বুসান আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব জয় করল ভারতের আসাম রাজ্যের নারী🌺 নির্মাতা রিমা দাস। সেরা সিনেমার খেতাপ পেল তার পরিচালনার সিনেমা ‘ভিলেজ রকস🌌্টারস টু’। শুক্রবার (১১ অক্টোবর) রাতে বুসান সিনেমা সেন্টারের বিআইএফএফ আউটডোর থিয়েটারে সমাপনী অনুষ্ঠানে পুরস্কার প্রদান করা হয়। ২৯তম আসরে জিসোক বিভাগের প্রথম পুরস্কার জিতলো সিনেমাটি।
অসমিয়া ভাষায় নির্মিত ‘ভিলেজ রকস্টারস টু’ হলো ‘ভিলেজ রকস্টারস’ (২০১৭) চলচ্চিত্রের সিক্যুয়েল। ছোট্ট ꦆঅজপাড়াগাঁয়ের কিশোরী ধুনুর রকতারকা হওয়ার স্বপ্নকে কেন্🐻দ্র করে সিনেমার গল্প আবর্তিত।
নন্দিত নির্মাতা রিমা দাসের জন্ম ও বেড়ে ওঠা ভারতের আস𒁏াম রাজ্যে। তিনি একজন স্বশিক্ষিত চলচ্চিত্র নির্মাতা। পরিচালনার পাশাপাশি নিজের সিনেমার গল্প লেখা, চিত্রগ্রহণ ও সম্পাদনা একা হাতেই করেন ত✤িনি। তায় বয়স ৪৭ বছর।
বুস🌜ানে এবার জিসোক বিভাগে বিচারক ছিলেন কান চলচ্চিত্র উৎসবের সিনেমা বিভাগের পরিচালক ক্রিস্টিয়ান জেন, শ্রীলঙ্কান পরিচালক প্রসন্ন ভিথানাগে ও দক্ষিণ কোরিয়ান পরিচালক শিন সুয়োন। ‘ভিলেজ রকস্টারস টু’ প্রসঙ্গে তারা আরও বলেছেন, ‘একটি অল্পবয়সী মেয়ের সংগ্রাম ও দৃষ্টির মাধ্যমে প্রকৃতি আর মানবজাতির মধ্যে সাদৃশ্য দেখিয়েছে ছবিটি।’
‘ভিলেজ রকস্টারস টু’র গল্প কিশোরী ধুনুকে কেন্দ্র করে আবর্তিত। রকতারকা হওয়ার স্বপ্নে একদল ছেলের সঙ্গে তার বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে। আগের গল্প যেখানে শেষ হয়েছিল, নতুন কিস্তির শুরুটা সেখান থেকে। আসামের ছোট্ট অজপাড়াগাঁয়ে থাকে ✅ধুনু। তার মা শয্যাশায়ী। কঠোর পরিশ্রমের কারণে তিনি দুর্বল হয়ে পড়েন। ধুনুর বড় ভাই একটি মোটরসাইকেলের জন্য ক্রমাগত মাকে পীড়া দিতে থাকে। কৈশোরের শেষপ্রান্তে চলে এলেও ধুনু এখনও গাছে চড়ে, সাঁতার কাটে এবং সবচেয়ে বড় কথা, নিজের রক ব্যান্ডে একজন গিটারিস্ট হিসেবে হেসেখেলে জীবন কাটানোর স্বপ্ন দেখে। কিন্তু চাইলেই তো আর হবে না। নিয়তি বলেও একটা বিষয় আছে। জীবনের অম্লমধুর সময়ের মুখোমুখি হওয়ার সঙ্গে ধুনু এককালের সুখী শৈশবকে পেছনে ফেলে আসার দ্বারপ্রান্তে এসে দাঁড়ায়।
ধুনু চরিত্রে আবারও অভিনয় করেছেন ভনিতা দাস। তার মায়ের ভূমিকায় ফিরেছেন বাসন্তি দাস। আর বড় ভাইয়ের 🍌চরিত্রে মানবেন্দ্র দাসকে ফের দেখা গেছে।
বুসানের জিসোক বিভাগে পুরস্কার জয়ী তৃতীয় ভারতীয় রিমা দাস। এর আগে অপর্ণা সেন (দ্য রেপিস্ট, ২০২১) ও মেঘালয় রাজ্যের নির♐্মাতা প্রদীপ কুরবাহ (মার্কেট, ২০১৯) এই স্বীকৃতি পেয়েছেন।
