• ঢাকা
  • শনিবার, ০৭ ডিসেম্বর, ২০২৪, ২২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৫ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Songbad Prokash

ইনস্টাগ্রাম

টুইটার


লিংকডইন

পিন্টারেস্ট

গুগল নিউজ


‘জেন জেড’ কারা , কী তাদের পরিচয়?


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: আগস্ট ৭, ২০২৪, ০৬:৫০ পিএম
‘জেন জেড’ কারা , কী তাদের পরিচয়?
ছবি: সংগৃহীত

একদল তরুণ শক্তি যখন দাবি আদায়ে সোচ্চার হয়ে উঠে, স্বাধীনতা অর্জনে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ হয়, তখন গর্জে উঠে পুরো দেশ, পুরো জাতি। তরুণদের সঙ্গে কণ্ঠ মিলিয়ে স্বাধৗনতার লড়াইয়ে ঝাপিয়ে পড়ে গোটা দেশ। শত শত ত্যাগ-তিতিক্ষা উপেক্ষা করে সংগ্রাম করে যায়। রক্তের বিনিময়ে  ছিনিয়ে💖 আনে স্বাধীনতা। দেশ, জাতির নতুন সূচণা হয়।

বাংলাদেশের ইতিহাসে এমন ঘটনা আগেও ঘটেছে। তরুণদের কাছে হার মেনেছে বড় বড় শাসক। ইতিহাসের পুনরা🐼বৃত্তি হয়েছে আবারও। তরুণ শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে যেন নতুন করে স্বাধীন হয়েছে বাংলাদেশ। নতুন সূচনা ঘটতে যাচ্ছে। নতুন করে সাজতে যাচ্ছে এই দেশ। যার নেতৃত্ব দিচ্ছে তরুণ সমাজ।

তরুণ প্রজন্মের চিন্তা ভাবনা প্রশংসিত হচ্ছে নেটজুড়ে। বিশ্🥂বের কাছেও তাদের পরিচিতি ছড়িয়ে পড়েছে। কেনই বা নয়, এই তরুণরা যে নতুন প্রজন্মের অংশ। যাকে আখ্যায়িত করা হয়েছে জেন জেড বা জেনারেশন জেড নামে।

নতুন প্রজন্মের চিন্তাধারা, কাজের ধারাবাহিকতা আগের প্রজন্ম থেকে অনেকটাই ভিন্ন। ক⛦ারণ তারা ডিজিটাল যুগে ইন্টারনেট হাতে বড় হয়েছে। ঘরে বসে গোটা বিশ্বকে দেখে বড় হয়েছে। যাদের চিন্তাভাবনায় জুড়ে রয়েছে বিশ্বজয়ের স্বপ্ন।

‘জেনারেশন জেড’কে সংক্ষেপে বলা হয় ‘জেন জেড’। এই প্রজন্ম এখন আলোচনার শীর্ষে রয়েছে। কারণ তারা পুরোনোকে বদলে নতুনের সূচনায় নিজেদের ভূমিকা প্রতিষ্ঠিত করতে সক্ষম হয়েছে। সামাজিক 🦄মাধ্যমসহ সংবাদমাধ্যম সব জায়গাতেই তাদের প্রশংসা ছড়িয়✤ে পড়েছে।

অনেকেই হয়তো জেন জেড-এর সঙ্গে পরিচিত নন। নতুন প্রজন্মে জন্ম নেওয়া সবাই জেনারেশন জেড নামে পরিচিত। ব্রিটা♈নিকা বলছে, ১৯৯০-এর দশকের শেষ দিক কিংবা ২০০০-এর দশকের প্রথম থেকে জন্ম নেওয়া সবাই ‘জেনারেশন জেড’।  আরও তথ্য মতে, ১৯৯৭ থেকে ২০১২ সালের মধ্যে যারা জন্ম নিয়েছে  তারা জেন জেড। এর মানে হচ্ছে, সর্বশেষ নতুন প্রজন্মকেই জেন জেড বলে আখ্যা দেওয়া হয়েছে। যাদের বয়স এখন ২৭ বছরের মধ্যেই।

সূত্র মতে, যুক্তরাষ্ট্রে ১৯৪০ থেকে ১৯৫৯ এর মধ্যে যারা জন্মেছেন তারা ‘বেবি বুমার্স’ নামে পরি﷽চিত। এরপরের প্রজন্মের জন্ম হয় ১৯৬০ থেকে ১৯৭৯ সালের মধ্যে। তাদের বলা হয় জেনারেশন এক্স। ১৯৮০ থেকে ১৯৯৪ সালের মধ্যে যারা জন্ম নেয় তারা জেনারেশন ওয়াই বা মিলেনিয়াল। আর ১৯৯৫ থেকে ২০১০ এর  ম💙ধ্যে যাদের জন্ম হয়েছে তারাই হচ্ছে জেনারেশন জেড বা জেন জেড। সেই অনুযায়ী, ৭ থেকে ২৭ বছর বয়সী বাচ্চারা জেনারেশন জেড বলেই পরিচিত।

