১০ ডিসেম্বর নড়াইল মুক্ত দিবস। 🎃১৯৭১ সালের এই দিনে মুক্তিযোদ্ধারা পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীকে সম্মুখ যুদ্ধে পরাজিত করে নড়াইলকে মুক্ত করেছিলেন।
এপ্রিল মাসের প্রথম সপ্তাহে নড়াইলের তৎক♕ালীন এসডিও কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী, এমএনএ খন্দকার আব্দুল হাফিজ,🐽 আওয়ামী লীগ নেতা এখলাছ উদ্দিন, বিএম মতিয়ার রহমান লোহাগড়া হাইস্কুলে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধাদের একটি বিশাল দল নিয়ে যশোর অভিমুখে যান।
৬ এপ্রিল সকালে পাক হানাদার বাহিনী দুটি জেট বিমান থেকে নড়াইল শহরে মেশিনগানের গুলি ও বোমা নিক্ষেপ করে। এতে নড়াইলের প্রচুর ক্ষতি হয় এবং শহর জনমানবশূন্য হয়ে পড়ে। ১৩ এপ্রিল হানাদার বাহিনী💮র একটি দল নড়াইল শহরের চৌরাস্তায় রেস্টুরেন্ট মালিক মন্টুকে গুলি করে আহত করে এবং হরিপদ সরদার, ভাটিয়া গ্রামের কালু বোস, সরসপুর গ্রামের প্রফুল্ল মিত্রকে ধরে নিয়ে দাইতলা পুলের কাছে গুলি করে ফেলে রেখে যায়। পাকিস্তানি বাহিনী ২৩ মে ইত💮না গ্রামে ঢুকে নৃশংস হত্যাযজ্ঞ চালায়। সেদিন ওই গ্রামের ১৯ নারী-পুরুষকে হত্যা করে। নির্বিচারে হত্যার পাশাপাশি বাড়ি-ঘরে আগুন ধরিয়ে দেয় এবং লুটতরাজ করে।
পরে মুক্তিযোদ্ধারা নড়াইলে ঢুকে লোহাগড়া থানা পাক হানাদার বাহিনীকে ৬ ডিসেম্বরের মধ্যে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেয়। পাকিস্তানি বাহিনী আত্মসমর্পণ না🦄 করায় ৮ ডিসেম্বর মুক্তিযোদ্ধারা সম্মিলিতভাবে তিন দিক থেকে লোহাগড়া থানা আক্রমণ করেন। প্রচন্ড যুদ্ধের পর হানাদার বাহিনী আত্মসমর্পণ করে। এদিন লোহাগড়া শত্রুমুক্ত হয়। এরপর মুক্তিযোদ্ধারা নড়াইলের হানাদার বাহিনীর ঘাঁটির দিকে অগ্রসর হতে থাকে।
৭ ডিসেম্বর এস এম ফজলুর রহমান জিন্নাহর নেতৃত্বে নড়াইল সরকারি ভিক্টোরিয়া কলেজের দক্ষিণে মাছিমদিয়া গ্রামে সমবেত হয়ে পুলিশ-রাজাকারদের ওপর অতর্কিত হামলা চালান তরুণ মুক্তিযোদ্ধারা। এসময় লোহাগড়ার জয়পুরের মিজানুর রহমান পাকিস্তানি বাহিনীর হাতে শহীদ হন। এ ঘটনার পর ৯ ডিসেম্বর কমান্ডার ফজলুর রহমান জিন্নাহ, আমির হোসেন, উজির আলী, শরীফ হুমায়ুন কবীর, আব্দুল হাই বিশ্বাসের নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধারা বর্তমান নড়াইল সরকারি ভিক্টোরিয়া কলেজের দক্ষিণ দিক থেকে আক্রমণ চালায়। পা🎃ল্টা আক্রমণে মো. নজির হোসেন মোল্যার নেতৃত্বাধীন বাগডাঙ্গা গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা মতিয়ার রহমান শহীদ হন।
ওই দিনই শহরের পানি উন্নয়ন বোর্ডের বাংলোতে অবস্থানরত ৪০ জন পাকিস্তান মিলিটারিকে আত্মসমর্পণের🗹 নির্দেশ দিলে তারা আত্মসমর্পণে অস্বীকৃতি জানায়। এসময় মুক্তি বাহিনীর সদস্যরা চতুর্দিক থেকে প্রচণ্ড হামলা চলান। পরে পাকিস্তানি বাহিনী আত্মসমর্পণে বাধ্য হয়।
তীব্র শীতকে উপেক্ষা করে মুক্তিযোদ্ধারা সারা রাত শহরে বিজয় উল্লাস করতে থাকেন ও জয় বাংলা স্লোগানে শহর প্রকম্পিত করে তোলেন। ১০ ডিসেম্বর দুপুর ১টা ১৫ মিনিটে নড়াইলক🐎ে পাকিস্তান হানাদার মুক্ত ঘোষণা করেন।
মুক্ত দিবস উপলক্ষে জেলা প্রশাসন, মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিল, চিত্রা থিয়েটার বিভিন্ন কর্মসূচ꧟ি নিয়েছে।
এর মধ্যে সকালে মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ, বধ্যভূমি ও গণকবরে শ্রদꩵ্ধা নিবেদন, বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালে পুষ্পস্তবক অর্পণ, আলোচনা সভা, শোভাযাত্♊রা হবে।
এছাড়া সন্ধ্যায় মোমবাতি প্রজ্বালন, রচনা প্রতিযোগিতা ও জারি গানের আয়োজন কর🥂ার কথা রয়েছে।