপক মুনতাসির মামুন। তিনি বলেন, সে সময়ে ঢাকার নবাবরা শবে বরাতের সময় আলোকসজ্জা করতো। এর পাশপাশি মিষ্টি বিতরণ করতো।

ইতিহাসবিদদের মতে, সে সময়ে যেহেতু মিষ্টির দোকান খুব একটা প্রচলিত ছিল না, সেজন্য মিষ্টি জাতীয় খাদ্য বানানোর উপাদান দিয়ে বাড়িতে হালুয়া তৈরির প্রচলন শুরু হয়। ধীরে-ধীরে এরꦆ বিস্তার ঘটতে থাকে।

অধ্যাপক মামুন বলেন, সে সময়ে হিন্দুদের আধিপত্য থাকার কারণে সেটিকে মোকাবিলা করতে ঢাকার নবাবরা শবে বরাত জন♍্য অনেক বড় আয়োজন করতো। এতে ঢাকার নবাবদের মুসলমান পরিচয় এবং আধিপত্য এ দুটো বিষয় একসঙ্গে তুলে ধরার প্রয়াস দেখা যেত।

অধ্যাপক মুনতাসির মামুন আরও বলেন, নবাবরা যেহেতু মুসলিম ছিলেন এবং ঢাকাকে তারা নিয়ন্ত্রণ করতেন সেজন্য উৎসবগুলোকে তারা গুরুত্ব দিতেন। এর মাধ্যমে নবাবদের আধিপত্য, মুসলমানদের আধিপত্য এবং ধর্ম♛ পালন এই তিনটি বিষয় একসঙ্গে প্রকাশ হতো।

পাকিস্তান আমলে এর সঙ্গে ▨সরকারি ছুটি যুক্ত হওয়ায় সেটি পালনের ব্যাপকতা আরো বেড়েছে উল্লেখ করে অধ্যাপক মামুন বলেন, একটা সময় ছিল যখন ঢাকায় শবে বরাত পালনের বিষয়টি ছিল সুন্নি মুসলমানদের মধ্যে।

ইতিহাসবিদদের মতে, বর্তমা💝ন বাংলাদেশে শবে বরাত পালন ধর্ম এবং সংস্কৃতির অংশ হয়ে গেছে। ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের অনেকেই মনে করেন, শবে ব🎀রাতের রাতে পরবর্তী এক বছরের ভাগ্য নির্ধারিত হয়।

অধ্যাপক মুনতাসির মামু🦩নের মতে, শবে বরাত নিয়ে অনেক ধারণা প্রচলিত আছে। এর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো খাওয়া-দাওয়া। বাংলাদেশের সমাজে অনেকেই মনে করেন, শবে বরাতের রাতে হালুয়া এবং রুটি তৈরি বাধ্যতামূলক। এছাড়া খাবারে মাছ কিংবা মাংস পরিবেশন করাকে অনেকে গুরুত্বপূর্ণ মনে করেন। কিন্ত🎃ু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক মুহাম্মদ আব্দুল লতিফ বলেন, ভারতীয় উপমহাদেশে হালুয়া-রুটির সংস্কৃতি চলে আসছে। কিন্তু ইসলামের দৃষ্টিতে এটি খাওয়া শবে বরাতের জন্য বাধ্যতামূলক নয়।

Link copied!