• ঢাকা
  • রবিবার, ২২ ডিসেম্বর, ২০২৪, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Songbad Prokash

ইনস্টাগ্রাম

টুইটার


লিংকডইন

পিন্টারেস্ট

গুগল নিউজ


‘সাহসের জাদুঘর’ গড়া যাঁর স্বপ্ন


লাবণী মণ্ডল
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৮, ২০২২, ০৪:৩২ পিএম
‘সাহসের জাদুঘর’ গড়া যাঁর স্বপ্ন

প্রকৃতিপ্রেমী মানুষ শাহীন রেজা রাসেলের জীবনই এক লড়াই- বাঁচার জন্য লড়াই। ৩৮ বছর বয়সের এ যুবকের কাজের ভার বয়সের তুলনা♛য় অনেক বেশি। বিপন্ন পৃথিবীকে মুক্ত করার দায় নিয়েছেন। যে দায়বদ্ধতা থেকে একের প🌳র এক নতুনের সন্ধান করে চলেছেন। মাগুরা জেলার শ্রীপুর উপজেলা শহরে ১৯৮৪ সালের ২৭ এপ্রিলে তাঁর জন্ম। সেখানেই বেড়ে ওঠা। নদী-নালায় ভরপুর ছিল শ্রীপুর। গাছপালা। দিগন্ত বিস্তৃত মাঠ। এ যেন স্বর্গ! যেখানে চোখ বন্ধ করে ভাবা যায়— পৃথিবী বড়ই সৌন্দর্যময়। প্রকৃতির সান্নিধ্যেই কেটেছে তার শৈশব, কৈশোর ও যৌবনের একাংশ।

ট্রাভেলিংয়ের শুরু সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘কৈশোর থেকেই ঘুরে বেড়ানোর নেশা𝐆। ২০০০ সাল, তখন ক্লাস নাইনে পড়ি। একদিন কারাতে শিখতে গিয়ে আমার পায়ে কিছুটা দুর্বলতা অনুভব করি। প্রথম দিকে চিকিৎসকরা রোগটি শনাক্ত করতে পারেননি। মাস ছয়েক নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার পর রোগটির অস্তিত্ব শনাক্ত হয়। এরপর কলকাতার বেলভিউ ক্লিনিকের নিউরোলজি বিভাগে দেখাই। সেখানে ডা. অভিজিৎ চ্যাটার্জি আমাকে বলেন তোমার রোগের নাম বেকার মাসকুলার ডিসট্রফি। পৃথিবীর কোথাও এ রোগের কোনো চিকিৎসা নেই। তুমি আগামী ১০ বছরের মধ্যে পঙ্গু হয়ে যাবে। ধীরে ধীরে তোমার সব অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ অকার্যকর হয়ে যাবে। এই রোগ ধীরে ধীরে তোমার মৃত্যু ঘটাবে। ওই বয়সে এই ভয়াবহ সত্যটা আমার কাছে বজ্রপাতের মতো লেগেছিল। সেদিনই সিদ্ধান্ত নিলাম পঙ্গু হওয়ার আগেই সমগ্র বাংলাদেশ ভ্রমণ করব। সে মতোই ট্রাভেলিং শুরু করে দিলাম। বাংলাদেশের প্রায় সব পর্যটন কেন্দ্রেই যাওয়ার সুযোগ হয়েছে আমার। আর জেলা হিসেবে এ পর্যন্ত ৬১টি জেলা ভ্রমণ করেছি। এই শরীরে এখনো চেষ্টা করি ভ্রমণ অব্যাহত রাখার।’

তিনি আরও বলেন, ‘২০১৬ সাল থেকে হুইলচেয়ার ব্যবহার শুরু করি। এ বছর রোগটি আমার হৃৎপিণ্ডকে মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। আমার হৃৎপিণ্ডের রক্ত সঞ্চালন ক্ষমতা এখন মাত্র ৩৬ ভাগ। ধীরে ধীরে হৃৎপিণ্ডের এই ক্ষমতা আরও হ্রাস প꧟াচ্ছে এবং একসময় থেমে যাবে। আর আমাকে নিতে হবে মৃত্যুর স্বাদ। তার আগে যতটা পারি, নিতে চাই জীবনের স্বাদ।’

