লক্ষ্মীপূজা হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ পূজা। যা মা লক্ষ্মীর প্রতি শ্রদ্ধা ও আরাধনা প্রকাশের একটি উৎসব। মা লক্ষ্মীকে ধন, সমৃদ্ধি, সুখ ও সৌভাগ্যের দেবী হিসেবে পূজা করা হয়। লক্ষ্মীপূজা সাধারণত শারদীয় দুর্গাপূজার পরে কোজাগরি পূর্ণিমায় এবং কার্তিক মাসের অমাবস্যা ত🅰িথিতে দীপাবলীর সময় পালিত হয়। বিভিন্ন অঞ্চলে এর রীতি ও নিয়ম কিছুটা ভিন্ন হতে পারে, তবে মূল প্রক্রিয়া প্রায় একই।
হিন্দু ধর্মাম্বলীদের বিশ্বাস অনুযায়ী, লক্ষ্মীপূজা সঠিক নিয়ম অনুযায়ী পালন করা হলে ধন-সম্পদ এবং সৌভাগ্যের আশীর্বাদ লাভ হয়। পূজার সব আচার-অনুষ্ঠান ও ভক্তির মাধ্যমে মা লক্ষীর কৃপা লাভ করা যায়। যা একটি পরিবারের মঙ্গল ও 😼সমৃদ্ধি বয়ে আনে। লক্ষ্মীপূজা উদযাপনে যেসব রীতি বা নিয়ম পালন করা হয়।
পূজার প্রস্তুতি
লক্ষ্মীপূজার আগে ঘরবাড়ি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা হয়🎉, কারণ মা লক্ষ্মীকে পরিচ্ছন্নতার দেবী হিসেবে বিবেচনা করা হয়। বিশ্বাস করা হয়, মা লক্ষ্মী সেই ঘরেই প্রবেশ করেন যা সজ্জিত, সুগন্ধি, এবং পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন। তাই পূজার আগ🔯ে ঘরদোর সুন্দরভাবে সাজিয়ে তোলা হয়।
আলপনা আঁকা
অনেক বাড়িতেই লক্ষীপূজার সময় মেঝেতে আলপনা আঁকার রীতি আছে। এই আলপনায় ব🍸িশেষত পদচিহ্ন এঁকে, মা লক্ষ্মীর আগমন বোঝানো হয়। বিভিন্ন ফুল, পাতা এবং ঐতিহ্যবাহী নকশা দিয়ে আলপনা তৈরি করা হয়।
পূজার স্থান নির্ধারণ
পূজার জন্য নির্দিষ্ট একটি জায়গা পরিষ্কার করে সজ্জিত করা হয়। যেখানে মূর্তি বা লক্ষ্মীর ছবি স্থাপন করা হবে। এই স্থানটি ফুল, আলো এব💧ং মাটির প্রদীপ দিয়ে সাজানো হয়।
পূজার সামগ্রী
লক্ষ্মীপূজায় ব্যবহৃত সামগ্রীর একটি বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। প্রতিটি উপকরণ আলাদা আলাদা ভাবে পূজার মূল রীতির অংশ। পূজার জন্য প্রয়োজনীয় কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সামগ্রী হলো-মা লক্ষ্মীর একটি সুন্দর মূর্তি বা ছবি পূজার স্থানে স্থাপন করা হয়। মূর্তিটি সাধা♔রণত কমল ফুলে আসীন থাকে, যা লক্ষ্মীর পবিত্রতার প্রতীক।
পানচালি বা পবিত্র বই
লক্ষীপূজায় লক্ষ্মী দেবীর বন্দনার জন্য পবিত্র বই থেকে মন্ত্র ও প্রার্থনা পাঠ করা হয়। সাধারণত লক্ষ্মীপঞ্চালি পাঠ করা হয়, যা দেবীর কাহিনি ও গুণাবলি বর্ণনা 🐈করে।
দীপ এবং ধূপ
মাটির প্রদীপ (দীপ) জ্বালিয়ে মা লক্ষ্মীকে আহ্বান জানানো হয𒁃়। ধূপও 🌌ব্যবহার করা হয়, যা পূজার সময় পবিত্রতা ও সুগন্ধ সৃষ্টি করে।
অন্যান্য দ্রব্য
পূজার সময় ধান, দূর্বা, গঙ্গাজল, ফুল, ফল, মিষ্টি, হলুদ, সিঁদুর, নতুন কাপড় এবং নারকেল ব্যবহৃ𒉰ত হয়। এই সব দ্রব্যাদি পূজার অপরিহার্য অংশ।
