বাংলাদেশের নৌকাস্কুলের উদ্ভাবক মোহাম্মদ রেজোয়ান তাইওয়ানের সর্বোচ্চ সম্মানের অন্যতম ‘গ্লোবাল লাভ অফ লাইভস অ্যাওয়ার্ডস’🤪 পেয়েছেন। যা ‘নোবেল লাইফ প্রাইজ’ নামেও পরিচিত।
১৯৯৮ সাল থেকে তাইওয়ানের ‘চো তা-কুয়ান কালচারাল অ্যান্ড অ্যাডুকেশনাল ফাউন্ডেশন’ মানুষের জন্য নিঃস্বার্থ কাজের স্বীকৃতি ꩵস্বরুপ এই পুরস্কারটি প্রদান করে আসছে।
‘জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলা’র চিন্👍তা 🍎থেকে বাংলাদেশি স্থপতি মোহাম্মদ রেজোয়ান যে নৌকাস্কুল উদ্ভাবন করে দেশে-বিদেশে সাড়া ফেলেছেন, তার জন্য তিনি ২৭তম ‘গ্লোবাল লাভ অফ লাইভস অ্যাওয়ার্ডস’ এর বিজয়ীদের একজন হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন।
পুরস্কারটি মানুষের জন্য নিঃস্বার্থ কাজের স্বীকৃতি স্বরুপ বিশ্বব্যাপী প্রদান করা হয়। দীর্ঘ সময় ধরে উদ্ভাবনী নৌকাস্কুলের মাধ্যমে সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীকে শিক্ষা 🌠সুবিধা প্রদান করার জন্য রেজোয়ানকে ‘মেডেল অফ এচিভমেন্টস’ বিভাগে সম্মানিত করা হয়েছে।
সোমবার♍ (১৪ অক্টোবর) মোহাম্মদ রেজোয়ানের প্রতিষ্ঠিত ব⛄েসরকারি উন্নয়ন সংস্থা সিধুলাই স্বনির্ভর সংস্থা এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানিয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২৭ সেপ্টেম্বর রিপাবলিক অফ চায়না (তাইওয়ান) এর প্রেসিডেন্ট লাই চিং-তে তার কার্যালয়ে রেজোয়ান ও অন্যান্য পুরস্কার বিজয়ীদের সম্মানিত করেন। সেখানে প্রদত্ত ভাষণে প্রেসিডেন্ট লাই চিং-তে বলেন, “স্থপতি হিসেবে রেজোয়ান জলবায়ু পরিবর্তনেಞর সঙ্গে খাপ খাওয়ানোর একটি সমাধান তৈরি করেছেন, যা বিশ্বকে উপকৃত করছে। তার ভাসমান স্কুল শিশুদের জন্য আশা সঞ্চার এবং শিক্ষা লাভের সুযোগ নিশ্চিত করেছে।”
সেখানে প্রতিনিধি দলের প্রধান হিসাবে রেজোয়ানও প্রেসিডেন্ট সহ অন্যান্য সরকারি উচ্চ পদস্থ কর্মক෴র্তা, সিটি কে ফাউন্ডেশনের কর্মী ও স্বেচ্ছাসেবক এবং পুরস্কার বিজয়ীদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য প্রদান করেন।
১৬ সদস্য𒊎ের জুরিবোর্ড সারা বিশ্ব থেকে মনোনীত ৩ হাজার ৪৯৯ জন প্রার্থীর মধ♕্য থেকে রেজোয়ানকে নির্বাচিত করেন। তাকে নৌকাস্কুল উদ্ভাবনের জন্য এবং বিশ্বব্যাপী ভাসমান শিক্ষা আন্দোলন শুরু করার জন্য এই স্বীকৃতি দেওয়া হয়। এই বছর ১৬ জন ব্যক্তিকে পুরস্কার প্রদান করা হয়। প্রতিটি পুরস্কার বিজয়ীকে একটি সার্টিফিকেট ও একটি ট্রফি দেওয়া হয়। এই পুরস্কার সাহসিকতা, দয়া, অধ্যাবসায় এবং অর্জন এই চারটি বিভাগে দেওয়া হয়।
সিধুলাই স্বনির্ভর সংস্থার নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ রেজোয়ান বলেন, “বাংলাদেশের জনগণღের মতো তাইওয়ানের জনগণও রেসিলিয়েন্ট, প্রতিটি প্রাকৃতিক দুর্যোগের পরে তারা তাদের ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পুনর্নির্মাণ করেছে। তাই আমাদের নৌকাস্কুলের জন্য তাইওয়ান থেকে এই স্বীকৃতি পেয়ে আমি সম্মানিত বোধ করছি। তারা আমাদের ফরমোসা (সুন্দর দ্বীপ) এর নদীতে একটি নৌকাস্কুল তৈরি করতে বলেছেন। আমরা বাংলাদেশিরা এভাবে আরও অনেক জীবন বদলে দেওয়া সৃজন-উদ্ভাবনের মাধ্যমে বিশ্ববাসীর নানান সংকটের সমাধান বের করতে সক্ষম হবো, এটাই আমি আশা করি।”
উল্লেখ্য, বাংলাদেশের বন্যাপীড়িত অঞ্চলের দরিদ্র ও সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের শিক্ষার আলোয় নিয়ে আসার স্বপ্ন দেখতেন নাটোরের সন্তান মোহাম্মদ রেজোয়ান। নাটোর, পাবনা ও সিরাজগঞ্জ এই তিন জেলার ১০টি উপজেলায় বিস্তৃত বিশাল জলাভূমি চলনবিল পাড়ের গ্রামের বাড়িতে কেটেছে তার শৈশব-কৈশোর। পানিবেষ্টিত মানুষের সমস্যা-জর্জরিত জীবন খুব কাছে থেকে দেখে কিছু একটা করার তাগিদ অনুভব করেছেন সেই স্কুলজীবন থেকেই। সেটাই পরিপক্ক হয় ১৯৯৮ সালে স🤪িধুলাই স্ব-নির্ভর সংস্থা প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে। আর ২০০২ সালে রেজোয়ান চলনবিলের অথৈ পানিতে ভাসান তাঁর অনবদ্য উদ্ভাবন ‘নৌকাস্কুল’।