‘ঐতিহাসিক’ তিন দিনের সফরে যুক্তরাষ্ট্রে গিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। লালগালিচার প্রান্তে দাঁড়িয়ে তাকে স্বাগত জানান মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। করমর্দন করে ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে বললেন, ‘হোয়াইট হাউসে আপনাকে স্বাগত’। এ সময় উপস্থিত ছিলেন মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস, পররাষ্ট্রম🧔ন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনসহ আরও অনেকে।
ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে। এতে বলা হয়, এশিয়ায় চীনের আধিপত্য কমানোর প্রচেষ্টা হিসেবে বাইডেন প্রশাসন নয়া দিল্লির সঙ্গে সম্পর্ক আরও গভীর করছে। একসময় মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে যাকে যুক্তরাষ্ট্রের ♎ভিসা দেওয়া 💜হয়নি, তাকেই সর্বোচ্চ কূটনৈতিক সম্মাননা দিচ্ছে দেশটি। যুক্তরাষ্ট্র এখন ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে অতিগুরুত্বপূর্ণ অংশীদার হিসেবে দেখছে।
সফরে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের মধ্যে যে বৈঠক হয়েছে সেখানে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ ও মানবাধিকার নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এই সফরে ভারত𓂃 ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে প্রযুক্তি, প্রতিরক্ষা, মহাকাশ গবেষণা, সেমিকন্ডাক্টর এবং খনিজ সম্পদ নিয়ে বিভিন্ন চুক্তি ও সমঝোতা স্বাক্ষর করা হয়।
গতকাল আসে সামরিক চুক্তির ঘোষণা। যুক্তরাষ্ট্রের জেনারেল ইলেকট্রিকের অ্যারোস্পেস ইউনিটের সঙ🍸্গে ভারতের ‘হিন্দুস্তান অ্যারোনটিকস লিমিটেড’ (হ্যাল) এর চুক্তি হয়েছে। এ চুক্তির ফলে যুদ্ধবিমানের ইঞ্জিন তৈরি ক꧃রবে তারা। আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ চুক্তি হয়েছে গতকাল। এ চুক্তির ফলে যুক্তরাষ্ট্রের মেমোরি চিপ নির্মাতা প্রতিষ্ঠান মাইক্রন টেকনোলজি ভারতে ৮২ কোটি মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করবে। ভারতের গুজরাটে নতুন প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা হবে। সেখানে চিপ সংযোজন, পরীক্ষা করা হবে।
বৈঠকের পর যৌথ সংব♋াদ সম্মেলনে অংশ নেন দুই নেতা। প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর এই প্রথম কোনো সংবাদ সম্মেলনে প্রশ্নের মুখোমুখি হলেন মোদি। সংবাদ সম্মেলনে ভারতের গণতন্ত্র ও মুসলমানদের অবস্থা নিয়ে জানতে যাওয়া হলে নরেন্দ্র মোদি বলেন, “গণতন্ত্র আমাদের চেতনা। আমাদের সংবিধান, আমাদের সরকার ধর্ম, বর্ণ, জাতের ভিত্তিতে কোনো বিভেদ করে না।”
সংবাদ সম্মেলনে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেন, ꦇ“ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বৈঠকে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ নিয়ে আলোচনা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র এবং ভারতের ‘ডিএনএর’ মধ্যে গণতন্ত্র রয়েছে।”
কিন্তু নরেন্দ্র মোদির সরকারের আমলে ভিন্ন মতাবলম্বী ও ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর দমন-পীড়নের বিষয়ে মানবাধিকার সংস্থাগুলো যেসব অভিযোগ তুলেছে সেটি নিয়েও প্রেসিডেন্ট বাইডেনকে প্রশ্ন করা হয়। বাইডেন বলেন, “ভারতের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রর সম্পর্ক যে জায়গায় অবস্থান করছে, চীনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্꧒কের বিষয়টি সে রকম নয়।”
বৈশ্বিক অর্থনীতি এবং ভূ-রাজনৈতিক উত্তাল অবস্থার মধ্যে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির যুক্তরাষ্ট্র সফর বি๊শাল তাৎপর্য বহন করে। তাকে স্বাগত জানাতে সব রকম প্রতিবন্ধকতা সরিয়ে নিয়েছে হোয়াইট হাউস। মোদির এই সফরকে ঐতিহাসিক বলা হচ্ছে, কারণ এ নিয়ে দ্বিতীয়বার মার্কিন কংগ্রেসের যৌথ অধিবেশনে বক্তব্য রাখেন তিনি। এর আগে কোনো ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী দুইবার মার্কিন কংগ্রেসের যৌথ অধিবেশনে বক্তব্য রাখেননি।