আপনার ঘরের আলমারিতে যে সুতির টি-শার্টটি ফেলে রেখেছেন সেটা তৈরি করতে কত পানি লেগেছে জানেন? ২০ হাজার লিটার। আরও সহজ করে বললে টি-শার্ট বানাতে যে পরিমাণ কাপড় লাগে, সেটির জন্য প্রয়োজনীয় তুলা উৎপাদন করতে ২০ হাজার লিটার ꦰপানি খরচ হয়। এরকম হয়ত আরও অনেক টি-শার্ট সহ জামা কাপড় বা শাড়ি ফেলে রেখেছেন আলমারিতে যেগুলো তৈরি করতে এমন হাজার হাজার পানি ব্যবহৃত হয়েছে। বিশ্বে যে পরিমাণ পানি ব্যবহৃত হচ্ছে তার ২০ শতাংশেই খরচ হচ্ছে ফ্যাশন ইন্ডাস্ট্রিতে। সেই পানি তোলা হয় ভূগর্ভস্থ থেকে। ফলে পানির স্তর নিচꦚে নেমে যায়।
তাছাড়া ইন্টারন্যাশনাল ফিন্যান্স করপোরেশনের (আইএফস🍨ি) গবেষণামতে, প্রতিবছর পোশাকশিল্প কারখানায় পোশাক ও তুলা ধোয়া ও রং করার কাজে ১ হাজার ৫০০ বিলিয়ন লিটার পানি ব্যবহার করা হয়। ব্যবহার করার পর সেই পানি কি করে ভেবে দেখেছেন কী? সেই পানি ফেলা হয় নদী নালাতে। অর্থাৎ যে পানিটা সংগ্রহ করে পানির স্তর নিচে নামিয়ে ফেলা হচ্ছে সেটা নানান রকম কেমিক্যাল দিয়ে দূষিত করার পর ফেলা হচ্ছে নদীতে। আর এই দূষিত পানি নদী বা নালার পানি দূষণ করছে। তাহলে বুঝেন, আপনার আমার ব্যবহৃত কাপড় তৈরি করতে গিয়ে কী পরিমাণ পানির ক্ষতি হচ্ছে।
কাপড় তৈরিতে যে শুধু পানির প্রয়োজন তা নয়। কাপড় প্রস্তুত করতে বা ধুতে পানি ও বিদ্যুৎ লাগে, জ্বালানি লাগে সেটি বিবেচনা করতে হবে। এতো অপচয়ের পর সেই পোশাক যে সব বিক্রি হয় কিংবা ঠিকঠাক ব্যবহার হয় তা না। প্রতিবছর ৮ বিলিয়ন মানুষের জন্য নতুন করে ১০০ বিলিয়ন পোশাক উৎপন্ন হয়। এটি বিশ্বের মোট জনসংখ্যার প্রয়োজনের চেয়ে অনেক বেশি। এর একটা বড় অংশ কখনো বিক্রিই হয় না। গড়ে পাঁচটি উৎপাদিত পোশাকের মাত্র দুটি বিক্রি হয়। তিনটি থাকে অবিক্রীত! আর এসব অবিক্রীত পোশাক ফেলে দেওয়া হয়। এতে যে শুধু আর্থিক ক্ষতি হয় তা না, এসব পোশাক পরিবেশের ক্ষতি হয়। কারণ এসব পোশাক তৈরি করতে গিয়ে যে উপাদান ব্যবহার করা হয় মাটির জন্য ক্ষতিকর ‘মাইক্রো পার্টিকেলস’, যা মাটিকে অনুর্বর করে তোলে। বর্জ্য হয়ে পরিবেশকে করে তোলে বসবꦍাসের অনুপোযোগী।
তারমানে দাড়াঁয় আপনার একটা কাপড়ের পেছনে পানি,💟 মাটিসহ আরও কিছু প্রাকৃতিক সম্পদের অপচয়। আর আপনি সেই পোশাক ফেলে রেখেছেন আলমারিতে। তারপর ট্রেন্ড চলে গেছে বলে ফেলে দিবেন, ট্রেন্ডের সঙ্গে মিলিয়ে নতুন পোশাক কিনবেন। তাতে আপনি হয়ত ভাবছেন তেমন কিছু না, কিছু অর্থের অপচয় হলো মাত্র কিন্তু ভেবে দেখেছেন কী যে কাপড় পরিবেশ দূষণ করছে আপনি সেই দূষিত পরিবেশের বাইরে যেতে পারছে না। ফলে আপনার অতিরিক্ত পোশাক আপনার বিলাসীত♈ায় আপনার জন্য অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ তৈরি করছে।
তাই পৃথিবীকে রক্ষার♌ তাগিদে হলেও আমাদের প্রয়োজনের অতিরিক্ত পোশাক কিনে অপচয় বন্ধ করতে হবে। নিজের এবং ভবিষৎ প্রজন্মের জন্য সুস্থ পরিব💞েশ নিশ্চিত করতে চাইলে প্রয়োজনের বেশি পোশাক নয়।