ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার রূপপুরে নির্মাণাধীন পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের সঞ্চালন লাইন নির্মাণকাজের ভারতীয় ঠিকাদার চলে গেছেন। এর ফলে পদ্মা ও যমুনা নদীর ওপর নির্মাণাধীন বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইনের কাজ বন্ধ হয়ে গেছে। এতে বিদ্যুৎকেন্দ্রꦇটি নির্দিষ্ট সময়ে চালু নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।
রূপপুর প্রকল💟্পের মূল সূচি অনুযায়ী দুটি ইউনিটের মধ্যে ২০২৩ সালে প্রথম ইউনিট ও ২০২৪ সালে দ্বিতীয় ইউনিটে বিদ্যুৎ উৎপাদনের কথা ছিল। পরে সময় বৃদ্ধি করে চলতি বছর ডিসেম্বর মাসে প্রথম ইউনিটের বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরুর সময় নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু সঞ্চালন লাইন নির্মাণ না হলে বিদ্যুৎকেন্দ্র চালু করা সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন প্রকল্প–সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
এ প্রসঙ্গে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের পরিচালক জাহেদুল হাছান বলেন, ‘সঞ্চালন লাইন ছাড়া ꦛবিদ্যুৎকেন্দ্রটি চালু করা সম্ভব নয়। সঞ্চালন লাইনের কাজ শেষ করাই এখন মূল অগ্রাধিকারে রয়েছে। আমরা সে অনুযায়ী চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।’
পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি বাংলাদেশ (পিজিসিবি) সূত্রে জানা গেছে, রূপপুরে নির্মাণাধীন দেশের প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে জাতীয় গ্রিডে বিদ্যুৎ সঞ্চালনের জন্য পদ্মা ও যমুনা নদীর ওপর দিয়ে ১৬ কিলোমিটার রিভারক্রস▨িং লাইনসহ মোট ৬৬৯ কিলোমিটার সঞ্চালন লাইনের কাজ শুরু হয়েছে। কাজটি করছে ভারতীয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ট্রান্সরেল লাইটিং। চুক্তি অনুযায়ী প্রতিষ্ঠানটি পদ্মা নদীর ওপর দিয়ে ২ কিলোমিটার সিঙ্গেল সার্কিট ৪০০ কেভি বিদ্যুৎ লাইন এবং যমুনা নদীর ওপর দিয়ে ৭ কিলোমিটার ডাবল সার্কিট ৪০০ কেভি ও ৭ কিলোমিটার ২৩০ কেভি সঞ্চালন লাইন নির্মাণ করবে। এতে ব্যয় ধরা হয়েছে ৫২ কোটি ৪০ লাখ ডলার।
রিভারক্রসিং প্রকল্প𝐆ের পরিচালক দেলোয়ার হোসেন জানান, পদ্মায় তীব্র স্রোতের কারণে গত জুলাইয়ের মাঝামাঝি সঞ্চালন লাইনের কাজ বন্ধ রাখা হয়। সে সময় পদ্মার ক্রসিং লাইনের ৩৮ শতাংশ এবং যমুনার ক্রসিং লাইনের ২৫ শতাংশের কম কাজ হয়েছিল। এর মধ্যেই দেশে ছাত্র-জনতার আন্দোলন শুরু হয়। নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত হয়ে বেশির ভাগ বিদেশি বিশেষজ্ঞ ও শ্রমিক দেশ ছেড়ে চলে যান। সরকার পতনের পর এই বিদেশি নাগরিকদের অধিকাংশই এখনো কাজে ফেরেননি। তাই রিভারক্রসিং লাইনের কাজ শুরু করা সম্ভব হচ্ছে না। কবে নাগাদ কাজ শুরু বা শেষ হওবে, সেটাও বলা যাচ্ছে না।