• ঢাকা
  • সোমবার, ০৯ ডিসেম্বর, ২০২৪, ২৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৭ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Songbad Prokash

ইনস্টাগ্রাম

টুইটার


লিংকডইন

পিন্টারেস্ট

গুগল নিউজ


আজ নোয়াখালী মুক্ত দিবস


নোয়াখালী প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৭, ২০২৪, ১১:১২ এএম
আজ নোয়াখালী মুক্ত দিবস

আজ নোয়াখালী মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের ৭ ডিসেম্বর স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা-জনতার প্রতিরোধের মুখে পাকিস্তানি হানাꦡদার বাহিনী নোয়াখালী থেকে বিতাড়িত হয়।

এদিন ভোরে বৃহত্তর নোয়াখালী জেলা বিএলএফ প্রধান মাহমুদুর রহমান বেলায়েত 🐼এবং সি-জোনের কমান্ডার ক্যাপ্টেন মোশারেফ হোসেনের নেতৃত্বে জেলা শহর মাইজদী আক্রমণ করে মুক্তিযোদ্ধারা। একযোগে তারা তিনটি রাজাকার ক্যাম্প দখল করে। 

মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্♍গে সন্মুখযুদ্ধে তীব্র প্রতিরোধের মুখে অবস🦹্থা বেগতিক দেখে নোয়াখালী পিটিআইয়ের ট্রেনিং সেন্টার থেকে তড়িঘড়ি করে পালিয়ে যায় পাকিস্তানি সেনারা।

৬ ডিসেম্বর ১৯৭১ সাল🎃। সি-জোন গুপ্তচরের মাধ্যমে জানতে পারে জেলা শহর মাইজদীতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর তৎপরতা বেড়ে গেছে। তাৎক্ষণিক জোনের রাজনৈতিক প্রধান আলী আহম্মদ চৌধুরীসহ অন্যান্য কমান্ডাররা জরুরি বৈঠকে বসেন এবং নোয়াখালী শহরে অবস্থিত পাকিস্তানি বাহিনী ও রাজাকারদের ওপর আক্রমণ করার সিদ্ধান্ত নেন। ১২টি গ্রুপকে ৬ ডিসেম্বর রাত ২টার মধ্যে নির্ধারিত স্থানে অবস্থান নিয়ে নির্দেশ মোতাবেক ক🐻াজ করে যেতে বলা হয় সবাইকে। 

সন্ধ্যায় তৎকালীন নোয়া൲খালীর জেলা প্রশাসক (ডিসি) মঞ্জুরুল করিমের সঙ্গে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি অ্যাডভোকেট খায়ের আহম্মদ ও রফিক উল্যাহ্ মিয়াকে যোগাযোগ করতে বলা হয়। সেদিন ডিসির সহযোগিতার কারণে পুলিশ লাইনসের সব পুলিশ সদস্য আত্মসর্মপণ করেন।

৭ ডিসেম্বর সকাল ৯টার দিকে তৎকালীন বিএলএফ কমান্ডার মাহমুদুর রহমান বেলায়েত এবং ডি-জোনের কমান্ডার🥂 রফিক উল্যাহ্’র বাহিনী এবং এমএফ, বিএলএফ ও এফএফ সবাই একত্রে মিলে মাইজদী ভোকেশনাল, নাহার মঞ্জিল, কোর্ট স্টেশন, রৌশন বাণী সিনেমা হল, দত্তের হাট, কোল্ড ষ্টোরিজসহ সব রাজাকার ক্যাম্প মুক্তিযোদ্ধাদের দখলে নিয়ে আসা হয়। শুধু বাকি থাকে মাইজদী পিটিআই। সেখানে মূলত পাকিস্তানিদের মূল ক্যাম্প ছিল। অন্যান্য ক্যাম্পগুলো দখলে☂ আনার ফলে একা হয়ে যায় পিটিআই।

একদিকে সাধারণ মানুষের൩ আনন্দ মিছিল, অন্যদিকে আক্রমণ করতে হবে পিটিআই। পিটিআই হোস্টেল দিঘির উত্তর পাড়ে ৩তলা বিল্ডিং এ রাজাকারদের হেড কোয়াটার ছিল। কিন্তু এ বিল্ডিং ভাঙার মতো কোনো বিধ্বংসী অস্ত্র ছিলো না মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে। তাই ফেনী থেকে একটা ২ ইঞ্চি মোটার এনে তা থেকে তিন তিনটা মোটার সেলের দ্ব🃏ারা পিটিআই হোস্টেলে আক্রমণের মাধ্যমে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা দিকে মাইজদী শহরে সর্বশেষ রাজাকার ক্যাম্প এর পতন ঘটিয়ে নোয়াখালী শহর হেড কোয়ার্টার হানাদার মুক্ত করা হয়। জেলা শহরের চারিদিকে মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তি পাগল মানুষের আনন্দ জোয়ারের ঢল নামে।

নতুন প্রজন্মের কাছে ৭ ডিসেম্বরের স্মৃতিক𓃲ে পরিচয় করিয়ে দিতে ১৯৯৬ সা🎉লের ২৮ ডিসেম্বর পাক-বাহিনীর ক্যাম্প হিসেবে পরিচিত নোয়াখালী পিটিআই সম্মুখে স্থাপন করা হয় স্মরণিকা স্তম্ভ ‘মুক্ত নোয়াখালী’। আর বিগত সরকারের আমলে একই স্থানে বর্ধিত পরিসরে স্থাপন করা হয় নোয়াখালী মুক্ত মঞ্চ।

প্রসঙ্গত, ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চের কালো রাত্রিতে পাকিস্তানী বাহিনীর নৃশংস হত্যাযজ্ঞের পর মুক্তিকামী ছাত্র-জনতা পুলিশ ও ইপিআর ফেরত জওয়ানদের সঙ্গে নিয়ে প্রতিরোধ গড়ে তোলে। ২৩ এপ্রিল পর্যন্ত নোয়াখালী ছিল মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ন্ত্রণে। পরবর্তীতে পাকবাহিনীর হামলার মুখে মুক্তিযোদ্ধারা টিক♛তে না পেরে পিছু হটলে নোয়াখালীর নিয়ন্ত্রণ নেয় পাকিস্তানীরা। নোয়াখালী পিটিআই এবং বেগমগঞ্জ সরকারি কারিগরি উচ্চবিদ্যালয়ে শক্তিশালী ঘাটি গাড়ে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী। তাদের সঙ্গে এদেশীয় রাজাকাররা মিলে শুরু করে লুটপাট। এরই মধ্যে নোয়൩াখালীর অসংখ্য ছাত্রজনতা প্রশিক্ষণ নিয়ে ভারত থেকে এসে পাকিস্তানিদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে। কোম্পানীগঞ্জের বামনীর যুদ্ধ, বেগমগঞ্জের বগাদিয়াসহ অসংখ্য যুদ্ধ হয় মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে। শহীদ হয় শত শত মুক্তিযোদ্ধা। শুধু সোনাপুরের শ্রীপুরে তারা হত্যা করেছিল শতাধিক ব্যক্তিকে। ডিসেম্বরের শুরুতেই নোয়াখালীর প্রত্যন্ত প্রান্তরে মুক্তিযোদ্ধারা পাকিস্তানিদের পিছু হটিয়ে দেয়। ৬ ডিসেম্বর দেশের সর্ববৃহৎ উপজেলা বেগমগঞ্জ মুক্ত করে মুক্তিযোদ্ধারা। আর ৭ ডিসেম্বর মুক্ত হয় গোটা নোয়াখালী।

 

 

স্বদেশ বিভাগের আরো খবর

Link copied!