মাস খানেক আগে মারা গেছেন বাবা। তবুও পারিবারিক পিছুটানকে উপেক্ষা করে দোকান কর্মচারী মবিন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র🅰 আন্দোলনের ডাকে সাড়া দিয়ে যোগ দিয়েছিলেন মিছিলে। সেখানে পুলিশের ছোড়া গুলিতে দুই চোখের দৃষ্টিশক্তিসহ হারিয়েছেন এক কান𝔉ের শ্রবণশক্তি। বর্তমানে অর্থের অভাবে বন্ধ রয়েছে মবিনের চিকিৎসা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শরীয়তপুরের ডামুড্যা উপজেলার বড় শিধলকুড়া এলাকার মৃত মোফাজ্জল হোসেন ও নাজমা বেগম দম্পতির ছোট ছেলে ১৭ বছর বয়সী মবিন। বড় ছেলে জুলহাস বাক ও বুদ্ধি প্রতিবন্ধী। তাকে শিকলে বেঁধে রাখতে হয়। আর মেজ𒊎 ছেলে নাজমুল হুদা🔯 সামান্য বেতনের একজন ড্রাইভার।
বাবা মারা যাওয়ার পর সংসারে স্বচ্ছলতা ফেরাতে কয়েক মাস আগে ঢাকার উত্তরা রাজলক্ষ্মী এলাকায় কম্পিউটারের দোকানে চাকরি নেন মবিন। দেশজুড়ে যখন বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন উত্তাপ ছড়াচ্ছে, তখন পরিবারের কথা উপেক্ষা করে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মি🐻ছিলে অংশ নিয়ে🌟ছিলেন মবিন।
গেল ১৮ জুলাই বেলা ১১টার দিকে মিছিলটি উত্তরা থানার দিকে এগোলে হঠাৎ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী ব𓆉াহিনীর ছোড়া ২০০টির অধিক গুলি এসে বিদ্ধ হয় মবিনের মুখমণ্ডলে। এরপর চোখের সামনে নেমে আসে ঘোর অন্ধকার। রক্তাক্ত অবস্থায় সড়কে লুটিয়ে পড়লে তাকে উদ্ধার করে নেওয়া হয় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। গত এক মাসে দরিদ্র পরিবারটির শুধু চিকিৎসা বাবদ ব্যয় হয়েছে অন্তত ২ লাখ টাকা। চিকিৎসক জানিয়েছে, আরও ৩ 🥃থেকে ৪ লাখ টাকা হলে দৃষ্টিশক্তি ও শ্রবণশক্তি ফিরে পেতে পারেন মবিন।
দুই চোখের দৃষ্টিশক্তিসহ এক কানের শ্রবণশক্তি হারানো মবিন বলেন, “আমি দোকান বন্ধ করে আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যোগ দিই। উত্তরা থানার কাছে আসতেই হঠাৎ পুলিশ গুলি করে। কিছু বুঝে ওঠার আগেই দেখি চোখ এবং সারা মাথা দিয়ে রক্ত পড়ছে। আমি সেখানেই পড়ে যাই। পরে শিক্ষার্থীরা আমার গেঞ্জি খুলে মাথায় বেঁধে হাসপাতালে নিয়ে যায়। এখন আমি দুচোখে দে🎉খতে পাই ন🦹া। তবে ডানচোখে টর্চের আলো অনুভব করতে পারি। জানি না আবার আগের মতো দেখতে পাব কি না। তবে আমি দেখতে চাই।“ এসময় কান্নায় ভেঙে পড়েন মবিন।
মবিনের ভাই নাজমুল হুদা বলেন, “স🅠মন্বয়কদের ডাকে আমার ভাই দেশের জন্য আন্দোলনে অংশ নিয়েছে। এখন সরকারের উচিত আমাদের পাশে দাঁড়ানো। আমার ভাইয়ের সুচিকিৎসার দাবি জানাই।”
মবিনের মা নাজমা বেগম বলেন𓆏, “দেশ আজ স্বাধীন হলো। কিন্তু আমার ছেলে চোখে দেখতে পারছে না। আমাদের সহায় সম্বল যা ছিল তা বিক্রি করে চিকিৎসা চালিয়েছি। এখন আর সম্ভব না তাই আপাতত চিকিৎসা বন্ধ। বাড়িটুকু বিক্রি করে হলেও ছেলেকে তো চিকিৎসা করাতে হবে। যদি সমাজের বিত্তশালী বা সরকাবিভাবে আর্থিক সাহায্য পাই তাহলে আমার ছেলের চিকিৎসা করানো যাবে।”
স্থানীয় বাসিন্দা দেলোয়ার হোসেন হাওলাদার বলেন, “কয়েক মাস আগে মবিনের বাবা মারা গেছে। তাদের তিন ভাইয়ের মধ্যে একজন প্রতিবন্ধী। এখন মবিনের করুণ অবস্থা। ওদের পরিবারের অবস্থা মোটেও ভালো না। এখন মবিনের চিকিৎসাও দরকার। চিকিৎসা হলে হয়তো সꦯে আবার আগের মতো দেখতে পারবে। সকলের কাছে আমাদের অনুরোধ এই 🧜পরিবারটির দিকে সরকার যেন নজর দেয়।”