• ঢাকা
  • শুক্রবার, ০৬ ডিসেম্বর, ২০২৪, ২০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৪ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Songbad Prokash

ইনস্টাগ্রাম

টুইটার


লিংকডইন

পিন্টারেস্ট

গুগল নিউজ


বনের অভাবে বিলুপ্ত হচ্ছে ঢাকার বন্যপ্রাণী


খাদিজা নিপা
প্রকাশিত: আগস্ট ২৪, ২০২৩, ০৬:১৫ পিএম
বনের অভাবে বিলুপ্ত হচ্ছে ঢাকার বন্যপ্রাণী
গেণ্ডারিয়ার সাধনা ঔষধালয় প্রাঙ্গনে ছানা বুকে কয়েকটি মা বানর

বিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে বদলে গেছে ঢাকার প্রাণ-প্রণালি। বন, নদী-নালাসহ সবকিছুতেই মানুষের একচ্ছ𒆙ত্র আধিপত্য। মানববসতির এই প্রতিযোগিতার ভীড়ে ধংস হয়েছে🐎 বন, বিলুপ্ত হচ্ছে বনের প্রাণিকুল।

মানবচাহিদার এই দোর্দণ্ড প্রতা🔯পে খাদ্য আর আবাস সংকটে নির্মম কায়দায় বিলুপ্ত হচ্ছে ঢাকার বন্যপ্রাণীরাও। খুব কাছের উদাহরণ, পুরান ঢাকার গেণ্ডারিয়া। এখানে একসময় সহস্রাধিক বানর ছিল। কিছু বন, কিছু বড় গাছ ছিল তাদের আবাস স্থল। বর্তমানে এদের সংখ্যা শ’খানেক। খাবার সংকটে অভুক্ত থেকে প্রাণ হারাতে হয়েছে অনেক বানরকে।

স্থানীয়রা বলছেন, খাদ্য আর আবাস স্থলের সংকটের কারণেই ধীরে ধীরে এসব বানর মারা গেছে বা বিলুপ্ত হয়েছে। বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে উপযুক্ত ব্যবস্থা না 😼থাকাই এর মূল কারণ, বলছেন স্থানীয়রা। এমন করুণ পরিস্থিতিতে রয়েছে রাজধানীর বনানী, ক্যান্টনমেন্ট, মিরপুরসহ আরও কয়েকটি এলাকার বানরসহ অন্য বন্যপ্রাণীরা।

ঢাকা বিভাগের বন ও বন্যপ্রাণী সংরক্ষণের দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তা ইমরান আহাম্মেদ বলেন, “আসলে বানর খাদ্য সংকটে মারা যাচ্ছে না। এরা মানুষের কাছাকাছি আসে। মানুষ খাবার দেয়। যেসব এলাকায় বানর বেশি ওইসব এলাকায় বানরের খাদ্যের জন্য কিছু বরাদ্দ আসে। যেমন-ক্যান্টনমেন্ট, রাষ্ট্রপতির ভবন, বনানী ইত্যাদি।”
এই কর্মকর্তা বলেন, “ব💞ন ধংস করে মানুষ আবাসন গড়ে তুলছে, তাই বন্যপ্রাণির আবাস স্থল ধংস হয়ে গেছে, বন্যপ্রাণিও ধংস হয়েছে।”

এই কর্মকর্তা আশার খবর শুনিয়ে বলেন, “রাজধানী ও এর আশপাশের যেসব এলাকায় বন আছে, সেসব বℱন সংরক্ষণে জোর দেওয়া হচ্ছে। পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে- যে বনের ফল খেয়ে বন্যপ্রাণিরা বাঁচতে পারে, স🐎েরকম বনায়ন সৃষ্টি করা ও পূর্বের বন সংরক্ষণ করা। যেমন-পূর্বাচল, গাজীপুর ও মিরপুরের কয়েকটি অঞ্চলে এমন বনাঞ্চল সংরক্ষণের প্রক্রিয়া চলছে।

গেণ্ডারিয়া এলাকার বানর সম্পর্কে জানা যায়, উনিশ শতকের শুরুর দিকে স্তন্যপায়ী এই প্রাণিগুলোর অবাধ বিচরণ শুরু হয় সেখানে। ১৯১৪ সালে ওই এলাকার দীননাথ সড়কের ‘সাধনা ঔষধালয়’-কতৃপক্ষ একট𒀰ি কক্ষ বানরদের জন্য উম্মুক্ত করে দেন।

