• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১, ১৬ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Songbad Prokash

ইনস্টাগ্রাম

টুইটার


লিংকডইন

পিন্টারেস্ট

গুগল নিউজ


প্রেম করে বিয়ে, হাসি-খুশিতে দুই যুগ পার করেছেন ৩ ফুটের এই দম্পতি


ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ১৪, ২০২৪, ১২:০৩ পিএম
প্রেম করে বিয়ে, হাসি-খুশিতে দুই যুগ পার করেছেন ৩ ফুটের এই দম্পতি

ভালোবাসা নাকি রং বদলায়। কারণে বা অকারণে বদলায়। ভালোবেসে একসঙ্গে দীর্ঘ সময় থাকলেও অনেক সময় নিমিষেই বিচ্ছেদ হয়ে যায়। আবার ঠুনকো কারণ কিংবা অমিল ঘটলেও একজন আরেকজনকে ছেড়ে যায়। তবে হাজারো মতের অমিল, মানুষের কটাক্ষ, সমাজের হেয় চোখে তাকানোসহ কোনোকিছুই ফাটল ধরা🔴তে পারেনি নীলকান্ত-গীতা দম্পতির। সব উপেক্ষা করে ভালোবেসে একসঙ্গে অতিক্রম করছেন দুই যুগেরও বেশি সময়। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তারা এভাবেই থাকতে চান।

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার নারগুন ইউনিয়নের জোতপাড়া গ্রামের বাসিন্দা নীলকান্ত ও গীতা রানি। কয়েক মাসের প্রেমের পর ১৯৯৮ সালে পারিবারিকভাবে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। সাংসারিক জীবনে এক মেয়ে সন্ত𒆙ানের অভিভাবক তারা। দুজনের উচ্চতা প্রায় ৩ ফুট। এতো কম উচ্চতাಌ ও খর্বাকৃতি হওয়ায় দুজনকেই শুনতে হয়েছে সমাজের মানুষের নানান কটু কথা। কিন্তু সেসব কথাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে একে অপরকে ভালোবেসে একসঙ্গে পার করেছেন দুই যুগেরও বেশি সময়। তাদের এমন ভালোবাসার জুটি এখন ভালোবাসার এক অনন্য দৃষ্টান্ত। তাদের ভালোবাসার সুবাস ছড়িয়ে পড়েছে এলাকাজুড়ে।

শারীরিক গঠনে উচ্চতা কম হওয়ায় প্রতিবেশি, আত্মীয়-স্বজন এমনকি পরিবারেও কাছে হতে হয় নানা কটাক্ষের শিকার৷ পড়াশোনা করে বড় হওয়ার স্বপ্নে বিভোর হলেও তা সম্ভব হয়নি। তবে পড়াশোনা বা চাকরি ক🍬রে সফল না হলেও ভালোবেসে সফল হয়েছেন দুজন। একজন যেন আরেকজনের পরিপূরক। হাজারো অভাবে ছেড়ে যাননি একে অন্যের হাত। তাদের ভালোবাসার এমন দৃষ্টান্ত নজর কেড়েছে সকলের৷

তাদের ভালবাসা দেখে মুগ্ধ এলাকাবাসীও। ঠ🔯ুনকো কারণে ছেড়ে যাওয়া মানুষগﷺুলোর কাছে এ দম্পতি যেন শেখার বাতিঘর।

স্থানীয় স্কুল শিক্ষক কমল রায় বলেন, “তারা শুধুমাত্র দেখতে খাটো। এটিই তাদের একটা অপূর্ণতা। সবার জীবনেই একটা না একটা সমস্যা থাকে। তাদের জীবনে এরকমটাই ছিল। তবে তাদের যে মিল মহব্বত, এটা অনেক বেশি। আমরা তাদের মাঝে কখনো বড় কোনো সমস্যা দেখিনি। তারা সবসময় হাসিখুশি থাকার চেষ্টা ℱকরে। তাদের মতো স্বামী-স্ত্রী প্রতিটা সংসারে হওয়া উচিত।”

গীতা র♔ানী বলেন, “সংসার মানে সমস্যা, ঝগড়া ও নানা ঝুট-ঝামেলা। অনেক সময়ে এসব বাড়লেও কখনো ভাবিনি তা🔥কে ছেড়ে যাব। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত একসঙ্গে থাকার দৃঢ় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ আমরা।”

নীলকান্ত বর্মণ বলেন, “সৃষ্টিকর্তা আমাকে এভাবেই পৃথিবীতে বাঁচাতে চেয়েছেন। তিনি আমাকে ভালো রেখেছেন। মানুষের কটু কথা শুনেও আমি পড়াশোনা চালিয়ে গেছি। তবে সমস্যার কারণে এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করা হয়নি। তারপরে কাজ করে সংসার চালাই। এক মেয়ে আমার। তাকে পড়াশোনা করিয়ে 🌃বিয়ে দিয়েছি। বাবার দেওয়া ভিটেমাটি ছাড়া আর কিছু নেই। শুধু যে ঘরটিতে আমি থাকি সেটি আমার। বাবা-মায়ের ঘরটা মায়ের নামে। কিছুদিন আগে বাবা মারা গেছেন। মা আমার নামে জমিটা দিতে চান। তবে সেটি আমার নামে করে নেওয়ার মতো কোনো খরচ আমার নেই। কয়েক মাস আগে এক দোকানে থাকতাম। সেটা বাদ দিয়ে এখন দিনমজুরি করি৷ ঘরটাও আমার প্রায় ভাঙা। টাকার অভাবে সংস্কার করতে পারছি না।💦 তারপরেও আমার স্ত্রী সঙ্গ দিয়ে আসছেন। কখনো তিনি আমাকে হতাশ করেননি। সবসময় আমাকে সার্পোট দিয়ে থাকেন। এটি আমার জীবনের বড় প্রাপ্তি।”

সদর উপজেলার নারগুন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সেরেকღুল ইসলাম বলেন, “তারা দুজন একই উচ্চতার। তাদের মধ্যে ভালোবাসার মধুর সম্পর্ক খুব কাছ থেকে দেখেছি। তারা সুন্দর করে জীবনযাপন করছেন। তাদের ভালোবাসার কথা এখন সবার মুখে মুখরিত হয়েছে। ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে সবসময় তাদের পাশে থাকার চেষ্টা করা হয়।”

Link copied!