গত কয়েক মাস ধরে যেন মূল্যবৃদ্ধির প্রতিযোগিতা চলছে দেশের বাজারে। কখনো লাফিয়ে বাড়ে আলুর দাম, কখনো বাড়ে পেঁয়াজের দাম। এবার বꦬেড়েছে রসুনের দাম। সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতি কেজি রসুনের দাম বেড়েছে ৬০ থেকে ৮০ টাকা। বাজারে পণ্যটির পর্যাপ্ত মজুত থাকলেও কৃত্রিম সংকট তৈরি করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন অসাধু ব্যবসায়ী চক্র। এই অভিযোগ ক্ষুদ্ধ ক্রেতাদের। এমন মূল্যবৃদ্ধিকে তারা অস্বাভাবিক দাবি করছেন।
সরকারি সংস্থা ট্♒রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) ১৫ ডিসেম্ব🥂রের হালনাগাদকৃত তথ্য বলছে, বাজারে প্রতি কেজি দেশি রসুন বিক্রি হচ্ছে ২১০ থেকে ২৭০ টাকায়। আর আমদানিকৃত রসুন বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২২০ টাকায়।
রাজধানীর কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা যায়, খুচরা পর্যায়ে প্রতি কেজি দেশি রসুন ২৬০ থেকে ২৮০ টাকায় বিক্রি হচꦛ্ছে। গত সপ্তাহে দেশি রসুন বিক্রি হয়েছে ২০০ থেকে ২২০ টাকায়। আর আমদানি করা রসুন কেজিতে ৪০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ২২০ থেকে ২৪০ টাকায়। গত সপ্তাহে যা ছিল💃 ১৮০ থেকে ২০০ টাকা।
আড়ত পর্যায়ে প্রতি কেজি দেশি রসুন বিক্রি হচ্ছে ১৯০ থেকে ২১০ টাকায়। আর✱ আমদানি করা রসুন বিক্রি হচ𓃲্ছে ১৮০ থেকে ১৯০ টাকায়।
বাজারে সংকটের মধ্যে হঠাৎ করে রসুনের দাম বৃদ্ধিকে যৌক্তিক বলে দাবি করছেন ব্যবসায়ীরা। তারা বলছেন, বাজারে 😼রসুন সংকট। বড় বড় আড়তেও নাকি রসুন নাই। মৌসুমের শেষ সময়ে এসে সব জিনিসের দাম বাড়বে এটাই স্বাভাবিক। ভারত পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ ঘোষণার প🅠র থেকেই বাজারে একের পর এক পণ্য সংকট তৈরি হয়েছে। এতে সাধারণ ব্যবসায়ীদের কোনো হাত নেই।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কারওয়ান বাজারের এক ব্যবসায়ী সংবাদ প্রকাশকে বলেন, “ভারত পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ ঘোষণা করেছে। বড় বড় ব্যবসায়ীরা দাম বৃ✅দ্ধির সুযোগ পেয়ে গেছেন। গত সপ্তাহে যে দামে রসুন বিক্রি করেছি, এখন সে দামে রসুন কিনতে হচ্ছে। তাহলে এখানে আমাদে🎉র কোনো হাত আছে?”
তিনি আরও বলেন, “বড় বড় ব্যবসায়ীরা চাইলেই রাতারাতি বাজারে পণ্য সংকট তৈরি করতে পারে। খুচরা পাইকারি ব্যবসায়ীদের সংকট দেখিয়ে যেকোনো জিনিসের দাম বাড়িয়ে নেয় তারা। এ বিষয়ে সরকার তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা না নিয়ে আমাদের মতো ব্যবসায়ীদের কাছে এসে জরিম𓆏ানা করে ভোক্তা অধিদফতর।”
বাজারে পর্যাপ্ত রসুন মজুত থাকার পরও সংকট তৈরির কারণ খোঁজার চেষ্টা করেন সংবাদ প্রকাশের প্রতিবেদক। কারণ খুঁজতে কয়েকজন আড়ত মালিকের সাথে যোগা👍যো💦গ করলে বিষয়টি এড়িয়ে যান তারা।
তবে শ্যামবাজারের মেসার্স সুরমা বাণিজ্যালয়ের ঝুটন সাহা জানান, চীনে বেড়ে গেছে রসুনের দাম। পাশাপাশি দেশেও কিছুটা ডলার সংকট চলছে। এতে আমদানি কমে যা🐠ওয়ায় দাম বাড়ছে।
আর দে🅠শি রসুনের মৌসুম ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি থেকে এপ্রিলের মাঝামাঝি পর্যন্ত জানিয়ে🦩 তিনি বলেন, “প্রতি বছর মৌসুমের শেষে দাম বাড়ে রসুনের। মূলত সরবরাহ কমে যাওয়ায় দামে প্রভাব পড়ে।”
উত্তরা আজমপুর কাঁচাবাজারের ব্যবসায়ী ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত আমিরুল ইসলাম। 𝔉ক্রয়ক্ষমতার বাইরে যাওয়া রসুনের দামে নানা অভিযোগ তার। কোনো কারণ ছাড়াই রসুনের দাম বাড়ানো হয়েছে বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি।
আমিরুল ইসলাম সংবাদ প্রকাশকে বলেন, “এখন কি এমন তুফান বা বৃষ্টি হচ্ছে যে রসুনের দাম বাড়বে। শীতে পেঁয়াজের সাথে রসুন চাষ হলেও বাজারে দেখছি রসুন নাই। ব্যবসায়ীরা রসুনের বস্তা গু꧅ম করে রাখছে আর বলছে বাজারে রসুন নাই। কি একটা যন্ত্রণায় পড়েছি আমরা। বাজারে আসলেই শুনবেন আজ এই জিনিসের দাম বেশি তো কাল ওই জিনিসের দাম বেশি। বাজারে দাম বেশি ছাড়া কমার কোনো কথা নাই ব্যবসায়ীদের কাছে।”
তিনি আরও বলেন, “ আমাদের দেশে ব্যবসায়ীরাই সব। তারা দেশকে গিলে খাওয়ার জন্য যথেষ্ট। যখন যে যা পাচ্ছে তারই দাম বাড়িয়ে দিচ্ছে। আর আমাদের ক্রয়ক্ষমতার বাহিরে চলে যাচ্ছে নিত্যপণ্যের দ♏াম। আমরা পরিবার নিয়ে বিপাকে পড়লে ব্যবসায়ীদে❀র কিছু যায় আসে না। তারা কোটি কোটি টাকা লুট করে জমিয়ে রেখেছে। তাদের কোনো সমস্যা নেই।”
অন্য এক প্রশ্নের জবাবে আমিরুল ইসলাম বলেন, “ঢাকা শহরে পরিবার নিয়ে চলা এখন খুব কঠিন হয়ে পড়েছে। যা বলার মতো না। কাউকেই এই ব♏িষয়ে বোঝানো যায় না। আমরা সাধারণ মানুষ। বেসরকারি চাকরি করি। মাস শেষে যা বেতন পাই তা দিয়ে সংসার চলে না। প্রতি মাসে ধার-দেনা করে চলতে হয়। সরকার যদি ব্যবসায়ীদের টাইট করতে পারতো তাহলে আমরা অন্তত পরিবার নিয়ে ডাল-ভাত খেয়ে বাঁচতে পারতাম। সরকারের কাছে আমাদের অনুরোধ বাজারে স্বস্তি যেন ফিরে আসে, সেই কাজ যেন করে। সাধারণ মানুষ হিসেবে এখন এটাই আমাদের চ♌াওয়া।