এমন এক রোগের সঙ্গে বসবাস করে মনোবল শক্ত রাখা কঠিন। হয়তো অসম্ভব! কিন্তু তিনি একবার মনোবল হারালে, দশবার তা ফিরে পান। যখন মানসিকভাবে প্রচণ্ড ভেঙে পড়েন, তখন প্রকৃতির কাছে যান। এর সুবাস নেন। যখন তিনি প্রথম জানতে পেরেছিলেন, তখন কুমার নদের সঙ্গে সময় কাটাতেন। একমাত্র এ নদই তাকে আপন করে নিয়েছিল। ঘুরে বেড়িয়েছেন। বই পড়েছেন। জীবন সম্পর্কে ভেবেছেন। তিনি জানালেন, ‘...মৃত্যুর ওপর আমার কোনো হাত নেই, যে রোগ💜ের চিকিৎসা নেই, তার ওপরেও আমার কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। কাজেই কবে পঙ্গু হব আর কবে মরব, এ নিয়ে ভেবে ভেবে মৃত্যুর আগেই মরে যেতে চাই না। আমি লড়াই করব, জীবনকে যাপন নয় উদ্‌যাপন করব। পৃথিবীতে যেহেতু এসেছি পৃথিবীর জন্য কিছু ꩵএকটা করে যাব, একটা পদচিহ্ন হলেও রেখে যাব। এই ভাবনাগুলো আমার মনোবলকে শক্ত করেছে। তারপর থেকে জীবনকে ভিন্ন চোখে দেখা শুরু করলাম।’

জীবনকে উদ্‌যাপন করতে গিয়ে নানান প্রতিকূলতার মুখে পড়েছেন। তবে দমে যাননি। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের কোনো অবকাঠামোই প্রতিবন্ধীবান্ধব নয়। ভ্রমণকেন্দ্রগুলো তো নয়ই। মানুষের দৃষ্টিভঙ্গিও প্রতিবন্ধীবান্ধব নয়। কাজেই প্রতিটি জায়গায় আমাকে বাধার সম্মুখীন হতে হয় এবং সংগ্রাম করতে হয়। একবার বঙ্গবন্ধুর সমাধি কমপ্লেক্সে গিয়েছি। সেখানে যাওয়ার পর মূল সমাধিসৌধে আমাকে হুইলচেয়ার নিয়ে কোনোভাবেই প্রবেশ করতে দেবে না। আমি তখন প্রতিবাদ করলাম এবং বললাম আমাকে ঢুকতে না দিলে আমি প্রধানমন্ত্রীর কাছে যাব। একপর্যায়ে আমাকে তারা ঢুকতে দিতে বাধ্য হলো। আরেকবার বান্দরবানের নীলাচল পর্যটন কেন্দ্রে গিয়েছিলাম। আমাকে মূল চূড়ায় উঠতে দেওয়া হয়নি। সাধারণত সবাইকে অনেকগুলো সিঁড়ি ভাঙতে হয়, কিন্তু পাশেই একটি গেট আছে যে♑দিক দিয়ে রাস্তা ধরে মূল চূড়ায় ওঠা যায়। অনেক অনুরোধ করার পরও সেই গেটটি খুলে দেয়নি কর্তৃপক্ষ। কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতে বালিয়াড়ি ভেঙে কোনো হুইলচেয়ার আরোহীর পক্ষে সমুদ্রের কাছে পৌঁছানো সম্ভব না। উন্নত দেশে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য বিশেষ রাস্তা করা থাকে। অথচ আমাদের দেশে সেটা কল্পনাও করা যায় না। নৌপথের কথা যদি বলি, কোনো একটি পন্টুন বা জেটি নেই, যেখান দিয়ে একজন প্রতিবন্ধী সুবিধাজনকভাবে নৌযানে উঠতে পারে। একটিও পাবলিক ট্রান্সপোর্ট নেই, যেটি প্রতিবন্ধীবান্ধব।’