প্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষ যোগেশ চন্দ্র ঘোষ মহতী এই উদ্যোগ নিয়ে বানরগুলোর আশ্রয়ের ব্যবস্থা করেছিলেন। তখন থেকেই সেখানকার বানরগুলোকে নিয়ꦰমিত খাবার দেওয়ার রেওয়াজ চালু করে সাধনা ঔষধালয় কতৃপক্ষ। শতাব্দী পেরিয়ে সেই ঐতিহ্য এখনও ধরে রেখেছে সাধনা ঔষধালয়। তবে তা এখন সীমিত হয়ে গেছে। সময়ের বিবর্তনে জৌলুস হারিয়েছে সাধনা ঔষধালয়। সেই সঙ্গে বানরদের অবস্থাও এখন আর ভালো নেই। নানারকম প্রতিকূলতা আর খাদ্য সংকটে বিলুপ্তির পথে পুরান ঢাকার এই বানরগুলো।

স্থানীয়রা জানায়, গরম সহ্য করতে পারে না বলে সকাল থেকে দꦑুপুর পর্যন্ত নিজেদের গুট﷽িয়ে রেখে  বিকেল আর গোধূলিতে কাঁচামালের গুদাম থেকে সাধনার আঙিনায় নেমে আসে বানরগুলো।

এ সময় দর্শনার্থীর♛া কলা, রুটিসহꦕ বিভিন্ন রকমের খাবার দেন। বানরকে খাইয়ে আনন্দিত হয় অনেকে এবং সে দৃশ্য ক্যামেরাবন্দি করেন কেউ কেউ।

সাধনা ঔষধালয়ের এক কর্মী জানান, সাধনায় হাজারের উপরে থাকা বানরে𒁏র সংখ্যা এখন ১০০ থেকে ১৫০। প্রতিদিন বানরের খাবার হিসেবে ১০ কেজি ছোলা দেয় সাধনা ঔষধালয় কর্তৃপক্ষ।

এলাকাবাস🔥ীর সঙ্গে কথা বললে জানা যায়, খাবার না পেয়েই বানরগুলো সাধনার গণ্ডি পেরিয়ে লোকালয়ে যায়। বাসা-বাড়ি থেকে খাবার সংগ্রহের চেষ্টা করে।

গেণ্ডারিয়ার স্থানীয় বাসিন্দা ইদ্রিস আলী বলেন, “বানর সাধারণত কোনো ক্ষতি করে না। বাইরের লোকজন বানর দেখতে আসে। তারা খাবার দেন। ইদানিং পরিমাণমতো খাবার না পেয়ে দোক🐻ানঘর, মানুষের বাসা বাড়িতে যাওয়া শুরু করেছে।”

তিনি আরও বলেন, “যতটুকু খাবার দরকার, তা ওরা প🌼াচ্ছে না। যত্নের অভাবে বিভিন্ন দিকে চলে যাচ্ছে, মারাও  যাচ্ছে।”

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরেক বন কর্মকর্তা বলেন, “আমরা গত অর্থবছরে খাবার দিয়েছি। কিন্তু এই অর্থবছরে খাবারের টাকা এখনও পাইনি। বাজেট না আসায় টেন্ডার করে খাবার দিত𓂃ে পারিনি।”

কী পরিমানে খাবার দিয়েছিলেন- জানতে চাইলে এই বন কর্মকর্✱তা বলেন, “পরিমাণটা বলতে পারছি না। কারণ, ক্যান্টনমꦍেন্ট, বিমানবন্দরসহ আরও বেশ কিছু জায়গার বানর ও হরিণের জন্য একসঙ্গে বিল পাশ হয়। সেটা আমরা বণ্টন করি।”

ক্যান্টনমেন্টের বিমান ঘাঁটি এলাকায় কর্মরত করপোরাল ইমন (ছদ্মনাম) বল👍েন, “বানরের অত্যাচার এখানে প্রতিদিনের ঘটনা। ব্যারাকে খাবার, জিনিসপত্র কোনোকিছুই ঠিক জায়গায় রাখা যায় না। বানরগুলো খাবার চুরি করে নিয়ে যায়। নিয়মিত বানরের এই অত্যাচার সইতে হয়। কিছু করার থাকে না। প্রতিরোধ বা তাড়াতে গেলে বানরেরা সংঘবদ্ধ হয়ে হামলা করতে আসে, ভয়൩ দেখায়। মাঝেমধ্যে আক্রমণও করে।”

Link copied!