• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১, ১৫ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Songbad Prokash

ইনস্টাগ্রাম

টুইটার


লিংকডইন

পিন্টারেস্ট

গুগল নিউজ


গণমাধ্যমের নাম বাংলা-ইংরেজির সংমিশ্রণ কেন


জাহিদ রাকিব
প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ২০, ২০২৩, ০৭:১৭ পিএম
গণমাধ্যমের নাম বাংলা-ইংরেজির সংমিশ্রণ কেন

বাংলাদেশের সংবিধান কেবল ‘বাংলা’ ভাষাকেই রাষ্ট্রের একমাত্র সাংবিধানিক ভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। এ ভাষা টিকিয়ে রাখতে অনেকের প্রাণও ঝরেছে। এ ভাষার সঠিক ব্যবহার করা দেশের প্রত্যেক নাগরিকের নৈতিক দায়িত্ব। কিন্তু বর্তমান সময়ে এই গর্বের ভাষা ꧒নিয়ে অনেক স🌸ংমিশ্রণ দেখা দিয়েছে। গণমাধ্যমসহ প্রায় সব বিভাগেই এই মিশ্রতা দেখা যাচ্ছে।

উচ্চ আদালতের নির্দেশে সাইনবোর্ড ও বিলবোর্ডে বাংলা লেখার নির্দেশনা ছিল অনেক আগে থেকে। কিন্তু প্রতিষ্ঠানগুলোর নাম 🎶বাংলা ও ইংরেজির সংমিশ্রণ বন্ধে আদালতের নেই সুনির্দ෴িষ্ট নির্দেশনা। বেসরকারি শিল্পপ্রতিষ্ঠানের মতো দেশের প্রায় সব গণমাধ্যমের নামের ক্ষেত্রে দেখা যায় বাংলা ও ইংরেজির সংমিশ্রণ।

গণমাধ্যমগুলোর অনলাইন ও টিভির বেশির ভাগ মানের ক্ষেত্রে দেখা যায়, বাংলা শব্দের সঙ্গে ইংরেজির শব্দ দিয়ে রাখা হয়েছে নাম। এর আবার ব্যতিক্রমও দেখা যায় বেশ কিছু গণমাধ্যমের নামের ক্ষেত্রে। অনꦗেকগুলো দৈনিক পত্রিকা, অনলাইন ও টিভির নামের ক্ষেত্রে দেখা যায় বাংলার পূর্ণ ব্যবহার। বাংলা ভাষার পূর্ণ ব্যবহার নিয়ে যে গণমাধ্যমে বারবার দাবি ওঠে, সেই গণমাধ্যমগুলোর নিজেদের নামের ব্যবহারের ক্ষেত্রে যে ত্রুটি, তা নিয়ে কেন আলোচনা হয়নি। এমনটি দাবি করেছেন অনেকে।

অনলাইন নিউজ পোর্টালগুলোর ক্ষেত্রে দেﷺখা যায়, বাংলা ইংরেজির সংমিশ্রণে যা ইচ্ছে, তাই করে নাম ঠিক করা হয়েছে। বাংলা নামের সঙ্গে ইংরেজি শব্দের সমন্বয়ে নাম রাখা এমন কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কথা হয় সংবাদ প্রকাশের।

প্রতিষ্ঠানগুলোর কেউ বলছেন, দেশের গণমাধ্যমগুলোর নাম বাংলা ও ইংরেজির যে মিশ্রণ, তা আসলে ওইভাবে কখনো চিন্তা করে দেখা হয়নি। আবার কেউ ব🎃লছে নিজেদের আত্মবিশ্বাসের অভাবে বাংলাভাষী একটি দেশ হয়েও আমরা প্রতিষ্ঠান করতে গিয়ে ভাবছি আমরা তো আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান করছি। ফলে আমাদের ইংরেজি নাম দিতে হবে বলেই আজকে বাংলা-ইংরেজির সংমিশ্রণে গণমাধ্যমের নামকরণ করা হচ্ছে।