এগুলো ক্ষোভ। তবে এরপরও তিনি একের পর এক ইতিহাস গড়ার চিন্তা করছেন। প্রাণ-প্রকৃতির প্রতি তীব্র ভালোবাসা থেকেই এটি সম্ভব হয়েছে। যে মায়াবোধই তাকে এত বড় সাহস-শক্তি জুগিয়েছে। ক্লাস ফাইভে পড়ার সময় তিনি তাঁর বন্ধু পল্লবকে নিয়ে বার্ড ক্লাব গঠন করেন। তারা দুজন মিলে বনে-জঙ্গဣলে ঘুরে বেড়াতেন। পাখি দেখতেন। যারা পাখি মারতেন, তাদের সচেতন করতেন। যেসব শিশু-কিশোর গুলতি দিয়ে পাখি মারত, তাদের প্রতিনিয়ত সচেতন করতেন। প্রকৃতির প্রতি দায়বদ্ধতা যেন তাঁর সহজাত!

পরিবেশ নিয়ে বৃহৎ পরিসরে কাজ শুরু করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির পর। ২০১১ সালে প্র🌼তিষ্ঠা করেন ঢাকဣা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম পরিবেশ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনাবিষয়ক সংগঠন ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পরিবেশ সংসদ’। এরই ধারাবাহিকতায় গড়েছেন ‘পরিবেশ ও জলবায়ু জাদুঘর’।

জাদুঘরটি সম্পূর্ণ পরিবেশবান্ধব উপকরণ দিয়ে তৈরি করা হয়েছে। ঘরটির ভেতরে কাঠের টেবিলের ওপরে নির্দিষ্ট মাপের সারি সারি কৌটা সাজিয়ে রাখা। এসব কৌটার কোনোটিতে রয়েছে বিলুপ্তপ্রায় উদ্ভিদের বীজ। কোনো কোনোটিতে রয়েছে নদীর পানি। আবার কোনোটিতে ভূগর্ভস্থ কঠিন শিলা, গ্রানাইট পাথর, বিভিন্ন ꦅপতঙ্গের বাসা, নানান মাটির নমুনা। দুই শতাধিক উপকরণ স্থান পেয়েছে পরিবেশবান্ধব ঘরটিতে। ঘরের ভেতরের দেয়ালে জলবায়ু পরিবর্তন ও জলবায়ু পরিবর্তনের কারণ, পরিবেশ ও পরিবেশদূষণ, দুর্যোগ, সমুদ্র, পাখি, বাস্তুতন্ত্র, প্রাণী, উদ্ভিদ ইত্যাদি তথা জলবায়ু পরিবর্তনের প্রাসঙ্গিক বিষয়গুলোকে সচিত্র তথ্যের মাধ্যমে সাবলীলভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। যেন দর্শনার্থীরা পরিবেশ ও জলবায়ু বিষয়ে সম্যক ধারণা পেতে পারেন। নিভৃত পল্লির ছোট্ট এই জাদুঘরটি দেখতে প্রতিদিনই দূরদূরান্ত থেকে মানুষ ছুটে আসছে। তবে এসব দর্শকে♍র বেশির ভাগই বিভিন্ন স্কুল ও কলেজের শিক্ষার্থী। প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত দর্শনার্থীদের জন্য খোলা রাখা হয় জাদুঘরটি।

শাহীন রেজা রাসেল সম্পর্কে বলতে গিয়ে আবৃত্তি সংগঠন ‘বৈঠক’-এর 🐻প্রধান নির্বাহী হাসান মাহাদী বলেন, “শাহীন রেজা রাসেল একজন অদম্য ইচ্ছাশক্তির মানুষ। দমন করা যায় না এমন একজন মানুষ। তিনি যখন বেকার মাসকুলার ডিসট্রফি রোগের বিষয়ে নিশ্চিত হলেন, তার পরে সাধারণত ভেঙে পড়ার কথা, হতাশ হওয়ার কথা; কিছুদিন তিনি হতাশও ছিলেন। তার পরই ঘুরে দাঁড়ালেন। এই রোগটি নির্ণয় হওয়ার পরই কিন্তু তিনি সাতটি কাব্যগ্রন্থ লিখেছেন, যা বাংলা সাহিত্যকে সমৃদ্ধ করেছে। আমরা যখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, তখন তিনি কিন্তু বেকার মাসকুলার ডিসট্রফি রোগে আক্রান্ত। এই আক্রান্ত অবস্থাতেই তি♛নি কীভাবে পরিবেশ রক্ষা করা যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে, সেই দূরদর্শিতা, সুচিন্তা মাথায় রেখে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতিষ্ঠা করেন ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পরিবেশ সংসদ’। তারুণ্যের উন্মাদনা প্রতিনিয়ত কাজ করে তার মধ্যে, প্রতিটি ক্ষণে। আমি অসংখ্য সৃষ্টিকর্মের জন্য ওনার পাশে থেকেছি। তার মধ্যে হতাশাবোধ খুবই কম।”

