সাংবাদিকদের কিছু প্রশ্নে অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী হতাশা প্রকাশ করে পড়ালেখা করার পরামর্শ দিয়েছেন। অর্থমন্ত্রী সাংবাদিকদের করা বেশ কিছু প্রশ্নকে ‘অতি সরল’,🐓 ‘ইমম্যাচিউরড’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। শুক্রবার (৭ জুন) বাজেটোত্তর সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এমন মন্তব্য করেন। একটি প্রশ্নকে মন্ত্রী ‘জবাব দেওয়ার অযোগ্য’ বলে চিহ্নিত করেছেন।
সংবাদ সম্মেলনে অর্থমন্ত্রীর আনুষ্ঠানিক বক্তব্য শেষে আসে প্রশ্নোত্তর পর্ব। সেই পর্বের শুরুর দিকে বেসরকারি একটি টেলিভিশনের প🅘্রতিবেদক বড় ভূমিকা টেনে বলেন, গত তিন বছরে দেশের মুদ্রার মানের পতন হয়েছে ৩৭ শতাংশ। সরকারের গবেষণা প্রতিষ্ঠান বিআইডিএসের হিসাবে খাদ্যে মূল্যস্ফীতি ১৫ শতাংশ। এভাবে কোটি কোটি মানুষ ‘দরিদ্র হয়েছে’, তারা ছোট হয়েছ൲ে।
এই ভূমি༒কার পর প্রতিবেদকের প্রশ্ন ছিল, বাজেটের আকার ছোট হওয়ায়, মাꦍনুষ ‘ছোট হওয়ায়’ প্রত্যেক মানুষের মধ্যে এর প্রভাব পড়ছে কি না। সেই ছোটকে কবে বড় করতে পারবেন অর্থমন্ত্রী।
প্রতিবেদনের এমন প্রশ্নে ব♔িরক্তি প্রকাশ করে অর্থমন্ত্রী বলেন, “আমি একটু ম্যাচিউরড প্রশ্ন আশা করেছিলাম... টেলিভিশনের কাছ থেকে। আমি খুবই নিরাশ হয়েছি।” মাঝখানে সেই প্রতিবেদক কিছু বলতে গেলে অর্থমন্ত্রী বলেন, “আဣরে বাবা আমি আপনার উত্তর দিচ্ছি। আমাকে আটকাচ্ছেন কেন, আপনাকে তো আমি আটকাইনি। আপনাকে তো ইচ্ছামত বলতে দিয়েছি। এখন আমারটা তো শুনতে হবে আপনাকে।”
এরপর অর্থমন্ত্রী সেই প্রতিবেদককে বলেন, “আপনি অতি সরলীকরণ জিনিসটা খুবই রপ্ত করে ফেলেছেন। ওএগুলো তো একেবারে ওভার সিম্প্লিফিকেশন। এইভাবে ইকোনমি চলে নাকি? হ্যাঁ আমরা সব ছোট হয়ে গেলাম, আমাদের সব শেষ। কোথায়? আরও একটু পড়েটড়ে আসবেন। এইভাবে অতি সরলীকরণ করবেন না একটু ম্যাচিউরিটি নিয়ে আসেন, প্রশ্ন যখন করেন।”
প্রশ্নোত্তর পর্বের এমন পরিস্থিতির মধ্যেই আরেকটি বেসরকারি টেলিভিশনের এক প্রতিবেদক মন্ত্রীকে প্রশ্ন ছুঁড়ে দেন, “বাজেট 🐬বক্তব্যে সুশাসন প্রতিষ্ঠায় ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে দৃঢ় কোনো বার্তা দেখিনি। আর্থিক খাতের দুর্নীতির🍨 সঙ্গে যারা জড়িত তাদের বিষয়ে আজকে আপনি কী বলবেন? কেন বার্তা দিচ্ছেন না, আপনার ওপর কি কোনো চাপ আছে?”
প্রতিবেদকের এমন প্রশ্নে কিছুটা বিরক্তি প্রকাশ করেন অর্থমন্ত্রী। ꩲবলেন, “আমরা তো বলছি খোলাখুলি। আমরা তো কোনো রাখঢাক করিনি। তো আপনি খালি ঘুরে ফিরে ওই একই কথায় যাচ্ছেন কেন? এটা তো বুঝতে পারলাম না। এটা কী ধরনের প্রশ্ন?”
