নতুন কারিকুলামে নবম দশম শ্রেণিতে আর বিজ্ঞান, বাণিজ্য, মানবিক বিভাগ বিভাজন থাকবে না। সবাইকেই কিছু কমন বিষয় নিয়ে পড়তে হবে। এতে অনেকেই শঙ্কিত। এখন আমি আমার কিছু অভিজ্ঞতা থেকে শেয়ার কౠরতে চাই।
প্রতি বছর, অষ্টম থেকে নবম শꦛ্রেণিতে ওঠার সময় অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে যুদ্ধ শুরু হয়ে যায়, সায়েন্স পাবে না কমার্স পাবে। সাধারণত অষ্টম শ্রেণির গণিত ও বিজ্ঞান বিষয়ের ফলাফলের ওপর ভিত্তি করেই এ বিভাজন হয় বলে, অষ্টম শ্রেণি থেকেই অভিভাবক, শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের মধ্যে বছরব্যাপী তোরজোড় চলে। আমি কোচিং বাণিজ্যের দিকটা ফোকাস করতে চাচ্ছি। তাহলে আগামী বছর সায়েন্স আর্টস কমার্স পাবে কিনা, এ জন্য আগের বছর থেকেই বিশাল আটঘাট বেঁধে প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। এই যে ভালো একটা বিভাগ, অর্থাৎ সায়েন্স পাওয়ার জন্য এতো যে যুদ্ধ, এর আউটপুট শেষ পর্যন্ত কী?
এত যুদ্ধ করে সায়েন্স পড়া শꦫিক্ষার্থীই উচ্চ মাধ্যমিকে গিয়ে বিভাগ পরিবর্তন করে ফেলছে। মাধ্যমিকে যে অভিভাবকের ইচ্ছাতে শিক্ষার্থী সায়েন্স পড়েছিলো, সেই একই অভিভাবকের ইচ্ছাতে উচ্চ মাধ্যমিকে চলে যাচ্ছে অন্য বিভাগে। তাহলে মাধ্যমিকে সায়েন্স পড়ার জন্য এত যুদ্ধ বিগ্রহ করে শক্তি ক্ষয় কেন?
কিংবা ধরা যাক, কোনো শিক্ষার্থী উচ্চ মাধ্যমিকেও সায়েন্সই পড়লো। কিন্তু এরপর উচ্চ শিক্ষার স্তরে গিয়েই হাল আমলের ক্রেজ বিবিএ করা শুরু করলো। তাহলে মাধ্য🅰মিকে সায়েন্স পড়ার জন্য এই যুদ্ধের কী ♑মানে?
তবুও ধরে নিলাম, শিক্ষার্থী উচ্চ শিক্ষার স্তরেও বিজ্ঞান সংক্রান্ত কোনো বিষয়েই ডিগ্রি অর্জন করলো। কিন্তু তার পেশাগত ক্ষেত্রে গিয়ে দেখেন, সে এমন কোন♏ পেশায় রয়েছে, যা তার নিজের বিষয়ের সাথেই ♓সম্পর্কিত নয়। তাহলে এতদিনের বিজ্ঞান পড়ার জ্ঞান কোথায় প্রয়োগ হচ্ছে? এমন কি বিজ্ঞানের বিষয়ে পড়েও বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গি তাদের মধ্যে তৈরি হয় না, বিজ্ঞানমনস্ক হয় না।
এছাড়াও মাধ্যমিকে সায়েন্সে না পড়তে পারার জন্য শিক্ষার্থীরা পরিবার ও চারপাশের সবার🙈 কাছ থেকে গঞ্জ🔯নার শিকারও হয়। হীনমন্যতায় ভোগে।
এতকিছুর পরে আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি না যে মাধ্যমিকেই বিভাগ বিভাজনেরꦗ কোনো প্রয়োজন রয়েছে। বরং বিজ্ঞান মনস্ক প্রজন্ম তৈরি করতে বর্তমান কারিকুলাম ভূমিকা রাখতে পারে।
নতুন কারিকুলামের সফলতা অর্জনের জন্য
১. শিক্ষকদের পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণ দরকার।
২. অভিভাবকদের সচেতনতা ও সহযোগিতা দরকার
৩. সকলের মানসিকতার পরিবর্তন দরকার
৪. শিক্ষক শিক্ষার্থী অনুপাত ১:২৫ না হলেও নিদেনপক্ষে ১:৪০ করা।
৫. ক্লাসরুম ও স্কুলগুলোর অবকাঠামোর দিকে নজর দেওয়া
৬. রুটিন ঠিক মতো হতে হবে। বাংলার শিক্ষককে দিয়ে সমাজ, সমাজের শিক্ষককে দিয়ে গণিত আর গণিতের শিক্ষককে দিয়ে ধর্মের ক্লাস যেন না করানো হয়
৭। রুটিনের সময়ও গুরুত্বপূর্ণ। একটি বিষয়ের জন্য যতখানি সময় বরাদ্দ থাকার কথা, এর কম বেশি যেন না হয়। পাশাপাশি রুটিনে শিক্ষকদেরও অতিরিক্ত ক্লাসের চাপ যেন না থাকে, এটা দেখতে হবে।
৮. মেধাবীদের শিক্ষকতা পেশায় আনার জন্য বেতন স্কেল নিয়ে ভাবতে হবে। চিকিৎসা ক্ষেত্রে, বাস, ট্রেন বিমান ভ্রমণে শিক্ষক ও তাদের পরিবারের জন্য বিশেষ সুবিধা রাখার কথাও ভাব🧸তে হবে।