জনপ্রিয় স💧ংগীতশিল্পী কনক চাঁপা। গানে খুব একটা এখন দেখা না গেলেও। যার গান এখনো কোটি শ্রোতার মুখে মুখে মুখরিত হয়ে আছে। কনকচাঁপা সামাজিক মাধ্যমেও সরব।
সম্প্রতি ফেসবুকে ‘এক জোড়া লꦺাল জুতা, একটি বোকা মেয়ে ও সোনার শৈশব’ শিরোনামে একটি লেখা লিখেছেন কনক চাঁপা। লেখায় উঠে এসেছে তার ছোটবেলার ঈদ, প্রিয় রঙের জুতা ও পরিবারের সঙ্গে কাটানো স্মৃতি।
‘বাবার খু⛄ব লাল রঙ পছন্দ ছিলো। তার আঁকা ছবিতে লাল রঙের আধিক্য থাকতো প্রচ্ছন্ন ভাবে। আমি অনেক পরে বুঝেছি লাল রঙ আমারও খুব পছন্দ। আমি অবশ্য অনেক কিছুই অনেক পরে টের পাই। আমি বেশি ভাগ ব্যাপারেই একটু বোকা কিসিমের। ইদানীং অবশ্য অনেকে স্পষ্টতই বলে আমি উচ্চমানের বোকা। যাক জীবন তো এভাবেই পার হয়ে গ﷽েছে, বোকা উপাধিতে আমার কোনো অসুবিধা নাই। এবার সেই গল্পটি বলি।
কোন এক ঈদে এ🐲কজোড়া জুতা পাওয়ার ভাগ্য হলো। ঈদের জামা রোজবছরে পেলেও জুতা পাওয়া বিরল ভাগ্য ছিলো আমাদের মত মধ্যবিত্ত (নিম্ন মধ্যবিত্ত কারণ সৎ কর্মকর্তার সংসার কখনই সচ্ছল হওয়ার কথা না)পরিবারের সন্তানদের জন্য।’
‘আমাদের সময় বাটার জয়জয়কার ছিলো। বাটা কো✅ম্পানি একবার একটা বিজ্ঞাপন দিয়েছিল যে বাটার জুতা সবচেয়ে ভালো এমন গল্পের ছবি আঁকলে উপহার হিসেবে অনেক জুতা পাওয়া যাবে। সেবღার কতই না ছবি আঁকলাম! বলাই বাহুল্য সে ছবিগুলো আর বাটা কোম্পানি পর্যন্ত পৌঁছায়নি।’
‘তো দোকানে গেছি জুতা কিনতে, আব্বা-আম্মা ঘুরেফিরে সেই লাল একজোড়া জুতা পছন্দ করলেন।🍸 আমার পায়ে যে জুতা লাগছে ঠিকঠাক তারচেয়ে বড় একজোড়া জুতা। সুন্দর ফুলতোলা 🐼বকলস ওয়ালা পেছনে একটু শক্ত উঁচু ব্লকহিলের মত। চকচকে অপূর্ব সে জুতা। বাড়ি বয়ে এনে ঈদের আগের রাত পর্যন্ত তা বিছানার বালিশের পাশে রেখে ঘুমালাম। ঈদের দিন পায়ে দেয়ার সময় আব্বা জুতার ডগায় তুলা গুঁজে দিলেন। কি সুন্দর অনুভূতিই না হচ্ছিলো! মনে হচ্ছিলো আমি যেন পৃথিবীর সবচাইতে ধনী মানুষের কন্যা।’
‘সারাদিন জুতা পরে পায়ে ফোসকা পড়লো। ঈদ গেলো। জুতা ধীরেಌ ধীরে নরম হল। বছর পার হলো। জুতার ডগায় তুলা দেওয়া বন্ধ হলো। ওই এক জুতা পরেই স্কুল, বেড়ানো, গানের অনুষ্ঠানে যাওয়া। কখনওই মনে হয়নি মাত্র এক জোড়া জুতা! যখনি পরেছি তখনই নিজেকে গর্বিত মনে হয়েছে। বছর পার হলেও আলন𒈔ার পাদানীতে জুতার বাক্স ও গোছানো থাকতো।’
‘দুই বছর পর জুতায় পায়ের আঙ্গুল আর আঁটছিল না। আঙ্গুল মুচড়ে তবুও ওই জুতা পায়ে দেই। একদিন মা বললেন, অনেক হইসে ওই জুতা আর কাউকে দিয়ে দাও। কারণ, জুতা তখনও ভালো ছিলো! আম্🔴মার সিಌদ্ধান্তে আমি শোকে নিমজ্জিত হই।’
‘কয়েকদিনের ভাবনায় বুদ্ধি বের করে ঘরের পাশের ছোট্ট পুকুরে জুতা জোড়া ডুবিয়ে দেই আর চোখের জলে ভ♍াসি! আহা! কি কচি কচি কিন্তু দুঃখ আমার! আমার লাল জুতা! তাকে আমি ভুলতেই পারিনা! কিছুদি🅠ন পর দেখি পুকুরের যে পাশে জুতা ফেলেছিলাম ওই পাশেই চাঁদমালা ফুলে ভরে গেছে। আমি ভাবি আমার লাল জুতা ফুল হয়ে ফুটে উঠেছে কিন্তু ফুল তো লাল হওয়ার কথা, ফুল সাদা কেনো?’
‘অথচ ওই জুতা যে পরের দিনই ভেসে উঠেছে আর আম্মা ও রত্না আপা পুরো গল্প বুঝে গেছেন এবং তা পাশের বাড়ির ইয়াসমিনকে দিয়ে দিয়েছেন। আমি তা একদমই বুঝিনি! আমি আসলেই বোকা! তখনও ছিলাম এখনো আছি। এ নিয়ে দুঃখ নেই কিন্তু দুঃখ এই যে এখন এমন হাজার জুতা কিনলেও তা পরার মত পা আমার নেই। নেই আমার সোনার শৈশব! আমি চালাক হতে চাইনা।’