মানুষ মানু💟ষের জন্য। আরও একবার এ কথারই জয় হলো। বন্যায় ভাসছে ফেনী, নোয়াখালী, কুমিল্লাসহ কয়েকটি জেলা। চরম মানবিক বিপর্যয়ে বন্যার্ত মানুষেরা। দেখা দিয়েছে খাবার ও পানির সংকট। এ অবস্থায় সাহায্যের হাত বাড়িয়ে🌸 দিয়েছেন অনেকেই। সংঘবদ্ধভাবে এগিয়ে এসেছেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরাও।
কুমিল্লা
কুমিল্লায় শ্রী শ্রী জন্মাষ্টমী উৎসবের ব্যয়ের টাকা বন্যার্তদের মাঝে বিতরণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে উৎসব উদযাপন কমিটি। বন্যা পরিস্থিতি অবনতির কারণে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তারা। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কমিটির আহ্বায়ক🎐 প্রদীপ🅰 সাহা।
শুক্রবার (২৩ আগস্ট) এক বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানিয়েছে কুমিল্ল🌳ায় শ্রী শ্রী জন𒆙্মাষ্টমী উৎসব উদযাপন কমিটি।
কমিটির আহ্বায়ক প্রদীপ সাহা ও সদস্যসচিব শ্যামল কৃষ্ণ সাহা স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপꩲ্তিতে বলা হয়, দেশের সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির কারণে এবং বর্তমান জনদুর্ভেꦺাগের প্রতি শোকস্তব্ধ হয়ে, কুমিল্লায় শ্রী শ্রী জন্মাষ্টমী উৎসব উদযাপন কমিটি সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে, এবারের জন্মাষ্টমীতে কোনও প্রকার র্যালি করা হবে না। শুধু পূজার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে এবারের জন্মাষ্টমীর আনুষ্ঠানিকতা। সর্বসম্মত সিদ্ধান্তক্রমে বরাদ্দকৃত র্যালির অর্থ ব্যয় হবে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য।
এ ব্যাপারে প্রদীপ সাহা বলেন, ‘কে হিন্দু, কে মুসলিম সেটা বুঝি না। আমরা মান♚ুষ। মানুষ বাঁচলে আবার জন্মাষ্টমী﷽ উৎসব উদযাপন করা যাবে। এবারে আমরা বন্যার্তদের পাশে দাঁড়াবো। সে কারণে সিদ্ধান্ত হয়েছে আমাদের এবারের র্যালির ব্যয় ও বাড়তি ফান্ড করে আমরা বন্যার্তদের জন্য পাঠাবো।’
ভোলা
দেশে বন্যা পরিস্থিতির কারণে এ বছর ভগবান শ্রীকৃষ্ণের শুভ আবির্ভাব তিথি জন্মাষ্টমী ও অন্যান্য আয়োজনের ব্যয় সংকোচন করে বন্যাদুর্গতদের জন্য ত্রাণ ও অন্যান্য সহযোগিতার𒊎 ব🐲্যবস্থা করা হবে বলে জানিয়েছে ভোলা পূজা উদযাপন পরিষদ সভাপতি শান্ত।
শুক্রবার (২৩ আগস্ট) ভোলা পূজা উদযাপন পরিষদ ভগবান শ্রীকৃষ্ণের শুভ আবির্ভাব তিথি জন্মাষ্টমী আলোচনা 🎉সভায় ও কেন্দ্রের ঘোষ🐓ণা অনুযায়ী এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বলে জানিয়েছেন তিনি।
শান্ত বলেন, “দেশের বৃহত্তর কুমিল্লা, নোয়াখালী, ফেনীসহ বিভিন্ন স্থানে আকস্মিক বন্যার কারণে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। পরিস্থিতি বিবেচনায় পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণের জন্মতিথি শুভ জন্মাষ্টমীর উপলক্ষে আয়োজিত বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রাসহ অন্যান্য অনুষ্ঠানের ব্যয় কমিয়ে বন্যাদুর্গতদের পাশে🦄 দাঁড়ানোর জন্য কেন্দ্রীয় তহবিল গ🧸ঠন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ কেন্দ্রীয় ঘোষণা অনুযায়ী ভোলা জেলা ও সদর উপজেলা শাখার উদ্যোগে পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণের জন্মতিথি শুভ জন্মাষ্টমীর উপলক্ষে সোমবার (২৬ আগস্ট) বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও তা বাতিল করা হয়েছে।”
তবে ভোলার প্র꧙তিটি মন্দিরের স্ব স্ব ব্যবস্থাপনায় জন্মাষ্টমীর আনুꦜষ্ঠানিকতা পালন করা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) ভোলা শাখার সভাপতি মোবাশ্বিরুল্লা চৌধুরী বলেন, ‘বাংলাদেশ স্মরণকালের ইতিহাসে এক অসাধারণ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে বিজয়ের এক নতুন অধ্যায়ে প্রবেশ করেছে। দেশের এই ক্রান্তিলগ্নে বন্যার পানিতে দেশের দক্ষিণাঞ্চলসহ উত্তরবঙ্গের জেলাগুলোতেও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বন্যাদুর্🥃গতদের পাশে দাঁড়ানো নৈতিক ও মানবিক দায়িত্ব হিসেবে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা মানবিক সিদ্ধান্ত নেওয়ায় তাদের ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা।’
