মহান মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বিভিন্ন সময়ে শিখাস্মারকগুলো স্থ♔াপন করা হয়েছে।
শিখা চিরন্তন
তৎকালীন ঐতিহাসিক রেসকোর্স ময়দানের (বর্তমানে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) উত্তর পাশেই রয়েছে মহান মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ের স্মৃতি। সে স্মৃতিকেই বুকে আগলে ধরে জ্বলছে শিখা চিরন্তন। স্বাধীনতাসংগ্রামের জ্বলন্ত এ স্মারক বাঙালির শৌর্য-বীর্য আর অহংকারের প্রতীক।
১৯৭১ সালের ৭ মার্চ এ স্থানে দাঁড়িয়েই বঙ্গবন্ধু তাঁর ঐতিহাসিক ভাষণ দেন এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। পাকিস্তান সেনাবাহিনীর পূর্বাঞ্চলীয় প্রধান এ কে নিয়াজি ৯৩ হাজার সৈন্য নিয়ে ঢাকার এ উদ্যানেই মুক্তিবাহিনী ও ভারতীয় সেনাবাহিনীর যৌথ কমান্ডের কাছে নিঃশর্ত আত্মসমর্পণ করেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর এটাই সবচেয়ে বড় আত্মসমর্পণের ঘটনা। সে স্মৃতিকে জ্বালিয়ে রাখতেই দিনরাত জ্বলছে এ অগ্নিশিখা।
সরেজমিনে দেখা যায়, শিখা চিরন্তনের আশপাশে আছে টবে লাগানো কিছু গাছ। মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি নিয়ে এর আশপাশেই ছড়িয়ে আছে স্বাধীনতাস্তম্ভ🅰, গ্লাস টাওয়ার। যার উজ্জ্বল আলোকসজ্জা সন্ধ্যায় এর সৌন্দর্য বাড়িয়ে দেয়। এ ছাড়া ভূগর্ভস্থ জাদুঘর ও উন্মুক্ত মঞ্চ স্থান পেয়েছে এর পাশেই।
শিখা অনির্বাণ
মুক্তিযুদ্ধে আত্মোৎসর্গকারী সৈনিকদের স্মৃতিকে জাতির জীবনে চির উজ্জ্বল করে রাখার জন্য এই স্মৃতিস্তম্ভে সার্বক্ষণিকভাবে শিখা প্রজ্বালন করে রাখা হয়। ঢাকা সেনানিবাস এলাকায় এটি অবস্থিত। প্রায় ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে পাকিস্তানি সেনাদের বিরুদ্ধে সব আর্মড ফোর্স মিলিয়ে সম্মিলিতভাবে প্রতিরোধ গড়ে তোলার সময়কে মনে রাখতেও এই স্থাপনা করা হয়। সেই সময়টিকে ধরা হয় ২১ নভেম্বর, যেটাকে ‘বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনী দিবস’ হিসেবেও পালন করা হয়। এই দিনটিতে সম্পূর্ণ সামরিক ফোর্স, মানে সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনী মিলে ফুল ফর্ম আর্মড ফোর্সেস গড়ে ওঠে। পাকিস্তান বাহিনী ছেড়ে আসা কিছু নৌ সেনা, বিমান 𒁏সেনা ♏ও আগে থেকে যুদ্ধের ময়দানে থাকা সেনাবাহিনীর সদস্যদের নিয়ে পূর্ণাঙ্গ সামরিক বাহিনী গড়ে তোলার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনী একযোগে পাকিস্তানি সেনাদের বিরুদ্ধে সমরে অংশগ্রহণ করে, সেই দিনটি, মানে ২১ নভেম্বর, ১৯৭১-কে স্মরণে রাখতেও এই ‘শিখা অনির্বাণ’-এর স্থাপন।
শিখা চির-অম্লান
মুক্তিযুদ্ধের চেতনার আলো প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে ছড়িয়ে দিতে এ মশাল ২১ বছর ধরে জ্বলছে। আগারগাঁওয়ে নবনির্মিত মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে শোভা পাচ্ছে এটি। প্রজ্জ্বলিত চেতনার🍎 মশাল ‘শিখা চির-অম্লান আনুষ্ঠানিকতার মধ্য দিয়ে স্থানান্তর করা হয় আগারগাঁওয়ে। ১৯৯৬ সালেꦇর ২২ মার্চ রাজধানীর সেগুনবাগিচার এই মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে মহান মুক্তিযুদ্ধের বীর শহীদদের স্মরণে প্রজ্বালন করা হয় শিখা চির অম্লান।