জেন জেড বা জেনারেশন জেড প্রজন্ম কেমন

জেন জেড- এর ছেলে মেয়েরা জন্মেছে ইন্টারনেট যুগে। বিশ্বজুড়ে যখন ইন্টানেটের য💮ুগ শুরু হয় এবং সবকিছুই যখন ইন্টারনেট নির্ভর হয়ে পড়েছে তখনই এই প্রজন্ম পা রেখেছে পৃথিবীর 🥃বুকে। স্মার্ট ফোন, স্মার্ট ওয়াচসহ নানা আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার দেখেছে তারা। পড়া-লেখা শেখার আগেই শিশুরা  আইফোন ব্যবহার শিখছে। প্রাপ্তবয়স হওয়ার আগেই ব্যবহার করছে সোশ্যাল মিডিয়া।

বিশেষজ্ঞরা জানান, জেনারেশ﷽ন জেড-এ জন্ম নেওয়া ছেলে মেয়েরা আধুনিক মন মানসিকতা নিয়ে বড় হচ্ছে। বিভিন্ন ধর্ম বা সামাজিক চিরাচরিত বিষয় নিয়ে তারা খুব বেশি ব্যস্ত থাকে না। বরং তারা তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির মাধ্যমে বিশ্বের সঙ্গে যুক্ত থাকতেই বেশি পছন্দ করে।

ফেসবুক ও ই-মেইলের ব্যবহারকে সীমিত করে এই প্রজন্ম এখন ইন্সটাগ্রাম এবং ইউট🌄িউব ব্যবহারে বেশি অভ্যস্ত। তাদের অধিকাংশই এখন অনলাইনের উপর নির্ভরশীল। অনলাইনে কেনাকাটা, অনলাইন ক্লাস, অনলাইন আড্ডা, অনলাইন গেমিংসহ আরও অনেককিছুই তারা অনলাইনে সেরে নিচ্ছে। তাইতো এই প্রজন্মকে ইন্টারনেট প্রজন্মও বলা হয়।

২০ඣ০৭-২০০৯ সালের মহামন্দা এবং কোভিড-১৯ মহামারী দ্বারা একটি নতুন ছাঁচ পেয়েছে এই প্রজন্ম। তাদের প্রারম্ভিক বছরগুলোতেও মার্কিন সমাজেও বড় পরিবর্তন হয়। দেশটিতে প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা নির্বাচিত হন এবং সমকামী বিবাহের বৈধতা পায়। 

‘জেনারেশন জেড’কে সবচেয়ে বৈচিত্র্যময় প্রজন্ম হিসেবে বিবেচনা করা হয়। আগের প্রজ🌜ন্মের তুলনায় জেন জেড-এর ছেলে মেয়েরা অনেক বেশি বৈচিত্র্যময় পরিবেশে বেড়ে উঠেছে। তারা আইনিভাবে স্বীকৃত অধিক হারে একক বাবা-মা, জাতিগত মিশ্র পরিবারের সন্তান।

২০১৮ সালে এই প্রজন্মকে নিয়ে এক গবেষণা হয়। সেই গবেষণার বরাতে ব্রিটানিকা জানায়, জেনারেল জেড-এর সবচেয়ে বয়স্ক সদস্যরাও দেরি করে বিয়ে করেন। এই প্রজন্মের মাত্র ৪ শতাংশ ২১ বছর বয়সের𓃲 মধ্যে বিয়ে করেন। এই হার আগের মিলেনি✅য়াল প্রজন্মের তুলনায় প্রায় অর্ধেক।

কিছু প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, জেনারেশন জেড প্রজন্ম আগের প্রজন্মের ত๊ুলনায় বেশি বাস্তববাদী। তারা সময়ের আগেই পরিপক্ব হয়ে উঠে। এরা আগের প্রজন্মের তুলনায় বেশি স্নাতক ডিগ্রি সম্ভাবনা রয়েছে। পাশাপাশি এই প্রজন্ম ক্যারিয়ার নির্ধারণে বেশি সচেতন থাকে।

বিশে🐻ষজ্ঞরা জানান, জেন জেড প্রজন্ম অত্যন্ত আশাবাদী। তারা নিজেদের এগিয়ে কল্পনা করতে ভালোবাসে। তারা সৃজনশীলতাকে বেশি প্রাধান্য দেয়। তারা সম্পূর্ণ নতুন কিছু সৃষ্টির চিন্তা করে।

