জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) সমাবর্তন অনুষ্ঠানের বক্তৃতায় জাতির সামনে 🗹‘সোনার বাংলা’ নির্মাণের মহাপরিকল্পনা তুলে ধরতে চেয়েছিলেন। ১৪ আগস্টের সন্ধ্যায় সে সময়ের ঢাবির উপাচার্য অধ্যাপক ড. আবদুল মতিন চৌধুরী এবং ডাকসুর সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা মাহবুব জামানকে এমনই আভাস দিয়েছিলেন স্বাধীন বাংলাদেশের রূপ🐭কার বঙ্গবন্ধু।
শেখ মুজিব বলেছিলেন, ‘কী ছো♛ট নেত✨া, সব ঠিকঠাক? কাল থেকে নতুন জীবন শুরু হবে।’ মাহবুব জামানকে বঙ্গবন্ধু ‘ছোট নেতা’ বলেই সম্বোধন করতেন।
জাতীয় শোক দিবসের প্রাক্কালে পঁ𓂃চাত্তরের ১৪ আগস্ট সন্ধ্যার স্মৃতিচারণা করে মাহবুব জামান বাসসকে বলেন, “পরদিন অনুষ্ঠানের শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি সম্পর্কে বঙ্গবন্ধুকে জানাতেই আমরা সেদিন তাঁর সঙ্গে দেখা করতে যাই। তিনি আমাদের সন্ধ্যা ৭টায় সময় দিয়েছিলেন। আমরা পৌনে ৭ টায় গণভবনে পৌঁছাই। গিয়ে দেখলাম, সব খুব সুনসান। তেমন কেউ নাই। সেসময় রফিকউল্লাহ চৌধুরী, মুহাম্মদ হানিফ আর তোফায়েল আহমেদ ছিলেন। ওনারা সবাই বঙ্গবন্ধুর স্টাফ। তোফায়েল🎐 ভাই মতিন স্যারকে দেখে বললেন, ‘স্যার আসেন আসেন, আপনাদের জন্য আমরা ছাড়া পাচ্ছি না। আপনাদের সঙ্গে মিটিংটা হলেই এটা আজকের শেষ সাক্ষাৎকার।”
মাহবুব জামান বলেন, “বঙ্গবন্ধু আবদুল মতিন চৌধুরীকে সব সময় নিজে এগিয়ে এসে ডেকে নিতেন। আমরা তাঁর রুমে ঢুকলাম। সেখানে বঙ্গবন্ধু একা। আর খন্দকার মোশতাক ছিলেন। আমরা বঙ্গবন্ধুর রুমে ঢুকতেই বঙ্গবন্ধু বললেন, ‘হ্যাঁ প্রফেসর স্যার খুব চাপ যাচ্ছে তাই না? অনেক দিন পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যাচ্ছি। আমার তর সইছে না! আমি সব শুনেছি। কোনো চিඣন্তা করবেন না।”
তিনি বলেন, “সেদিন সকাল থেকে কয়েকটি ঘটনা আমাদের শঙ্কিত করে তুলেছিল। সকালে উ💃ঠেই শুনলাম শামসুন নাহার হল ও জগন্নাথ হলের মাঝামাঝি (এখন যেখানে তারেক মাসুদ ও মিশুক মুনিরের অ্যাকসিডেন্টের গাড়ি রাখা আছে) পাকিস্তানের পতাকা ঝুলছে। কেউ রাতে এটা লাগিয়ে গেছে। ওই দিন পাকিস্তানের স্বাধীনতা দিবস ছিল। সকাল ১০টার দিকে ঢাবির কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির সামনে দুইটা পটকা ফুটল। সায়েন্স এনেক্স ভবন চত্বরে কয়েকটা ককটেল বোমাসহ ব্যাগ পাওয়া গেꦇল। সব মিলিয়ে আমরা কিছুটা শঙ্কাগ্রস্ত হলাম।”
ড. মতিন চৌধুরী বারবার চেষ্টা করেও বঙ্গবন্ধুকে এ বিষয়ে কিছু বলতে পারলেন না। বঙ্গবন্ধু বললেন, “আমি সব জানি স্যার।༒ আপনি কোনো চিন্তা করবেন না। 🏅১৫ আগস্ট ছিলো শুক্রবার। তাই সব কর্মসূচি জুমা’র নামাজের আগে শেষ করার পরিকল্পনা করা হয়। যদিও সেসময় সাপ্তাহিক ছুটির দিন ছিল রোববার। কর্মসূচি শুরু হওয়ার কথা ছিল কার্জন হল থেকে এবং টিএসসিতে এসে বক্তৃতার মাধ্যমে কর্মসূচি শেষ হবে।”
শেখ মুজিব বললেন, “আমি কিন্তু কার্জন হলে থামব, হলটা দেখতে হবে। অনেক স্মৃতি। ভাষা আন্দোলনের শুরু তো ওখান থেকꦰেই। ফজলুল হক হলটা দেখব। জগন্নাথ হলের গণকবরে কিছুক্ষণ দাঁড়াব। আমারে আপনারা কেউ বাধা দেবেন না। কালকে আমি ইচ্ছেমতো বিশ্ববিদ্যালয় ঘুরব।”
মাহবুব জামান বলেন, “সেসময় মতিন স্যার এবং আমি ছাড়া রুমের ভেতর সারাক্ষ𝄹ণই খন্দকার মোশতাক ছিলেন। তিনি বেশি কথা বলেননি, 🥀কিন্তু মিটি মিটি হাসছিলেন।”
বঙ্গবন্ধুর উচ্ছ্বাস এবং নিজেদের মনের মধ্যে শঙ্কা নিয়েই রাত শোয়া আটটার দিকে গণভবন থেকে বের হয়ে আসেন তারা। বাসসেরর সঙ্গে স্মৃতিচারণাকালে মাহবুব জামান বলেন, “আমরা কিন্তু বঙ্গবন্ধুকে জিজ্ঞেস কর꧙িনি যে পরদিন তিনি কি বক্তৃতা দেবেন। কিন্তু তাঁর কথায় বুঝতে পারছিলাম যে তিনি কোনো মহাপরিকল্পনার কথা জানাবেন। বঙ্গবন্ধু বারবার বলছিলেন, ‘আসল কাজ তো শুরু হবে আগামীকাল। এমন বক্তৃতা দেব যে, সারা দেশের মানুষ নতুন করে জেগে উঠবে।”
তিনি বলেন, “আমার আজও মনে হয়, ১৫ আগস্টে বঙ্গবন্ধু জাতিকে এমন কোনো মহাপরিকল্পনার কথা🃏 বলতে চেয়েছিলেন, যা ওই সময়কার বাস্তবতায় ৭ মার্চের ভাষণের মতোই দেশবাসীর কাছে গ্রহণযোগ্য হতো।” সূত্র: বা𝓡সস