বরিশাল
বন্যাদুর্গত ফেনী ও নোয়াখালীর মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে বরিশালের সব শ্রেণিপেশার মানুষ। মুসলিম,♓ হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টানসহ সব ধর্মাবলম্বী মানুষ ও বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন চাঁদা তুলে বন্যাদুর্গত মানুষের জন্য পাঠাচ্ছেন।
এর আগে বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) নগরীর শ্রী শ্রী শংকর মঠ🦂 পূজা উদযাপন কমিটিসহ পাঁচটি মন্দিরের পক্ষ থেকে সাত সদস্যের স্বেচ্ছাসেবক দল বন্যার্তদের পাশে গিয়ে দাঁড়িয়েছেন। শারদীয় দুর্গোৎসবের জন্য তোলা অর্থের একটি অংশ স্বেচ্ছাসেবক দলের মাধ্যমে বন্যাদুর্গত ফেনী-নোয়াখালীর মানুষের জন্য পাঠানো হয়েছে। এ ছাড়া নগরীর ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের দক্ষিণারঞ্জন চক্রবর্তীর স্মৃতি দুর্গা মন্দির কমিটি দুর্গোৎসবের টাকা আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান শায়খ আহমাদুল্লাহর মাধ্যমে বন্যাদুর্গতদের জন্য পাঠিয়েছেন।
শ্রী শ্রী শংকর মঠ পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি লিমন কৃষ্ণ সাহা কানু ও সাধারণ সম্পাদক আকাশ দাশ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘প্রতিবছর শারদীয় দুর্গোৎসব ঘিরে বড় আয়োজন থাকে আমাদের মন্দিরে। এজন্য বছরের শুরু থেকে উৎসবের জন্য অর্থ তোলা হয়। এ বছর হঠাৎ ফেনী, নোয়াখালী, কুমিল্লাসহ আট জেলার মানুষ বন্যায় আক্রান্ত হয়েছেন। যে পরিমাণ পানির স্রোত দেখছি, তাতে বুঝেছি বড় ধরনের বিপদে পড়েছেন এসব জেলার মানুষজন। এ অবস্থায় আমরা মন্দিরের দায়ি𒁏ত্বশীলদের সঙ্গে আলোচনা করে দুর্গোৎসবের অর্থ এবং নগরীর আরও কয়েকটি ༺মন্দির থেকে টাকা তুলে স্বেচ্ছাসেবীদের মাধ্যমে বন্যায় আক্রান্ত মানুষের জন্য পাঠিয়েছি। কারণ আগে মানবতা, পরে উৎসব। মানুষ বাঁচলে, পরে উৎসব করা যাবে।’
সাধারণ সম্পাদক আকাশ দাশ বলেন, ‘এই বিপদ সব সময় থাকবে না। দ্রুত কেটে যাবে। এই মুহূর্তে বন্যাদুর্গত মানুষকে বাঁচানোর দায়িত্ব আমাদের সবার। সেজন্য আমরা তাদের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেছি। পাশাপাশি নগরী, জেলার সব মন্দির কমিটির নিজস্ব তহবিল ও দুর্গোৎসবের অর্থ দিয়ে বন্যার্তদের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছি আমরা। ইতোমধ্যে সবাই সাড়া দিয়েছেন। প্রতিটি💮 মন্দিরের সভাপতি-সম্পাদক আমাদের নিশ্চিত করেছেন, যে যার মন্দিরের অর্থ স্বেচ্ছাসেবীদের মাধ্যমে পাঠানোর ব্যবস্থা করবেন।’
পূজায় বাজেট কমিয়ে এবার বন্যাদুর্গ♔ত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, এমনটি জানালেন নগরীর দক্ষিণারঞ্জন চক্রবর্তীর স্মৃতি দুর্গামন্দির কমিটির সাধারণ সম্পাদক অয়ন চক্রবর্তী। বাংলা ট্রিবিউনকে তিনি বলেন, ‘উৎসব প্রতি বছর করা যাবে। এ বছর আমরা ছোট আকারে করবো। কিন্তু যারা বন্যায় এখন মারাত্মক দুর্ভোগে রয়েছেন তাদের আগে রক্ষা করতে হবে। তাই আমাদের জায়গা থেকে পূজার বাজেটের একটি অংশ আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশনে পাঠিয়েছি। আমাদের মন্দিরগুলোর পক্ষ থেকে আরও যারা অর্থ সহায়তা দেবেন কিংবা দিচ্ছেন, তাদেরকে আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশনে পাঠাতে বলেছি আমরা।’
এ ছাড়া দেশের অন্যান্য অনেক জেলা থেকে একইরকম খবর পাওয়া꧟ যাচ্ছে। পুজোর টাকা যাচ্ছে বন্যার্তদের কাছে। এ যেন সম্প্রীতির এক নতুন বাংলাদেশ!