কিংবদন্তি রবীন্দ্রসংগীতশিল্পী, শিক্ষক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন রবিরাগের পরিচালক সাদি মহম্মদের মৃত্যুতে শোকাহত সাংস্কৃতিক অঙ্গন। বুধবার (১৩ মার্চ) রাতে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের সল্লিমুল্লাহ রোডের বাসায় গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেন সাদি। দরজা বন্ধ করা ঘর থেকে কোনো সাড়া শব্দ না পেয়ে দিশেহ💞ারা হয়ে পড়েন পরিবার। এরপর দরজা ভেঙে ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয় সাদির মরদেহ।
সাদির ছোট ভাই নৃত্যশিল্পী শিবলী সংবাদমাধ্যমকে বলেন, সারাদিন ভালোই ছিলেন। রেখেছেন রোজা। সন্ধ্যায় পরিবারের সব সদস্যের সঙ্গে ইফতারও করেন। প্রিয় তানপুরায় তুলেছেন সুর। বুধবার রাতে রিহার্সেল করার মাঝে ভাই তার সহকারীকে বলেন, তুমি বাইরে যাও আমি রিহার্সেল শেষ করে ফোন করলে এসো। এর কিছুক্ষণ পর আমি তার রুমের সামনে গিয়ে দেখি, ভেতর থেকে দরজা বন্ধ। এটা আমার কাছে অস্বাভাবিক লাগে। কারণ রিহার্সেলের সময় ভাই কখনোই রুমের দরজা বন্ধ করেন না। আমি কড়া নাড়ি। ভেতর থেকে কোনো সাড়া-শব্দ পাই না। তখন আমি বলি দরজা ভাঙো।
পরিবারের দাবী, অভিমান, কাজের স্বীকৃতি না পাওয়া আর এক বছরে মা ও বোনের মৃত্যু মেনে নিতে পারছিল💛েন না সাদি। যে কারণে স্বেচ্ছায় আত্মহত্যার পথ বেছে নেন।
শিবলী আরও বলেন, অনেক সারল্য ভরা মন ছিল সাদির। মা🃏নুষকে যেমন ভালোবেসেছেন ও চাইতো মানুষও একইভাবে ওকে ভালোবাসুক। মানুষের ভালোবাসা না পাওয়ায় ওর এই যে মৃত্যু, সেটা আসলে মেনে নেয়া যাচ্ছে না। আমাদের খুব কষ্ট হচ্ছে। এর আগেও আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন সাদি।
এ বিষয়ে মোহাম্মদপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) তোফাজ্জল হোসেন জানান, বুধবার আনুমানিক সাড়ে ৮টায় শিল্পীর দরজা না খোলার খবর পান। খবর পেয়েই রাজধানীর মোহাম্মদপুরের সল্লিমুল্লাহ রোডের বাসায় পুলিশ নিয়ে ছুটে যানꦆ। দরজা ভেঙে বাসা থেকে সাদির নিথর দেহ উদ্ধারের পর তাকে শহীদ সোহ্রাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়📖। সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক স্বাগতিক লোহানী তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
হত্যা না আত্মহত্যা এমন প্রশ্নে তোফাজ্জল হোসেন বলেন, গলার দাগ এবং দরজা ভেঙে যেভাবে বাসায় ঢোকা হয়েছে সব মিলিয়ে আত্মহত্যাই মনে হয়েছে। তবে লাশের ময়নাতদন্ত হয়নি। তাই নিশ্চিত কিছু বলা যাচ্ছে না। প্রাথমিকভাবে দেখে যা মনে হয়েছে তা আত্মহত্যা বলেই মনে হয়েছে। পরিবারের সিদ্ধান্তের কারণে শিল্পী সাদি মহম্মদের লাশের ময়নাতদন্ত করা হয়নি। বরেণ্য এই শিল্পীর মৃত্যুর কারণ হিসে🎐বে বিষণ্ণতা আর অভিমানকেই দায়ী করা হচ্ছে।
সাদি মহম্মদ রবীন্দ্রসংগী🐟তের ওপর বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেছেন। ২০০৭ সালে ‘আমাকে খুঁজে পাবে ভোরের শিশিরে’ অ্যালবামের মাধ্যমে তিনি সুরকার হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন। ২০০৯ সালে তার ‘শ্রাবণ আকাশে’ ও ২০𓆏১২ সালে তার ‘সার্থক জনম আমার’ অ্যালবাম প্রকাশিত হয়।