বুসান চলচ্চিত্র উৎসবের প্রয়াত প্রোগ্রাম ডিরেক্টর কিম জিসোক স্মরণে প্রদান করা হয় জিসোকﷺ পুরস্কার। কমপক্ষে তিনটি চলচ্চিত্র পরিচালনা করা এশিয়ার প্রতিষ্ঠিত নির্মাতাদের নতুন কাজ জায়গা পেয়ে থাকে এই বিভাগে।
পুরস্কারটি জিতে উচ্ছ্বসিত রিমা দাস বলেন, ‘এশিয়ান সিনেমার উন্নয়নে নিবেদিত একজনের সম্মানে প্রদান করা পুরস্কার পাওয়া সত্যিই সম্মানের।’ তিনি যোগ করেন, ‘আমাদের রাজ্যে সৌন্দর্য খুঁজে পাওয়ায় বিচারকদের ধন্যবাদ। আমাদের জায়গা করে দেওয়ায় বুসান আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের কাছে কৃতজ্ঞ থাকবো। আমি প্রত্যেকের কাছে কৃতজ্ঞ যারা আমাকে অনুপ্রাণিত করেন, আমাকে এগিয়ে যাওয়ার কথা মনে করিয়ে দেযন ও গল্প বল🌺ার জাদুতে বিশ্বাস রাখেন। গত চার বছর ধৈর্য ধরে রাখায় ভনিতা দাসসহ সব অভিনয়শিল্পী, পুরো ইউনিট, আমার পরিবার ও সহ-প্রযোজক ফ্রান বোর্গিয়াকে বিশেষ ধন্যবাদ।’
ভারতের অসমিয়া ভাষায় নির্মি🐻ত ‘ভিলেজ রকস্টারস টু’ হলো সাত বছর আগে মুক্তি পাওয়া রিমা দাসের ‘ভিলেজ রকস্টারস’ চলচ্চিত্রের সিক্যুয়েল। আগের ছবিটির উদ্বোধনী প্রদর্শনী হয় ২০১৭ সালে টরন্টো আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে। ২০১৮ সালে ভারতের ৬৫তম জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে সেরা পূর্ণদৈর্ঘ্য কাহিনিচিত্র হিসেবে স্বর্ণ🅠কমল পুরস্কার জিতেছে ছবিটি। এছাড়া সেরা শিশুশিল্পী, সেরা লোকেশন শব্দগ্রাহক ও সেরা সম্পাদনা বিভাগে ভারতের ৬৫তম জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছে এটি। এরপর ৯১তম অস্কারে ভারত থেকে মনোনীত হয় ছবিটি।
‘ভিলেজ রকস্টারস’ ছিল রিমা দাসের প্রথম পূর্ণদৈর্ঘ্য কাহিনিচিত্র। এর গল্প তিনি নিজেই লিখেছেন। এছাড়া চিত্রগ্রহণ, সম্পাদনা ও সহ-প্রযোজনার দায়িত্ব সামলেছেন। তার পরিচালিত দ্বিতীয় ছবি ‘বুলবুল ক্যান সিং’ বার্লিন আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে জেনারেশন ফোর্টিন প্লাস ইন্টারন্যাশনাল জুরি থেকে স্পেশাল মেনশন পেয়েছে। তার প্রথম দুটি ছবি বিশ্বের ১২০টি চলচ্চিত্র উৎসবে প্রদর্শিত হয়েছে এবং ৭০টღির বেশি পুরস্কা♈র পেয়েছে।
রিমা দাস পরিচালিত তৃতীয় চলচ্চিত্র “তোরা’স হাজব্যান্ড’ ২০২২ সালে টরন্টো আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের প্ল্যাটফর্ম প্রাইজ বিভাগে নির্বাচিত হয়। এরপর বুসান আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের অ্যা উইন্ডো অন এশিয়ান সিনেমা বিভাগে এর এশিয়ান প্র♌িমিয়ার হয়েছে।