বাংলদেশিদের কাছে সবচেয়ে পরিচিত ভারতের কলকাতার নিউমার্কেট এলাকার মারকুইস স্ট্রিট। কারণ এই এলাকায় গড়ে ওঠা সব ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও হোটেল-রেস্তোরাঁরা প্রধান ভোক্তা বাংলাদেশি নাগরಌিকরা। তাই এই এলাকাটিকে সেখানকা🀅র ব্যবসায়ীরা ‘মিনি বাংলাদেশ’ বলে থাকেন। তবে সেই মিনি বাংলাদেশে চলছে হাহাকার। বাংলাদেশি ক্রেতাদের উপস্থিতি কমে যাওয়ায় সেখানকার ব্যবসা-বাণিজ্যে ধস নেমেছে।
স্থানীয় ব্যবসায়ীরা বলেছেন, এভাবে চলতে থাকলে কিছুদিনের মধ্যেই তাদের প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দিয়ে পথে নামতে হবে। ইতোমধ্যেই অনেক ব্যবসায়ীকে আধপেটা খেয়ে থাকতে হচ্ছে বলেও স🅷্বীকার করেছেন। দেশটির ইংরেজি দৈনিক হিন্দুস্তান টাইমসে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ তথ্য💟 জানা যায়।
প্রতিবেদনে হিন্দুস্তান টাইমস জানিয়েছে, মারকুইস স্ট্রিটের ফুটপাতের ধারে বিভিন্ন ধরনের ব্যাগ বিক্রি করেন ন🉐িজামুল। কিন্তু দেখলে মনে হবে, সেই বিক্রির বারটা বেজে গেছে। কাস্টমার নেই। কেন নেই প্রশ্ন করতেই নিজামুল বলেন, “বাংলাদেশের ঘটনা জানেন না? সেপ্টেম্বর থেকেই এই হাল। মহাজনের কাছে বেশ কিছু ধার-বাকি হয়ে গেছে। মাল বিক্রি হচ্ছে না একদম।”
কলকাতার আলিমুদ্দিন স্ট্রিট থেকে সামনে এগোল๊ে মারকুইস স্ট্রিট। ꩵবাংলাদেশ থেকে যারা কলকাতা আসেন, তারা বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এখানেই থাকেন। এখানকার ব্যবসায়ী নাগরিকরাও তথৈবচ। বাংলাদেশিদের আসা-যাওয়ার ওপর ভিত্তি করেই গড়ে উঠেছে তাদের ব্যবসা।
কিন্তু আগস্ট মাস থেকেই বদলে গেছে গমগমে পথঘাটের চিত্রটা। বাংলাদেশের সিংহাসনে ক্ষমতার পালাবদল হয়ে এসেছেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। শেখ হাসিনা ‘পা♑লিয়েছেন’ দেশ ছেড়ে। তারপর থেকেই একেবারে ভাটা পড়েছে মিনি বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজ্যে। ফ্রি স্কুল স্ট্রিট, মারকুইস স্ট্রিট মিলিয়ে গড়ে ওঠা মিনি বাংলাদেশ এলাকায় ২ শতাধিক হোটেল রয়েছে। আগস্ট মাস থেকে তাদের বাজার মন্দা।
এ বিষয়ে হোটেল আফসারের মালিক বলেন, “ব্যবসার ভীষণ খারাপ হাল। গত সেপ্টেম্বর থেকেই এখানে বাংলাদেশিদের আনাগোনা কমে গেছে। আমাদের হোটে𓂃লে ৪০টি রুম। কিন্তু বর্তমানে ১০-১৫টির বেশি রুম ভর্তি থাকে না। এভাবে চলতে থাকলে অনেকের ব্যবসা উঠে যাওয়ার আশঙ্কাও রয়েছে।”
এদিকে, হোটেল গুলিস্তানের মালিক আবার দুষছেন ভারতের টুরিস্ট ভিসা তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্তকে। তিনি বলেন, “টুরিস্ট ভিসা উঠে যাওয়ার পর থ🎃েকে কাস্টমার অনেকটাই কমে গেছে। আমাদের ব্যবসার বেশিরভাগটাই চলে বাংলাদেশি নাগরিকদের নিয়ে।🌃 এখন মেডিকেল ভিসা যারা পাচ্ছেন, তারাই এখানে আসছেন। কিন্তু তাতে পোষাচ্ছে না। কারণ এত হোটেল! সেই সংখ্যায় মানুষ খুব কম।”
শুধুমাত্র হোটেলমালিকদের অবস্থা শোচনীয় নয়, সেখানকার রেস্তোরাঁগুলোরও একই হাল। মারকুইস স্ট্রিটের বিখ্যাত একটি রেস্তোরাঁর মালিক বলেন, “এমন মন্দা এই প্রথম দেখছি। এ🎶র আগেও নানা সময় পরিস্থিতি খারাপ হয়েছে। কিন্তু এতটা নয়।”
বাংলাদেশি স্টাইলে রান্নাবান্না থেকে সংস্কৃতিকে অনুকরণ করেও বেশ কিছু রেস্তোরাঁ ওই অঞ্চলে গড়ে উঠেছে। অধিকাংশ রেস্তোরাঁর দাবি, তারা খাবারের আইটেমের সংখ্যা কম🦋িয়ে ফেলেছেন। কারণ রান্না করেও লাভ হয় না। যে কয়েকজন কাস্টমার আসেন, সাধারণ খাবারই বেশি ♌খান। বেশি পয়সা বাঁচাচ্ছেন অনেকেই।
সাধারণ ব্যবসা🦂য়ীদের মধ্যে হতাশা বেশি ꧑দেখা গেছে, যারা বাংলাদেশিদের ওপর ভিত্তি করেই তাদের কেনাবেচা চলে। এসব ব্যবসায়ী সব সময় বাংলাদেশ থেকে আসা পর্যটকদের দিকেই তাকিয়ে থাকেন। তবে গত কয়েক মাস ধরে বাংলাদেশিদের আগমনে ভাটা পড়েছে।
সম্প্রতি দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক বেশি খারাপ হতে শুরু করেছে। যার প্রভাব পড়ছে ভারতগামী বাংলাদেশি পর্যটকদের ওপর। তাদের আগমন কমে যাওয়ায় অনেক ব্যবসায়ীর ব্যবসা অনেকটা বন্ধ হয়ে গে💖ছে। অনেকে ব্যবসা বন্ধ করে অন্য কোনো কাজও খুঁজে নিতে 🌳পারছেন না। ফলে তাদের অবস্থা এমনই দাঁড়িয়েছে যে, খেয়ে না খেয়ে দিন কাটাতে হচ্ছে।
নির্বিঘ্নে যেন বাংলাদেশিরা আসতে পারেন, সেই ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছেন হোটেল আফসারের মালিক। তিনি বলেন, “আমাদের কাছে হিন্দু-মুসলিম বলে আলাদা কিছু নেই। মানুষই শেষ কথা। অনেকে গুজব ছড়া♒নোর চেষ্টা করছেন। এসব করে লাভ হবে না।”