তিনি আরও বলেন, ‘প্রতিদিন নতুন করে ভাবতে শিখেছেন। তার সবচেয়ে বড় শক্তি হলো ইতিবাচক করে ভা🎉বতে জানেন। বিশ্বে জলবায়ু কিংবা পরিবেশ আক্রান্তে বাংলাদেশ যে অন্যতম, সেটা আমরা জানি। তবে এখানে শাহীন রেজা রাসেল ব্যতিক্রম। কারণ তিনি এগিয়ে এসে উদ্যোগ নিয়েছেন। ‘সাহসের জাদুঘর’ নামে একটি জাদুঘর করার স♛্বপ্ন দেখেন তিনি। যেখানে অনেক হতাশ মানুষ, জীবন যায় যায় মুহূর্তের মানুষ জাদুঘরের একপাশ দিয়ে ঢুকবে, আরেক পাশ দিয়ে বের হবে সাহস নিয়ে। যেখানে স্টিফেন হকিংয়ের মতো একজন মানুষ হুইলচেয়ারে একজন প্রতিবন্ধী হয়ে কীভাবে বিশ্ব জয় করেছিলেন, কীভাবে অসাধারণ সব কাজ করেছেন! এ রকম চমৎকার কিছু কাজ, উদাহরণ রেখে যদি সাহসের জাদুঘর করা যায়, সেটিও হবে এক অসাধারণ কাজ।’

শাহীন রেজা রাসেল ২০০৮ সালে প্রথম পরিবেশ ও জলবায়ু জাদুঘর প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনা করেন। বাংলাদেশ যেহেতু জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর একটি, সেহেতু এমন একটি প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশেই হওয়া উচিত বলে তিনি সব সময় ভাবতেন। কিন্তু অর্থ, উপযুক্ত জায়গা ও পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে কাজটি বাস্তবায়ন করা তখন 🌟সম্ভব হয়নি বলে জানান তিনি। আরও বলেন, ‘আমার ইচ্ছা ছিল জাদুঘরটি ঢাকাতে করব, যাতে দেশের সর্বপ্রান্তের মানুষ এটি পরিদর্শন করতে পারে এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনের সঙ্গে যোগাযোগটা সহজ হয়। কিন্তু ঢাকায় এটি তৈরি করার মতো অর্থ বা জায়গা আমার নেই।...’

২০২১ সাল থেকে শ্রীপুরে রয়েছেন শাহীন রেজা রাসেল। যার ভেতরে স্বপ্ন বোনা এবং স্বপ্ন বাস্তবায়নের বীজ বপন একবার হয়, তাকে দমানো যায় না। তিনি সেখানে বসেই 𒁏ভাবেন গ্রামেই ‘পরিবেশ ও জলবায়ু জাদুঘর’ প্রতিষ্ঠা করবেন। কিন্তু একে ছড়িয়ে দিতে চান সারা দেশে। তিনি এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘আমার ইচ্ছা, পর🌄িবেশ ও জলবায়ুসংক্রান্ত সব তথ্য এবং ডেমোনেস্ট্রেশন এখানে থাকবে, পৃথিবীর সব দেশের মাটি, সব সমুদ্র-হ্রদ-নদীর পানি, সব প্রজাতির গাছের পাতা, সব ধরনের প্রাণীর মমি, সব ফুল-ফলের বীজ, সব খনিজ পদার্থের নমুনা, জলবায়ু, আবহাওয়া, সৌরজগৎ, গ্রহ নক্ষত্র, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব ইত্যাদির ডেমোনেস্ট্রশন এই জাদুঘরে থাকবে। আমি কাজ করে চলেছি। আমি হয়তো আর বেশি দিন নেই পৃথিবীতে। কিন্তু আমার মৃত্যুর পরেও যাতে সরকার, আন্তর্জাতিক সংস্থা এবং মানুষের সহযোগিতায় জাদুঘরটি টিকে থাকে এবং সারা পৃথিবীতে আলো ছড়ায়, সেটাই আমার একমাত্র প্রত্যাশা।’