পূজার প্রক্রিয়া
লক্ষ্মীপূজার মূল অনুষ্ঠান শুরু হয় স্নান ও শুদ্ধি🌌করণের মাধ্যমে। ভক্তরা শুদ্ধভাবে স্নান সেরে নতুন বা পরিষ্কার পোশাক পরে পূজার জন্য প্রস্তুত হন। পূজার শুরুতে পবিত্রতা ও শুদ্ধতার জন্য পানি হাত🍬ে নিয়ে দেবীর নাম উচ্চারণ করে মুখে স্পর্শ করা হয়, যা আচমন নামে পরিচিত।
লক্ষ্ম🐭ী দেবীর মূর্তি বা ছবিকে একটি সুন্দর আসনে বসানো হয় এবং সিঁদুর দিয়ে দেবীর মূর্তির ললাটে তিলক আঁকা হয়। তারপর ধান, দূর্বা এবং মিষ্টি নিবেদন করা হয়।
পূজার সময় ভক্তরা মা লক্🅰ষীর বন্দনা করেন। মন্ত্র, স্তুতি এবং লক্ಌষ্মীপঞ্চালি পাঠ করা হয়, যাতে মা লক্ষ্মীর আশীর্বাদ লাভ করা যায়। মন্ত্রগুলো দেবীর ঐশ্বরিক ক্ষমতা ও গুণগান করে।
দেবীকে অর্ঘ্য (জল) প্রদান করা হয়, যা পূজার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এছাড়া দেবীর চরণে ফুল ও ধান নিবেদন করা হয়। আরতির সময় প্রদীপ ও ধূপ ঘোরানো হয় এবং মন্ত্র উচ্চারণ করা হয়। আরতি দেবীকে আহ্বান ও প্রার্থনা করার একটি গুরুত্বপূর্ণ র🔯ীতি।
ভোগ নিবেদন
লক্ষ্মীপূজার আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো ভোগ নিবেদন। ভক্তরা মা লক্ষীকে নানান ধরনের ফল ও মিষ্টি নিবেদন করেন, যা পরে প্রসাদ হিসেবে বিতরণ করা হয়। ভোগের মধ্যে সাধারণত পায়েস, নারকেল নাড়ু, মিষ্টি, ফল ও খিচুড়ি অন্তর্ভুক্ত থাকে। এই 𒅌ভোগ দেবী লক্ষ্মীকে নিবেদন করা হয় এবং পরে পরিবারের সদস্যরা ও🍨 অন্যান্য ভক্তরা প্রসাদ গ্রহণ করেন।
লক্ষ্মীকথা শোনা
লক্ষ্মীপূজার সময় সাধারণত লক্ষ্মীকথা শোনার প্রথা রয়েছে। এই কাহিনীতে দেবী লক্ষ্মীর মাহাত্ম🅺্য এবং তার আশীর্বাদ লাভের জন্য কীভাবে পূজা করতে হয়, তা বর্ণিত থাকে। এটি মূলত ভক্তদের মধ্যে ধর্মীয় এবং নৈতিক শিক্ষা ছড়িয়ে দেওয়ার একটি রীতি।
কলার বউয়ের পূজা
বাংলার কিছু অঞ্চলে লক্ষীপূজার একটি গুরুত্বপূর্ণ রীতি হলো কলার বউ পূজা। এটি আসলে কলাগাছকে লক্ষ্মীর প্রতীক হিসেবে পূজা করার একটি রীতি। কলার বউকে গঙ্গাজল দিয়ে স্নান করি💞য়ে সাদা শাড়ি পরানো হয় এবং দেবী লক্ষ্মী হিসেবে পূজা করা হয়।
আলো ও প্রদীপ জ্বালানো
লক্ষ্মীপূজার সময় মাটির প্রদীপে ঘি বা তেল দিয়ে আলো জ্বালানো হয়, যা পূজার সময় বাড়ির প্রতিটি কোণে রাখা হয়। এই আলো মা লক্ষীর আগমন ও ঘরে সুখ-সমৃদ্ধির প্রতীক। দীপাবলীর সময় লক্ষ্মীপূজা করলে এটি আরও বিশেষ গুরুত্ব পায়, কারণ তখন ♍আলোর উৎসব উদযাপন করা হয়।
বিসর্জন
লক্ষ্মীপূজার শেষে অনেক সম💛য় প্রতীকীভাবে মূর্তিকে পানিতে বিসর্জন দেওয়া হয়। তবে অনেক জায়গায় লক্ষ্মীর মূর্তি স্থায়ীভাবে ঘরে রা🥃খা হয়।