এরপর সেই প্রতিবেদককে পরামর্শ দিয়ে মন্ত্রী বলেন, “কীভাবে প্রশ্ন করে, এগুলো তো শিখতে হবে আপনাদের। অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে বলতে হচ্ছে। কারণ এটা কোনো জার্নালিজম না। খালি এক কথায় ঘুরে ফিরে বলেন এবং অতি সরলীকরণ। এভাবে চলে নাকি? সমাজ, সংসার এভাবে চলে? কোথাও চলে না? এগুলো (বাজেট বক্তব্যের বই হাত💛ে নিয়ে) দেখেন, দেখে এক♔টু শেখেন। তাহলে আমাদেরও কাজ করতে সুবিধা হবে।”
পরে আরেকটি বেসরকারি টেলিভিশনের প্রতিবেদক মন্ত্রীকে সজ্জন ব্যক্তি হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, “আপনি সজ্জন ব্যক্তি, তাহলে বাজেটে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির বরাদ্দ বাড়াতে কেন গোঁজামিল দিলেন? আরেকটি বিষয় হলো আপনি বলছেন- আমাদের রিজার্ভ এই অর্থবছর শেষে প্রায় ৩২ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়াবে, যেটা এখন প্রায় ২০ বিলিয়ন ডলারের কাছাকাছি। আপনি রিজার্ভ বাড়াবেন কীভাবে? আপনি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নকে টাকা না ছাপিয়ে ডলার ছাপানোর দায়িত্ব দিয়েছেন কেন?” এমন প্রশ্নেও বিরক্ত হন অর্থমন্ত্রী। জবাবে বলেন, “এটা একেবারেꦗই ননসিরিয়াস প্রশ্ন। ঠিক আছে। এ প্রশ্ন উত্তর দেওয়ার যোগ্য নয়।”
আরেকটি টেলিভিশনের প্রতিবেদক প্রশ্ন করেন, “প্রস্তাবিত বাজেটে এমপিদের গাড়ি আমদানিতে শুল্কমুক্ত সুবিধা বাতিল করা হয়েছে। কিন্তু আইনে এখনো আছে। আইন কবে, কখন সংশোধন করবেন?” অর্থমন্ত্রী 🎃প্রথমে বলেন, “কবে, কখন করবেন এটা কেউ বলে নাকি? আপনি দাঁড়িয়ে প্রশ্ন করলেন, ‘কবে করবেন এটা?’, এ রকম হয় না। আইনটা সংশোধন করতে হবে। হ্যাঁ বলেছি তো করার জন্য।”
প্রশ্নোত্তর পর্বের এই পর্যায়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, “একট♋া জিনিস বলতেই হবে লাস্টের প্রশ্নটা ভালো প্রশ্ন ছিল। সিরিয়াস প্রশ্ন। কিন্তু আমি দেখলাম বেশিরভাগই হলো খুবই ইমম্যাচিউরড। পড়েন নাই, এই যে বইটা (বাজেট বক্তব্যের বই হাতে ধরে) দিয়েছি আমরা, বইটা পড়েন। আমি খুবই দুঃখিত হয়েছি। আপনাদের লেভেল অব ম্যাচিউরিটি দেখে খুবই নিরাশ।”
প্রশ্নোত্তর পর্বের পর সংবাদ সম্মেলনের💖 শেষে অর্থমন্ত্রী বাজেট নিয়ে আগ্রহ দেখানোয় 🎃সাংবাদিকদের ধন্যবাদ দেন। মন্ত্রী বলেন, “তো যাক, দুই-একজন ভালো প্রশ্ন করেছেন। তবু আমি সবাইকে ধন্যবাদ দেব।” এরপর সাংবাদিকদের পরামর্শ দিয়ে বলেন, “আপনারা অনেক ইন্টারেস্ট শো করেছেন, কিন্তু ইন্টারেস্টটা ম্যাচিউরড হওয়া দরকার। লেখাপড়াটা একটু করতে হবে। এটা দয়া করে করবেন।” সূত্র: বিডিনিউজ।