সাব🌟েক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশ ছাড়ার পরপরই বিকেলে হাজার হাজার মানুষ প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন গণভবনে𒁏 ঢুকে পড়েন তখন প্রাণরক্ষার জন্য পালাতে মাত্র ‘৫ মিনিট’ সময় ছিল বিশেষ নিরাপত্তা বাহিনী (এসএসএফ) সদস্যদের।
গণভবনের বিভিন্ন ধরনের ট্যা🦹ক্টিক্যাল গিয়ার, বা অস্ত্র, গোলাবারুদ, সাজসরঞ্জাম, বেতার যোগাযোগ ও অপারেশনাল সরঞ্জামাদির মজুদ ছিল এসএসএফের। কিন্তু, হাতে সময় কম থাকায়, এসব ফেলে শুধু নিজেদের সঙ্গে থাকা ছোট আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে বিভিন্নভাবে গণভবন থেকে সংসদ ভবনে গিয়ে প্রাণরক্ষার চেষ্টা করেন তারা।
জনতা যখন সংসদ ভবনেও ঢুকে পড়ে, তখন এসএসএফ সদস্যরা দ্রুত নিজেদের অস্ত্র ও পোশাক খুলে সংসদ ভবনের ভল্টে রেখে সাধারণ পোশাকে আন্দোলনকারী𝓀দের সঙ্গে মিশে প্রাণরক্ষা করেন। পরবর্তীতে গণভবন ও সংসদ ভবনে থাকা ভল্টগুলো আর পাওয়া যায়নি, যা আন্দোলনকারী বেশে দুষ্কৃতিকারীরꦇা নিয়ে গেছে বলে মনে করছে এসএসএফ।
তাদের ক্ষয়ক্ষতি📖 নিরূপণের একটি প্রতিবেদন অনুসারে, বিভিন্ন ধরনের অপারেশনাল সরঞ্জাম যেমন অত্যাধুনিক অ্যাসল্ট রাইফেল, স্নাইপার রাইফেল, ফ্ল্যাশব্যাং গ্রেনেড, অ্যান্টি-ড্রোন সিস্টেম, বেতার যোগাযোগের ডিভাইস ও বিপুল পরিমাণ গোলাবারুদ, যার মূল্য পাঁচ কোটি টাকারও বেশি, সেদিন গণভবন ও সংসদ থেকে লুট হয়েছে এবং নষ্ট করা হয়েছে।
ছাত্রজনতার অভ্যুত্থানে এসএসএফ🍸 এর অস্ত্র, গোলাবারুদ, অপারেশনরাল সরঞ্জামাদি ও 🌞বিবিধ দ্রবাদির ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ করতে সংস্থাটি তিনটি তদন্ত পর্ষদ গঠন করে।
এসব পর্ষদ ইতিমধ্যে গণভবন ও সংসদ ভবন সরেজমিন পরিদর্শন করে বিভিন্ন অস্ত্র, সরঞ্জাম ও দ্রবাদি ইস্যু সংখꦦ্যার সঙ্গে বর্তমান সংখ্যা যাচাই করেছে। অনুসন্ধানের উঠে আসা তথ্যের ভিত্তিতে তিনটি প🧸্রতিবেদন প্রস্তুত করেছে তারা, যা এসএসএফ এর প্রধান কার্যালয়, অর্থ মন্ত্রণালয়সহ সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরে পাঠানো হয়েছে।
ক্ষয়ক্ষতির আর্থিক হিসাব করে সংস্থাটি বলেছে, ৫ আগস্টের ঘটনায় এসএসএফ এর বিভিন্ন অস্ত্র ও দ্রব্য লুট ও ক্ষඣয়ক্ষতির আর্থিক পরিমাণ ৫ কোটি ২৮ লাখ টাকা। এর মধ্যে অস্ত্র ও ম্যাগাজিনের ক্ষতি ১১ লাখ ৬২ হাজার টাকা; গোলাবারুদ ও গ্রেনেড খোয়া যাওয়ায় ক্ষতি ১১ লাখ ৪৪ হাজার টাকা; যোগাযোগ ও অপারেশনাল সরঞ্জামাদি বাবদ ক্ষতি প্রায় ২ কোটি ৬৩ লাখ টাকা; আইটি ও গোয়েন্দা সরঞ্জামাদি বাবদ ক্ষতি প্রায় ১ কোটি ৫৫ লাখ টাকা, যানবাহনে ক🉐্ষতি প্রায় ১৪ লাখ টাকা এবং অন্যান্য দ্রব্যাদিতে ক্ষতি প্রায় ৭৪ লাখ টাকা।
প্রতিবেদনগুলোতে যা উঠে এসেছে
রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী বা প্রধান উপদেষ্টা ও সরকার ঘোষিত অন্যান্য অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি🌟দের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এসএসএফ অত্যাধুনিক অস্ত্র ও গোলাবারুদ, অত্যাধুনিক যানবাহন, অপারেশনাল ও যোগাযোগ সরঞ্জামাদি ব্যবহার করে থাকে। এগুলো মূলত ভিআইপিদের বাসভবন, কার্যালয় ও অন্যান্য স্থানে সুরক্ষিত অবস্থায় রাখা হয়।