এ ছাড়া শাহীন রেজা রাসেল প্রতিনিয়ত লিখছেন। গান, কবিতা আছে তার অস্তিত্বজুড়ে। যুক্ত রয়েছেন আবৃত্তি সংগঠন ‘বৈঠকে’র সঙ্গে। যেটির সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন। এই সৃষ্টিশীলতার মোহ তাকে বাঁচিয়ে রাখার প্রেরণা জোগায়। তা না হলে এমন অসুস্থ শরীর নিয়ে বছরের পর বছর উদ্‌যাপন করা কঠিন! লেখালেখি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমি ছোটকাল থেকেই লেখালেখি করি। ছোটবেলায় বিভিন্ন পত্রিকার শিশু পাতায় আমার ছড়া ছাপা হতো। যত বড় হয়েছি, তত বেশি লেখালেখির প্রতি ভালোবাসা বেড়েছে। ২০০৮ সালে আমার প্রথম কবিতার বই প্রকাশ পায়। এখন পর্যন্ত আমার ৮টি কাব্যগ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে। সাংস্কৃতিক এবং সাংগঠনিক চর্চার শুরুও ছোটবেলা থেকেই। জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহে সংস্কৃতির নানা শাখায় অসংখ্য পুরস্কার পেয়েছি। ২০০৫ সালে বন্ধুদের নিয়ে মাগুরার শ্রীপুরে প্রতিষ্ঠা করি প্রজ্জলন নামক সংগঠন। ২০০৯ সালে প্রতিষ্ঠা করি তীরন্দাজ নাট্যদল, ২০১১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পরিবেশ সংসদ। বর্তমানে বাংলাদেশের প্রথম সারির আবৃত্তি সংগঠন ‘বৈঠক’-এর সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছি। আমি এ পর্যন্ত ৫টি মঞ্চনাটক, ১৪টি পথনাটক ও একটি টিভি নাটক রচনা করেছি। গা🙈ন লিখি, সুর 🅘করি, আবার গেয়ে ফেলার দুঃসাহসও দেখাই।’

ভবিষ্যতে কী করতে চান, এমন প্রশ্নে জবাবে তিনি জানান, ‘আর হয়তো অল্প কয়েকটা দিন আছি পৃথিবীতে। যে কটা দিনই থাকি সৃজন আনন্দে যেন বাঁচি, পৃথিবীর সবটা না হলেও কিছুটা যেন ঘুরে দেখতে পারি এবং মানুষের জন্য যেন কিছু করতে পারি, সেই স্বপ্ন📖 দেখি।’ কী নির্মম পরিহাস! মৃত্যুর মতো সত্য আর কিছু নেই। কী অবলীলায় তিনি তা বলে দিলেন! এটাই জীবনের শক্তি, যা মৃত্যু চিন্তা থেকে অনেক বেশি শক্তিশালী।

তিনি বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির সহকারী পরিচালক হিসেবে কর্মরত আছেন। প্রাণ-প্রকৃতির সঙ্গে তার যে সখ্য, তা জীবন-মৃত্যুর চেয়েও গভীর। তিনি হয়তো♎ থাকবেন না। তবে তার কাজ, সৃষ্টিশীলতা থেকে যাবে। যার মাঝে টিকে থাকবেন তিনি। টিকে থাকবে জীবনের জয়ধ্বনি।

Link copied!
JeetBuzz
৳1,077 Slot & Fishing Bonus
18+ | Play Responsibly | gamblingtherapy.org | T&Cs Apply
  • Industry-leading odds and gameplay
  • 24/7 professional customer service team
  • Diverse and rich promotional bonuses
Show More
Jeetbuzz - Where Bangladesh Bets and Wins! As the trusted and internationally recognized betting platform, we combine legal integrity with a thrilling variety of casino games to deliver the ultimate gaming experience for cricket enthusiasts. Join us for secure bets, unbeatable offers, and top-notch customer service that sets us apart