জেন জেড প্রজন্মের বড় অংশ রেস্টুরেন্ট প্রেমী। তারা বাইরের খাবার খেতেই বেশি পছন্দ করে। ইন্ডিয়ান, জাপানিজ, ফ্রেঞ্চ, ইতালিয়ান, রাশান কিংবা আমেরিকান রেসিপিকে তারা পছন্দের শীর্ষে রাখে। এই প্রজন্মের হাত ধরেই ‘ফাস্ট ফুড’ কালচারেও পরিবর্তন এসেছে। রেস্টুরেন্টের পাশাপাশি ফুডকোর্ট কিংবা মিনি ফুডকোর্টের সংখ্যা বে🥂ড়েছে।

এই প্রজন্ম সিনেমা দেখার রুচিবোধেও বদল এনেছে। হলিউড কিংবা বলিউডের বাইরে তারা কোরিয়ান, জাপানিজ, চায়নিজ, নেপালি, মালয়ালামসহ আরও অন্যান্য ধারার সিনেমার দর্শক তৈরি করেছে। বাংলাﷺ সিনেমা কিংবা আর্টফিল্মকেও তারা জনপ্রিয় করেছে।

টেকনোলজি ফ্রিকেও এই প্রজন্ম এগিয়ে। শুধুমাত্র কথা বলায় সীমাবদ্ধ নেই মোবাইল ফোন বা স্মার্ট গ্যাজেটস। ফোন ক্যামেরায় শর্টফিল্ম তৈরির ট্রেন্ডও এসেছে এই প্রজন্মের হাত ধরেই। গুগল ম্যাপ, ডেইলি নোটপ্যাড, নেভিগেশন কিংবা লাইভ টিভ🌜ির মতো প্রযুক্তির ব্যবহার ছড়িয়ে পড়েছে।

জেন জেড-এর নেতিবাচক দিক

জেনারেশন জেড প্রজন্ম যেমন নতুন সম্ভাবনাকে এ𓂃গিয়ে দিয়েছে, তেমনই কি💛ছু বিষয়ে ক্ষতিকর প্রভাবও ফেলেছে। এই প্রজন্মের কারণে সংস্কৃতি ঐতিহ্যগত চর্চা বাঁধার সম্মুখীন হচ্ছে।

এই প্রজন্ম সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অভ্যস্ত হয়ে পড়ায় তারা বিচ্ছিন্ন হচ্ছে পরিবার থেকে। একসঙ্গে আড্ডা, মাঠে খেলাধু🐓লা বিমুখ হয়ে পড়েছে  ছেলেমেয়েরা। ভার্চ্যুয়াল জগতে অনেক বেশি সম্পৃক্ত হওয়ায় সেখানেই বেশি সময় কাটাচ্ছে।

বিশেষজ্ঞরা জানান, এই প্রজন্ম 𒆙খুব সহজেই হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়ছে। ভার্চ্যুয়ালি তারা এগিয়ে গেলেও পিছিয়ে পড়ছে বাস্তবতায়। যা তাদের মধ্যে হতাশা তৈরি করছে।

জেন জেড প্রজন্মে মানবিক সম্পর্কেরও অবনতি হয়েছে। অপ্রয়োজনে অনলাইনে ‘অ্যাকটিভ’থাকার কারণে বাড়ছে নানা সমস্যা। গবেষণায় উঠে 🅺এসেছে, যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ৫৯ শতাংশ কিশোর-কিশোরী অনলাইনে হয়রানির শিকার হচ্ছে। অপমানজনক মন্তব্য, গুজব ছড়ানো, শারীরিক হুমকি এবং অপ্রত্যাশিত ও ব্যক্তিগত ছবি প্রকাশের মাধ্যমে নেতিবাচকতা বাড়ছে।

এই প্রজন্মের অপ্রাপ্তবয়স্করা অনেক বেশি মদ্যপান করতে পারেন। কারণ ২০০৭ থেকে ২০০৯ সালের মন্দার সময় বেড়ে ওঠা মানু🍸ষগুলো আর্থিক সমস্যা এবং কর্মসংস্থানে অস্থিরতার সম্মুখীন হয়েছে। যা তাদের বেড়ে ওঠায় প্রভাব ফেলেছে।

বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, নেতিবাচক দিকের চেয়ে এই প্রজন্মের অর্জনটা বেশি। জেনারেশন জেড প্রজন্মের গতিশক্তির সঠিক প্রয়োগটা জরুরি। এক্ষেত্রে আগের প্রজন্মে বেড়ে ওঠা অভিভাবক বা শিক্ষকদের ভূমিকা রাখতে হবে। নতুন শিশুর জন্য স্থান ছেড়ে না দিয়ে তাদের যোগ্য করে গড়ে তোলার দা🙈য়িত্বটা নিতে হবে।

Link copied!