নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজি) বেনজীর আহমেদের সাভানা ইকো রিসোর্টের নামে গড়ে তোলা বিলাসবহুল ডুপ্লেক্স ভবন সিলগালা করে নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার পর ভবটির ভেতরে অভিযান চালিয়েছে জেলা প্রশাসন ও দুদক।
প্রায় চার ঘণ্টা তল্লাশি চালিয়ে বাড়ির ভেতরে থাকা জিনিসপত্রের তালিকা তৈরি করেছে তারা। ডুপ্লেক্সে বিলাসবহুল কিছু পাওয়া যায়নি জানিয়ে প্রশাসনিক কর্মকর্তারা বলেন, ভেতরে যে জিনিসপত্র ছিল, তা সবই লোকাল প্রোডাক্ট।
বুধবার (১০ জুলাই) দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসন ও দুদককের সমন্বয়ে গঠিত একটি যৌথ টিম এ অভিযান পরিচালনা করে। এর আগে গত শনিবার (৬ জুলাই) অভিযান চালিয়ে বাড়িটি সিলগালা করা হয়।
দুদক দুই দফা সম্পত্তির হিসেবে নিয়ে তলব করলেও বেনজীর ও তার পরিবারের কেউ হাজির হয়নি দুদক কার্যালয়ে। এর পরিপ্রেক্ষিতে ৬ জুলাই দুদকের নারায়ণগঞ্জের উপপরিচালক মাইনুল হাসানের নেতৃত্বে তিন সদস্যর একটি দল ও নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসকের এডিসি রাজস্ব শফিকুর আলমের নেতৃত্ব একটি দল ভবনটি প্রবেশ গেটে সম্পত্তি ক্রোকের একটি সাইবোর্ড সাঁটিয়ে দেন। পরে পুরো ভবনটি পরিদর্শন করে ভবনটির দরজা অত্যাধুনিক তালা দিয়ে বন্ধ রাখায় ভেতরে প্রবেশ করতে না পারায় বুধবার (১০ জুলাই) পুনরায় অভিযান চালায় দুদক ও জেলা প্রশাসক। তারা তালা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে প্রতিটি কক্ষে তল্লাশি চালায়।
অভিযান শেষে নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক( রাজস্ব) শফিকুর আলম গণমাধ্যমকর্মীদের জানান, সাবেক আইজি বেনজীর আহমেদের এই বাড়ির সব ধরনের ফার্নিচার খুব সাধারণ মানের। দেশীয় প্রযুক্তির এসি, ফ্রিজ, টিভিসহ রান্নাঘরের জিনিসপত্র একটি সাধারণ পরিবারের যেমন থাকে তেমনি আছে। কিছু বইপত্র, একটি ঝাড়বাতি ও এক সেট সোফা ছাড়া বিশেষ কিছু নেই এ বাড়িতে।
এত দীর্ঘ সময় তল্লাশি ও গণমাধ্যমকর্মীদের প্রবেশে বাধার ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে এডিসি রাজস্ব বলেন, প্রত্যকটা জিনিস নির্ভুলভাবে তালিকা করার জন্যই এত সময় ব্যয় ও সাংবাদিকদের ভেতরে ঢোকানো হয়নি।
এ ব্যাপারে দুদকের উপপরিচালক মঈনুল হাসান বলেন, “মামলার আদেশের প্রেক্ষিতে তারা এ অভিযান চালিয়েছেন। একজন নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেটের নেতৃত্ব ভবনটির ভেতরে প্রবেশ করে বিভিন্ন আসবাবপত্র পেয়েছেন। সেগুলোর তালিকা করা হয়েছে। রিপোর্ট আমরা হেড অফিসে পাঠাব। পরবর্তীতে কোন নির্দেশনা আসলে সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান তিনি।”
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রূপগঞ্জ উপজেলার দক্ষিণবাগ এলাকায় আনন্দ হাউজিং সোসাইটিতে কৃত্💮রিম লেকের পাশে ২৪ কাঠা জায়গাজুড়ে লাল রঙের আলিশান ডুপ্লেক্স বাড়ি। এই বাড়ির মালিক পুলিশের সাবেক আইজি বেনজীর আহমেদ। আট বছর আগে এলাকার প্রয়াত প্রেমানন্দ সরকারের সন্তানদের কাছ থেকে ১ কোটি ৮৩ লাখ টাকায় ৫৫ শতাংশ জায়গা কেনেন তিনি। পরে বছর চারেক আগে এই জমিতে ওই বাড়ি করেন বেনজীর।