সংসারে সচ্ছলতা আনতে একসময় কাজের সন্ধানে দেশের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে ছুটেছেন সাদ্দাম হোসেন (৩৪)। কোনো উপায় না পেয়ে খুলনা গিয়ে শুরু করেন সেলস রিপ্রেজেন্টেটিভের (বিক্রয় প্রতিনিধি) চাকরি। এরপর সিকিউরিটি গার্ডের চাকরি। বেতন পেতেন প্রায় সাড়ে তিন হাজার টাকা। 🌜ꦓএ টাকায় সংসার চালানোই দায় ছিল।
জীবন-জীবিকার তাগিদে সামান্য বেতꦡনের চাকরি ছেড়ে সাতক্ষীরা গিয়ে শুরু করেন রাজমিস্ত্রির কাজ। রাজমিস্ত্রির সহকারী হিসেবে যে পারিশ্রমিক পেতেন, তা-ই দিয়ে সংসার চলত। প্রায় পা🎀ঁচ বছর করেন এ কাজ।
রাজমিস্ত্রির কাজ করতে গিয়ে সাদ্দাম একট♈ি মাধ্যমে জানতে পারেন-অনলাইনে কাজের খবর। রাজমিস্ত্রির কাজের ফাঁকে ধীরে ধীরে ঝুঁকে পড়েন অনলাইন প্লাটফর্মে। অল্পদিনের ব্যবধানে হয়ে ওঠেন সফল ফ্রিল্যান্সার ও ইউটিউবার। সেই থেকে আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি সাদ্দাম হোসেনের। রাজমিস্ত্রি থেকে হয়েছেন সফল ইউটিউবার ও ফ্রিল্যান্সার। উচ্চশিক্ষার সুযোগ না পেলেও অনলাইন প্ল্যাটফর্মে সফল মানুষ তিনি।
সাদ্দাম হোসেন বলেন, “জীবনসংগ্রামে অনেক ঘাত🐟-প্রতিঘাত সহ্য করেছি। তবে হাল ছাড়িনি। অনেক কষ্টের মাঝেও সফলতার মুখ দেখেছি। এসআর থেকে শুরু করে সিকিউরিটি 🅺গার্ড এবং রাজমিস্ত্রির কাজ করেছি। তবে পরিশ্রম অনুযায়ী বেতন পাইনি। তাই অনলাইন মাধ্যম বেছে নিয়েছি। অবশেষে সফলও হয়েছি।”
অনলাইনে কাজে অভিজ্ঞতা বর্ণনা করতে গিয়ে সাদ্দাম বলেন, “ফ্রিল্যান্সার বা অনলা✱ইন মার্কেট প্লেসের কাজটি শুরু করেছি ২০১৩ সাল থেকে। তবে প্রথমে কাজ শেখার জন্য ভালো কোনো শিক্ষক পাইনি। তবে হাল ছাড়িনি। ‘ওয়েব ডিজাইন’ দিয়ে অনলাইন জগতে প্রথমে কাজ শুরু করি। পরে ইউটিউব চ্যানেল, ফেসবুক পেজসহ ফ্রিল্যান্সিংয়ের বিভিন্ন ধরনের কাজ করছি। সব মিলিয়ে প্রতি মাসে দুই থেকে আড়াই লꦍাখ টাকা আয় হচ্ছে।”
অনলা🎀ইনের আয়ের ওপর নির্ভর করেই নড়াইল উপশহর সংলগ্ন দলজিতপুর মৌজায় পাঁচ শতক জমির ওপর একতলা পাকা বাড়ি, সাড়ে তিন শতক জমিতে মার্কেটসহ ১২৬ শতক চাষাবাদের জমি কিনেছেন সাদ্দাম হোসেন। সব মিলিয়ে জিরো থেকে কোটিপতি হয়েছেন তিনি।
ইউটিউব, ফ্রিল্যান্সার, ফেসবুক পেজসহ অনলাইন মার্কেটিংয়ের পাশাপাশি এসব বিষয়ে নিয়মিত ক্লাস নিচ্ছেন ♌সাদ্দাম হোসেন। সরাসরি ও অনলাইনে সাদ্দাম হোসেনের ক্লাস করে অনেকেই এখন প্রতিষ্ঠিত ফ্রিল্যান্সার ও ইউটিউবার।
সাদ্দাম হোসেনের শিক্ষার্থী নড়াইলের দলজিতপুরের মেহেদী, শাকিব, রাজশাহী জেলার রফিকুল ইসলাম ও ময়মনসিংহের আমিনুল ইসলামসহ অনেকে বলেন, “সাদ্দাম স্যারের কাজ থেকে আমরা বিনা মূল্যে ক্লাস করে ফ্রিল্যান্সিং জগতে প্রতিষ্ঠিত হয়েছি। এখন নিজেরাই দক্ষ ফ্রিল্যান্সার হিসেবে ভালো উপার্জন করছি। আমরাও এখন অন্যদের ফ্রিল্যান্স♏িংꦺ শেখাচ্ছি।”
দুর্গাপুর এলাকার জাকির হোসেন বলেন, সাদ্দাম এলাকার ‘ফ্রিল্যান্সার মডেল’ হিসেবে পরিচিতি পেয়েছেন। তিনি নিজে সফল হয়েছেন। অনলাইন প্ল্যাটফর্মে অন্যদেরও সফল করার লক্ষ্যে সবসময় 🍷কাজ করে যাচ্ছেন।
সাদ্দাম হোসেনের এ কাজে খুশি পরিবারসহ আত্মীয়স্বজনও। সাদ্দামের স্ত্রী সোনালী হোসেন জ♎ানান, তার স্বামীর আয়ে স্বাচ্ছন্দ্যে জীবনয▨াপন করছেন তারা।
খুলনার কয়রা উপজেলার দুই নম্বর কয়রা গ্রামের এম আব্দুস সাত্তার ও সায়রা বেগম দম্পতির ছোট ছেলে সাদ্দাম হোসেন। এ ছাড়া বড় ভাই ও ছোট দুই বোন রꦜয়েছে। প্রায় তিন বছর আগে নড়াইল উপশহর গারুচিরা বাজারের পাশে দলজিত𒀰পুর মৌজায় পাকা বাড়ি করে সপরিবার বসবাস করছেন সাদ্দাম হোসেন।