এ বিষয়ে এখন টেলিভিশনের প্রধান সম্পাদক (এডিটরিয়াল চিফ) তুষার আব্দুল্লাহ বলেন, “আমাদের যারা গণমাধ্যমের উদ্যেক্তা বা যারা পরিচালনা করেন, তারা নিজের ভেতরে আত্মবিশ্বাসের অভাব বোধ করেন। তারা সংশয়ে থাকেন তাদের শ্রোতা ও দর্শক কারা। আমরা বাংলাভাষী একটি দেশ সেখানে আমাদের ভোক্তাও বাংলাভাষী। উদ্যোক্তাদের লক্ষ্য হওয়া উচিত ছিল যে আমরা সাধারণের কাছে মাতৃভাষার মাধ্যমে পৌঁছাব। আমরা একটা টেলিভিশন বা পত্রিকা করতে গিয়ে ভাবি, আমরা তো আন্তর্জাতিক টেলিভিশন করছি। কিন্তু আমরা তো আন্তর্জাতিক টে🔯লিভিশন করছি না। আমাদের যারা পাঠক বা শ্রোতা আছেন, তারা সবাই বাংলাদেশি। এ বিষয়টি সবাই মুখে মুখে বললেও কাজেকর্মে ভিন্নতা দেখা যায়। অনেকে যা করছেন, সবকিছুতেই ইংরেজি🍌র ছোঁয়া লাগছে। এ হচ্ছে আমাদের গণমাধ্যমের অবস্থা।”

বাংলা-ইংরেজির সংমিশ্রণের সমালোচনা করে তুষার আব্দুল্লাহ বলেন, “বাংলাদেশের একটি পত্রিকা ও টেলিভিশনের উদ্যোক্তারা ভাবেন একটা ইংরেজি নাম দিলেই আন্তর্জাতিক মান পাবে। কিন্তু আমি ব্যক্তিগতভাবে দেখেছি বাংলা নাম দিয়ে দুটি প্রতিষ্ঠান শুরু করেছি। সেখানে সাধারণ মানুষের অনেক বেশি সাড়া পেয়েছি। তাই আমি মনে করি, সব জায়গায় বাংলার ব্যবহার নিশ্চিত 𝓡হলে বাংলা ভাষার পরিপূর্ণ মর্যাদা পাবে।”

এ বিষয়ে এটিএন নিউজের হেড অব নিউজ প্রভাষ আমিন সংবাদ প্রকাশকে বলেন, “গণমাধ্যমের নাম বাংলা হলে ভালো হতো। আজকে আমরা যারা সংবাদমাধ্যমে কাজ করি তাদের কিছু করার নেই। মালিকপক্ষকে যদি আমরা বলি আপনার প্রতিষ্ঠান নাম পরিবর্তন করেন। তাহলে তিনি কখনো পরিব🦋র্তন করবেন না। এ জন্য আমরা যদি চাকরি ছেড়ে দিই, তাহলে বেকার থাকতে হবে।”  

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস সংবাদ প্রকাশকে ব𒀰লেন, “বাঙালি পৃথিবীর মধ্যে একমাত্র জাতি, যারা নিজের ভাষার জন্য জীবন দিয়েছে। এই রক্ত দেওয়া, জীবন দেওয়া এটা যেমন একদিকে আবেগের, অন্যদিকে যুক্তিরও। স্বাধীন দেশ, জাতীয় পতাকা, জাতীয় সংগীত, সংবিধান, ভূখণ্ড ও একটি আধুনিক গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র পেলাম। কিন্তু বাংলা ভাষার প্রতি সাধারণ মানুষের মতো আমাদের গণমাধ্যমের উদ্যোক্তারাও উদাসীন। তার প্রমাণ, আজকে টেলিভিশন থেকে অনলাইন মিডিয়া সবখানে বাংলা নামের ইংরেজির শব্দ দিয়ে নাম ঠিক করা হয়েছে। যা মোটেও বাংলা ভাষার প্রতি সঠিক মর্যাদা না।”

রোবায়েত ফেরদৌস আরও বলেন, “আমরা অনেক দেরি করে ফেলেছি। প্রায় অর্ধশতাব্দী ধরে আদালতের শরণাপন্ন হতে হয়। এটা দুঃখের ও ক্ষোভের। ঘরে বাংলা অভিধান রাখতে হবে। যে ভাষার পরিভাষা র💟য়েছে সেটা বাংলায় ব্যবহার না করে অকারণে ও অপ্রয়োজনীয় ইংরেজি ভাষার বাক্য ব্যবহার করছ❀ি। অফিস-আদালতে বিভিন্ন জায়গায় নির্দেশনা ও ফরম ইংরেজিতে। বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক বিভাগে উপস্থিতির খাতা ইংরেজিতে। বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষকের ঘরের দরজায় অকারণে ইংরেজি ব্যবহার করা হয়েছে।”

Link copied!