এসএসএফ এর প্রতিবেদন যা দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড দেখেছে, সেখানে বলা হয়েছে, গণভবনে এসএসএফ এর স্থাপিত অপারেশন রুমে অস্ত্র ও গোলাবারুদ রাখার জন্য দু`টি অত্যাধুনিক ভল্ট স্থায়ীভাবে স্থাপন করা ছিল, যার প্রতিটির ওজন ১০০ কেজি। একটি ভল্টে ২টি এসএমজি টি-৫৬ রাইফেল ছিল, এবং অপর ভল্টে ৯𝔍 হাজার ৪৯৮ রাউন্ড তাজা গুলি ছিল। লুটপাট চলাকালীন আন্দোলনকারী বেশে দৃর্বৃত্তকারীরা ওই ভল্ট দু`টি নিয়ে চলে যায়।
৫ আগস্টের ঘটনাবলীর বিবরণও দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতাসহ আন্দোলনকারীরা গণভবনের গেট ভেঙ্গে ও সীমানা প্রাচীর টপকে ভেতরে প্রবেশ করতে থাকলে দা🅘য়িত্বরত ৬ জন এসএসএফ সদস্য গণভবন থেকে বের হওয়ার জন্য মাত্র ৫ মিনিট সময় পান। এই অল🌳্প সময়ের কারণে তারা নিজস্ব অস্ত্র, গোলাবারুদ, বেতার সরঞ্জামাদি ও অপারেশন সরঞ্জামাদি রেখেই পাশে সংসদ ভবনে যান।
`কিন্তু অভ্যুত্থানকারী জনতা সংসদ ভবনে প্রবেশ করলে এসএসএফ এজেন্টরা সংসদ ভবনে এসএসএফ এর অপারেশন রুমে অবস্থিত ভল্টে নিজস্ব অস্ত্র ৬টি পিস্তল ও ২০০ রাউন্ড গুলি সুরক্ষিত করে এবং পোশাক পরিবর্তন করে জনতার সঙ্গে মিশে যাওয়ায় প্রাণনাশের হাত থেকে রক্ষা পায়` -🐓 আরও বলা হয়েছে প্রতিবেদনে।
`পরবর্তীতে সংসদ ভবন পরিদর্শনকালে উক্ত ভল𒁃্টটি পাওয়া যায়নি বিধায় উক্ত অস্ত্র ও গোলাবারুদ আন্দোলনকারী বেশে দৃষ্কৃতিকারীরা নিয়ে গিছে বলে প্রতীয়মান হয়।`
এছাড়া, গণভবনের ছাদে দু`টি অ্যান্টি ড্রোন গান এবং একটি অ্যান্টি ড্রোন সিস্টেম মোতায়েꦏন করা ছিল। অভ্যুত্থানকারীরা গণভবনে ঢুকে পড়লে সময় স্বল্পতার কারণে এসএসএফ স🍨দস্যরা এগুলো খুলে সরাতে পারেননি, যা দুষ্কৃতিকারীরা নিয়ে গেছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
প্রতিবেদনগুলোতে বলা হয়েছে, সকল ভিআইপি বাসভবন ও সংসদ ভবনে নিরাপত্তা কার্যক্রম পরিচালনার জন্য পিজিআর, এসবি, পুলিশ এর সঙ্গে যোগাযোগের জন্য ওয়ারলেস সেট থাকে। এসব ওয়ারলেস সেট বিভিন্ন কক্ষে সংযোজিত ছিল। সময় স্বল্পতার কারণে এসএসএফ সদস্যরা এসব বেতার সরঞ্জামাদি সংগ্রহ করে নিয়ে যেতে পারেনি। বেশকি♐ছু বেতার 💫যন্ত্র দুষ্কৃতিকারীরা নিয়ে গেছে।
যেসব সুপারিশ করেছে এসএসএফ
এসব অস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার করতে সংশ♛্লিষ্ট আইন প্রয়োগকারী সংস্🦋থার মাধ্যমে জোর তৎপরতা চালানোর সুপারিশ করেছে সংস্থাটি। ভবিষ্যতে এ ধরণের পরিস্থিতি এড়াতে এসএসএফ এর অপারেশনাল রুম আরও সুরক্ষিত রাখতে একটি আলাদা অফিসার্স পর্ষদ গঠন করতে সুপারিশ করা হয়েছে।
এছাড়া, এসএসএফ এর সকল বেতꦫার যন্ত্রের প্রাইভেসি কোড পরিবর্তন করে নতুন নেটওয়ার্কে যোগাযোগ করার জন্য সুপারিশ করা হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত অপারেশনাল সরঞ্জামাদি ও যানবাহন জরুরি ভিত্তিতে মেরামতের মাধ্যমে সচল করার সুপারিশও করেছে এসএসএফ।
অপারেশনাল কার্যক্রম যুগোপযোগী এবং বেগবান করার জন্য প্রꦬয়োজনীয় অস্ত্র, গোলাবারুদꩵ ও অন্যান্য সরঞ্জাম চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরে কেনার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করা, এবং এজন্য অতিরিক্ত বাজেট প্রয়োজন হলে– তার ব্যবস্থা করার সুপারিশ করেছে এসএসএফ।
সূত্র : টিবিএস