সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য যিনি আমাদের মুসলিম হিসেবে সৃষ্টি করেছেন। মুসলিম জাতির গোনাহ মাফের জন্য এবং মর্যাদা বৃদ্ধির জন্য তিনি বিভিন্ন আমল ও এবাদাত নির্ধারণ করেছেন। তন্মধ্যে একটি হল জুমার দিন📖।🐬 এদিনটি সমগ্র মুসলিমদের জন্য একটি বিশেষ দিন। বছরের গণনায় আল্লাহ তা’আলা ১২টি মাস নির্ধারণ করেছেন তন্মধ্যে চারটি মাস ‘শাহরে হারাম’ বা পবিত্র মাস আর সপ্তাহের গণনায় মহানবী (সাঃ) জুমার দিনকে মহিমান্বিত দিন হিসাবে বর্ণনা করেছেন। জুমা’ নামে পবিত্র কুরআনে একটি স্বতন্ত্র সূরা নাযিল করেছেন।
হাদিসের বিভিন্ন কিতাবে ‘জুমা’ নামে আলাদা একটি অধ্যায় রয়েছে। এতে ইসলামে জুমার দিনের গুরুত্ব সহজেই অনুধাবন করা যায়। জুমা আরবি শব্দ। আবার শুক্রবারকে ‘ইয়াওমুল জুমা’ বলা হয়। জুমুআ বা জুমা। বাংলায় এর শাব্দিক অর্থ একত্রিত হওয়া, সম্মিলিত হওয়া, কাতারবদ্ধ হওয়া ইত্যাদি। এর দ্বারা অনুধাবন করা যায়, মুসলিমদের জন্য একত্রিত থাকা কতটা গুরুত্বপূর্ণ। সাম্মিলিত বা একত্রিত হয়ে ঐষী বা বৈষয়িক যে কোন কাজের সাথে মহান আল্লাহ তা’আলার রহমত থাকে এবং এতে কেবল অংশগ্রহণের দ্বারাই রহমতপ্রাপ্ত হওয়া যায়। যেমন-জুমার সালাত, যুদ্ধের ময়দানের মত শহর কিংব💫া গ্রামের বড়-ছোটꩲ, ধনী-গরীব, সাদা-কালো নির্বিশেষে এক কাতারে দাঁড়ায়। সপ্তাহের নির্দিষ্ট দিন শুক্রবারে প্রাপ্তবয়স্ক মুমিন মুসলমান একটি নির্দিষ্ট সময়ে একই স্থানে একত্রিত হয়ে জামাতের সঙ্গে সে দিনের যোহরের নামাজের পরিবর্তে এই নামাজ ফরজ রূপে আদায় করে, সে জন্য এই নামাজকে `জুমার নামাজ` বলা হয়।
রাসূলুল্লাহ (সা.) এর মদিনায় আগমনের পর একবার মদিনার আনসার সাহাবিরা আলোচনায় বসেন। তারা বললেন, ‘‘ইহুদিদের জন্য সপ্তাহে এক🍸টি দিন নির্দিষ্ট রয়েছে, যে দিনে তারা সবাই একত্রিত হয়। নাসারারাও (খ্রিষ্টান) সপ্তাহে একদিন একত্রিত হয়। সুতরাং আমাদের জন্য সপ্তাহে একটি দিন নির্দিষ্ট হওয়া প্রয়োজন, যে দিনে আমরা সবাই সমবেত হয়ে আল্লাহকে স্মরণ করব, নামাজ আদায় করব।’’
শনিবার ইহুদিদের আর রোববার নাসারাদের জন্য নির্ধারিত। অবশেষে তারা ইয়াওমুল আরুবা শুক্রবারকে গ্রহণ করলেন (সিরাতুল মুস্তাফা ও দরসে তিরমিজি)। হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহহু আনহু বর্ণনা করেছেন, রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, ‘‘আমরা সর্বশেষ উম্মাত কিন্তু কেয়ামতের দিন আমরা হব অগ্রগামী। যদিও সব উম্মাতকে (আসমানি) কিতাব দেওয়া হয়েছে আমাদের আগে, আর আমাদের কিতাব দেওয়া হয়েছে সব উম্মাতের শেষে। এরপর যে দিনটি আল্লাহ আমাদের জন্য নির্ধারণ করেছেন, সেদিন সম্পর্কে তিনি আমাদের হেদায়াতও দান করেছেন। সেদিনের ব্যাಌপারে অন্যান্যরা আমাদের পেছনে রয়েছে- ইহুদিরা আমাদের পরের দিন (শনিবার) এবং খৃষ্টানরা তাদেরও পরের দিন (রোববার)।’’ (মুসলিম)
জুমার দিন সম্পর্কে আল্লাহ তা’আলা বলেন- فَإِذَا قُضِيَتِ الصَّلَاةُ فَانتَشِرُوا فِي الْأَرْضِ وَابْتَغُوا مِن فَضْلِ اللَّهِ وَاذْكُرُوا اللَّهَ كَثِيرًا لَّعَلَّكُمْ تُفْلِحُونَ`অতঃপর নামাজ সমাপ্ত হলে তোমরা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড় এবং আল্লাহর অনুগ্রহ সন্ধান কর ও আল্লাহকে অধিকরূপে স্মরণ কর; যাতে তোমরা সফলকাম হও।` (সূরা জুমুআ, আয়াত : 🤡১০)
জুমার দিনের অনেক আꦯমল হাদিস শরিফে বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। মহানবী (সাঃ) বলেছেন- সূর্য উঠা দিনগুলোর মধ্যে জুমার দিন সর্বোত্তম। এ দিন আদম আলাইহিস সালামকে সৃষ্টি করা হয়েছে। এ দিন তাকে জান্নাতে প্রবেশ করানো হয়েছে এবং এ দিন তাকে জান্নাত থেকে বের করা হয়েছে।’ অন্য বর্ণনায় এসেছে, এ দিনটিতেই কেয়ামত অনুষ্ঠিত হবে। (মুসলিম)
হ🙈জরত আবু হুরায়রা (রাঃ) বর্ণনা করেছেন, রাসুলুল্লাহ (রঃ) বলেছেন, ‘‘জুমার দিনে ফেরেশতাগণ বিশেষ একটি রেজিস্টার নিয়ে মসজিদের প্রতিটি দরজায় দাঁড়িয়ে থাকে। তাঁরা মসজিদে আগমনকারী প্রতিটি মুসল্লির নাম ধারাবাহিকভাবে লিখতে থাকেন। এরপর যখন ইমাম (মিম্বারে) এসে যান, তখন তারা রেজিস্টার বন্ধ করে খুতবায় মনোযোগ দেন।’’‘ইয়াওমুল জুমা’ মুসলিমদের জন্য একটি অতীব গুরুত্বপূর্ণ 🔜দিন, এদিনে এমন একটা সময় রয়েছে যখন আল্লাহ তা’আলা বান্দার দোয়া কবুল করেন। ইসলাম ধর্মে এদিনের অপরিসীম গুরুত্ব রয়েছে। আমরা ‘ইয়াওমুল জুমা’র ফজিলত সম্পর্কে ধারাবাহিক আলোচনার প্রয়াস পাব ইনশাআল্লাহ।
লেখক : মুফতি আব্💃দুল্লাহ আল মামুন, ইমাম ও খতিব, বশেমুরবিপ্রবি, কেন্দ্রীয় মসজিদ।