• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১, ১৬ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Songbad Prokash

ইনস্টাগ্রাম

টুইটার


লিংকডইন

পিন্টারেস্ট

গুগল নিউজ


মহিষের সঙ্গেই যেন তাদের ঘর-সংসার


সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রকাশিত: মে ১৫, ২০২৩, ০৯:৫২ পিএম
মহিষের সঙ্গেই যেন তাদের ঘর-সংসার

সিরাজগঞ্জের যমুনার ধু-ধু বালু চরের বিশাল এলাকায় গড়ে উঠেছে মহিষের বাথান। চরের তৃণভূমিতে রাখালেরা খোলা আকাশের নিচে মহিষের সবুজ ঘাস খাওয়াচও্ছেন। চরে মহিষ পালন করে মালিকরা হচ্ছেন স্বাবলম্বী।

এদিকে দুর্গম চরে রাখালদের থাকার তেমন ভালো ব্যবস্থা না থাকায় মহিষের ব൲াথানের পাশেই চাষি ও রাখালেরা গড়ে তুলেছে🌸ন কয়েকটি ঝুপড়ি ঘর।

মহিষগুলো লালন-পালন করাই তাদের কাজꩵ। তারা ঝুপড়ি ঘর তুলে সেখানে কোনো রকমে গাদাগাদি করে থাকছেন। মহিষের সঙ্গেই যেন তাদের ঘর-সংসার। মহিষ পালন ঘিরে চলছে তাদের জীবন-জীবিকা।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, যমুনার বিশাল এলাকা নিয়ে অবস্থিত এই বাথানগুলোর এক প্রান্তে নদী রয়েছে, যা খামারিদের জন্য মহিষগুলোর পানি পা🌞ন করা ছাড়াও গোসল করানোর সুবিধা পাচ্ছে। সদর উপজেলার কাওয়াকোলা চর, শিমলার চর, গঠিয়ার চর, কাজিপুরের তেকানী, মুনসুর নগর ও এনায়েতপুরের ঘাটাবাড়ী, উতুলি, বাঐখোলা, মালিপাড়া, নওহাটা, তেগুরী, গোসাইবাড়ী, কু𒐪চেমোড়াসহ বিভিন্ন চরাঞ্চলে মহিষের বাথান নিয়ে অবস্থান করছে রাখাল ও মালিকেরা।

স্থানীয়রা জানান, কাক ডাকা ভোর থেকে শুরু হয় মহিষ ও রাখালদের কর্মযজ্ঞ। মহিষের দুধ দোয়ানো, নৌকায় করে গ্রাহকদের কা🍃ছে দুধ পাঠানো, আর দুপুর পর্যন্ত মহিষগুলোকে মাঠে চড়ানো। এরপর মধ্যাহ্ন ভোজ। বিকেলে আবার মহিষ চড়ানো। রাখালদের সঙ্গে মহাজনের নিয়োগকৃত ঘোষালরাও থাকেন। রোদ-বৃষ্টি উপেক্ষা করেই চলছে এসব। এ যেন প্রাকৃতিক শি𒀰ল্পপ্রতিষ্ঠান।

কারখানায় যেমন শ্রমিক-কর্মচারীর শ্রমের বিনিময়ে পণ্য উৎপাদিত হচ্ছে,🍒 ঠিক তেমনই চাষি, রাখালের শ্রমে মহিষ থেকে উৎপাদিত হচ্ছে দুধ। জীবন-জী💃বিকা, সুখ-দুঃখ, হাসি-কান্না ও চরাঞ্চলে থাকার নানা অভিজ্ঞতার কথা হয় রাখাল ও মহিষের মালিকদের সঙ্গে।

মহিষের মালিক হালিম ঘোষ বলেন, “জামালপুর ও বগুড়ার ১০/১২ জন চাষির মহিষ একত্রিত🅷 করে বাথান করা হয়েছে। আমাদের এলাকায় ঘাস কম থাকায় এখানে এসেছি। এই বাথানে আমার ৫০টি মহিষ রয়েছে। শুকনো মৌসুমের ৮/৯ মাস যমুনার চরে মহিষ পালন করা হয়। বাকি তিন থেকে চার মাস বাড়িতে মহিষ পালন করা হয়। বর্ষꦚা মৌসুমে যার যার এলাকায় চলে যাব।”

গটিয়ার চরের আব্দুর রাজ্জাক বলেন, “বাথানে আমার ১৮টি মহিষ রয়েছে। মহিষ চাষিরা একত্রিত হয়ে চরাঞ্চলের জমির পরিত্যক্ত ফসল প্রতি বিঘা ৩ থেকে ৪ হাজার টাকায় কিনে মহিষগুলোকে খেতে দেই। এখানকার লোকজন অনেক💃 ভালো। আমাদের খুবই সাহায্য সহযোগিতা করছে। প্রতি বছর এই সময়ে আমরা এখানে মহিষ নিয়ে আসি। ভবিষ্যতেও আসব।”

বাথানের রাখাল আমজাদ হোসেন বলেন, “এখানে নদী༺ কাছে হওয়ায় এবং সবুজ ঘাস বেশি হওয়ার কারণে খামার পরিচালনা করতে খুব সহজলভ্য হচ্ছে।”

আমজাদ আরও বলেন, “একটি মহিষ সকাল ও দুপুরে ৭ থেকে ১০ কেজি পর্যন্ত দুধ দেয়। প্রতি কেজি দুধ ফ্যাট অনুযায়ী ৫৫ থেকে ৬০ টাকায় বিক্র🌟ি করা হয়। বিভিন্ন স্থানের ঘোষ ও মিল্কভিটার নৌকায় এসে এসব দুধ নিয়ে যায়।”

দুগ্ধ খামারিরা জানান, এখানে কর্মরত রাখালদের ১০-১২ হাজার টাকা মাসিক বেতন দিতে হয়। এছাড়া মহিষের খাদ্যের জন্য পরিত্যক্ত ফসল কেনা ও রাখালদের খ෴াবার বাবদ মাসে আরও ৯-১০ হাজার টাকা খরচ হয়। প্রতিটি মহিষ থেকে মাসে ২০০ থেকে ২২০ কেজি দুধ আসে। যার মূল্য প্রায় ১১ থেকে ১২ হাজার টাকা। ৯-১০টি মহিষ থেকে খরচ বাদে মাসিক আয় আসে ৫৫ থেকে ৬০ হাজার টাকা। বছরে প্রতিটি মহিষ একটি করে বাচ্চা দেয়। মহিষ পালন করেই তারা সাবলম্বী হচ্ছেন। এ বি🗹ষয়ে সরকারের পৃষ্ঠপোষকতা পেলে আরও এগিয়ে যেতে পারবেন।

সিরাজগঞ্জ জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা গৌরাঙ্গ কুমার তালুকদার জানꦉান, প্রতি বছরই যমুনার চরে জেগে ওঠা চরাঞ্চলে সবুজ ঘাস খাওয়ানোর জন্য পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন জেলা থেকে মহিষ নিয়ে আসে। চৌহালী থেকে কাজিপুরের দুর্গম চরের তৃণভূমিতে শত শত মহিষ ঘাস খাচ্ছে। এই চরাঞ্চল এলাকায় প্রায় ৪০০টি মহিষ লালন-পালন হচ্ছে। বর্ষ🔜া মৌসুমে চরগুলোতে পানি ওঠার আগেই তারা আবার নিজ নিজ এলাকায় ফিরে যাবেন বলে তিনি জানান।

Link copied!