ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সরকার পতনের বছর খানেক আগে থেকেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ওপর চাপ প্রয়োগ বন্ধ করতে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে লবিং শুরু করেছিল ভারত। তারা বলেছিল, উন্মুক্ত নির্বাচনের মাধ্যমে বিরোধীদের ক্ষমতা লাভের সুযোগ করে দেওয়া হলে ভারতের জাতী🐻য় নিরাপত্তার জন্য হুমকিস্বরূপ ইসলামপন্থী গোষ্ঠীগুলোর প্রজনন ক্ষেত্র হয়ে উঠবে বাংলাদেশ।
ক♐ারণ, গত জানুয়ারিতে বাংলাদেশে নির্বাচনের আগে বিরোধীদলীয় হাজার হাজার নেতাকর্মী ও সমালোচককে কারাগারে পাঠানোর ঘটনায় প্রকাশ্যে শেখ হাসিনার সমালোচনা করেছিলেন মার্কিন কূটনীতিকরা। বিচারবহির্ভূত অপহরণ ও হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় শেখ হাসিনা নেতৃত্বাধীন প্রশাসনের প♔ুলিশের একটি ইউনিটের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞাও আরোপ করেছিল বাইডেন প্রশাসন। একই সঙ্গে গণতন্ত্র ক্ষুন্নকারী কিংবা মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছেন এমন বাংলাদেশিদের ওপর ভিসা বিধিনিষেধ আরোপের হুমকি দেয় ওয়াশিংটন।
এমন পরিস্থিতির মধ্যে বাংলাদেশকে প্রাধান্য না দিয়ে ভারত এক চেটিয়াভাবে শেখ হাসিনাকেই সমর্থন দিয়ে গেছে। যা এখন দেশটিকে বিপাকে ফেলে দিয়েছে। দক্ষিণ এশিয়ায় সবচেয়ে বড় মিত্রকে হারাতে হয়েছে। যে শূন্যস্থান পূরণে খুব বেশি বেগ পেতꦿে হবে। সম্প্রতি মার্কিনꦑ ও ভারতীয় কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম ওয়াশিংটন পোস্টের এক প্রতিবেদনে এসব বিষয় উঠে এসেছে।
যদিও শেষ অবধি ছাত্র-জনতার গণবিক্ষোভে গত ৫ আগস্ট পদত্যাগ করে সেই ভারতেই পালাতে বাধ্য হন শেখ হাসিনা। সেদিন ছাত্র-জনতা যখন ত♐ার সরকারি বাসভবনের দিকে এগিয়ে আসছিল তখন ১৫ বছরের শাসনের অবসান ঘটিয়ে তিনি 𝔉গোপনে সবচেয়ে বড় মিত্র ভারতে পালিয়ে যাচ্ছিলেন।
শেখ হাসিনা সরকারের পতনের বিষয়টি ভারতে ব্যাপক শঙ্কা তৈরি করেছে। কারণ শেখ হা♕সিনা ছিলেন দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে ভারতের সবচেয়ে বড় মিত্র। ভারতীয় লেখক সম্পাদক রাহুল ত্রিপাঠী ফরাসি সংবাদমাধ্যম ফ্রান্স-২৪ কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ভারত সরকার শেখ হাসিনার ওপর অতিরিক্ত; অন্যদিকে বাংলাদেশের ওপর কম বিনিয়োগ করেছে। আর এ কারণেই দেশটি এখন এমন শঙ্কায় পড়েছে।
সংবাদ🐻মাধ্যমটিতে আরও বলা হয়েছে, গভীর সম্পর্ক গড়ার জন্য ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উভয়ই তাদের নিজ দেশে গণতন্ত্রের পশღ্চাদপসরণকে উপেক্ষা করেছেন। শেখ হাসিনার পতনের পর ভারত সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার ব্যাপারে যে সতর্কতা দিয়েছে সেটিকে ভণ্ডামি হিসেবেও অভিহিত করেছে ফ্রান্স-২৪।
সংবামাধ্যমটিতে আরও বলা হয়েছে, শেখ হাসিনার পতনের বিষয়টি গত কয়েক বছর ধরেই তৈরি হচ্ছিল। যদিও সরকারি চাকরির কোটার সংস্কার নিয়ে শুরু হওয়া আন্দোলꦰন তার শাসন অবসানের পথ তৈরি করেছে। কিন্তু গত ৭ জানুয়ারি যখন তিনি অস্বচ্ছ নির্বাচনের মাধ্যমে চতুর্থবারের মতো ক্ষমতায় আসেন তখন সাধারণ মানুষের ক্ষোভ আরও বৃদ্ধি পায়।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ৭ জানুয়ারির নির্বাচনকে একটি ‘অস্বচ্ছ’ নির্বাচন হিসেবে অভিহিত করে। কিন্তু আঞ্চলিক পরাশক্তি ভারত ও চীন অতি দ্রতি সময়ের মধ্যে ৭৬ বছর বয়সী শেখ হাসিনাকে শুভেচ্ছা জানায়। বিশেষত, নির্বাচন শেষে নরেন্দ্র মোদির টুইটটি ছিল ন্যাক্কারজনক। সাধারণ মানু💎ষ ও বিরোধী দল নির্বাচনটি বয়কট করলেও মোদি শেখ হাসিনা—এমনকি বাংলাদেশের মানুষকে শুভেচ্ছা জানিয়ে বার্তা দেন।
ভারতীয় লেখক ও সম্পাদক ไসলিল ত্রিপাঠী বলেছেন, “মোদি শুভেচ্ছা জানালেও, পুরো বিষয়টি ছিল বাস্তবতা থেকে অনেক দূরে। ভারত শেখ হাসিনার ওপর অতিরিক্ত আর বাংলাদেশের ওপর কম বিনিয়োগ করেছে। ভারত তার সব ডিম একটি ঝুড়িতেই রেখেছিল। আর ভূ-কৌশলগত দিক দিয়ে এটি অবশ্যই কোনো বুদ্ধিমান কিছু ছিল না।”