চৈত্রের শেষ আর বৈশাখের শুরু। বাঙালির সবচেয়ে জাঁকজমকপূর্ণ উৎসব পালিত হয় এই দুই দিনে। তবে দুয়ের মধ্যে উৎসবের তালিকায় চৈত্র সংক্রান্তির পাল্লা ভারী। বাংলা বর্ষের সর্বাধিক উৎসবের সঙ্গে জড়িয়ে আছে চৈত্র সংক্রান্তির দিনটি। ধর্ম, ব⛎র্ণ, নির্বিশেষে বাঙালি কিংবা বাংলার মানুষ এই দিনকে কেন্দ্র করে উৎসব পালন করে। কখনো ধর্মীয় বিশ্বাস, কখনো আবহমান বাংলার ঐতিহ্য আর লোক লোকায়িত উৎসবের ধ্বনি পাওয়া যায় এই একটি দিনকে ঘিরে।
চৈত্র সংক্রান্তির দিন বাড়িতে চৌদ্দ রকমের শাক রান্না হতো। যার মধ্যে অন্তত পক্ষে একটি শাক বেশ তিতা হতে হবে। তিতা শাক হিসেবে চৈত্র মাসে গিমা শাক খেতে হতো। এই গিমা শাক মিলতো কাছেই। বাড়ির আশে পাশে, পুকুর পাড়ে, জমিতে কি♈ংবা রাস্তার ধারেও। এর অর্থ কী এমন যে, প্রকৃতি খোঁজ নিতে চাইছে তার অনাবাদী অংশ ঠিক আছে কি-না?
চৈত্র সংক্র�🍨�ান্তির দিন গ্রামের মেয়েরা শাক কুড়াতে বের হতেন। আচার ছিল চৌদ্দ রকম শাক কুড়াতে হবে। চৌদ্দ রকম এই শাকের নামের মধ্যে জানতে পাই- নেটাপেটা, কলমি, হেলেঞ্চা, গিমা, দন্ডকলস, কচু শাক, তেলাকুচা, ঢেঁকি শাক, হেঞ্চি, বতুয়া, খারকুন, খুইরাকাটা, পিপুল শাক, কস্তুরি, থানকুনি, খেতাফাটা, পাট শাক, শুশ্নি, নুনিয়া, হাগড়া ইত্যাদি।
চৈত্র সংক্রা🍸ন্তির খাদ্য তালিকায় শাক ছাড়া আরও ছিল ছাতু, চিড়া, দই, মুড়ি, খই, তিল ও নারিকেলের নাড়ু। এও যেন শিক্ষা দেয় যে, কেবল আবাদী সবজি খেলে শরীর টিকবে না। খেতে হবে বৈচিত্র্যপূর্ণ নানান রকম শাক, সবজি, 🤡ফল, মূল, ইত্যাদি।
দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে চৈত্রসংক্রান্তির খাবার ভিন্ন ভিন্ন হয়ে থাকে। তবে কিছু 𒐪বিষয়ে মিলও আছে, যেমন তিতা স্বাদের খাবার। এর মধ্যে নিমপাতাভাজা, শুক্ত প্রধান। ঘিয়ে ভাজা নিমপাতা দিয়ে গরম ভাত, সঙ্গে আলু, কুমড়া, পটোল, বেগুন, করলাভাজা—এ পাঁচ রকমের ভাজা, ঢেঁকিশাক, পাটশাক, গিমাশাক, বথুয়াশাক, থানকুনি শাক ভাজা, ডালের বড়া মেশানো শুক্ত, পুঁটি মাছভাজা এগুলো চৈত্রসংক্রান্তির একেবারে ‘ট্রেডমার্ক’ খাবার। খেয়াল করলে দেখবেন, এ খাবারগুলোর কয়েকটি তিতা স্বাদের। ধারণা করা হয়, তিতা খাবার শরীরের রোগ প্রতিরোধ করতে সক্ষম।