দেশে প্রথমবারের মতো ডেঙ্গু টিকার গবেষণা সম্পন্ন করেছে আইসিডিডিআর,বি ও যুক্তরাষ্ট্রের ভার্মন্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইউ🐭ভিএম) লার্নার কলেজ অব🍰 মেডিসিনের গবেষকরা।
বৃহস্পতিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) এক সং👍বাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে আইসিডিꦕডিআর,বি।
এতে বলা হয়, ডেঙ্গু প্রবণ বাংলাদেশে ꦰপ্রথমবারের মতো আইসিডিডিআর,বি ও যুক্তরাষ্ট্রের ভার্মন্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইউভিএম) লার্নার কলেজ অব মেডিসিনের গবেষকরা একটি উৎসাহব্যঞ্জক টেট্রাভ্যালেন্ট ডেঙ্গু টিকা অর্থাৎ ডেঙ্গু ভাইরাসের চারটি ধরনের বিরুদ্ধেই উপযোগী টিকা নিয়ে গবেষণা সম্পন্ন করেছেন।
গবেষণায় ব্যবহৃত এক ডোজ💃ের ডেঙ্গু টিকা টিভি-০০৫ মূল্য✱ায়ন করে দেখা যায়, এটি শিশু-প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে প্রয়োগের জন্য নিরাপদ ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি করতে সক্ষম। গবেষণার ফলাফল সম্প্রতি দ্য ল্যানসেট ইনফেকশাস ডিজিজেস জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে।
ডেঙ্গু একটি মশাবাহিত ভাইরাস, যা বিশ্বব্যাপী বিশেষ করে গ্রীষ্মমণ্ডলীয় অঞ্চলে একটি বড় সমস্যা হয়ে উঠেছে। ডেঙ্গু আক্রান্ত ব্যক্তির মৃদু লক্ষণে জ্বর ও হাড়ের ব্যথা হয় এবং গুরুতর ক্ষেত্রে শক, রক্তপাত ও অনেকক্ষেত্রে মৃত্যুও ঘটে। সাধারণত ডেঙ্গুর চারটি ধরণ (ডেন ১, ২, ৩, ৪) বা সেরোটাইপ এককভাবে বা সম্মিলিতভাবে সক্রিয় থাকতে পারে। যেকোনো সেরোটাইপই একজ🔴ন মানুষকে অসুস্থ করতে পারে। তবে অন্য কোনো সেরোটাইপ দিয়ে দ্বিতীয়বার সংক্রমিত হলে আক্রান্ত ব্যক্তির অবস্থা গুরুতর হওয়ার আশঙ্কা বেড়ে যায়।
বাংলাদেশ বিশ্বের অন্যতম ঘনবসতিপূর্ণ (১,১১৯ জন/বর্গ কিলোমিটার) দেশগুলোর মধ্যে একটি। এখানে প্রায় ১৭ কোটি লোকের বসবাস। ২০ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলাদেশে ডেঙ্গুর প্র🍷াদুর্ভাব ঘটেছে। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে এর আকার ও তীব্রতা আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে। এ বছরের চলমান ডেঙ্গু প্রাদুর্ভাবটি এখন পর্যন্ত সবচেয়ে গুরুতর ও ঢাকার স্বাস্থ্যব্যবস্থার ওপর ভয়ানক প্রভাব ফেলেছে।
গত ২৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সারা দেশে ১ লাখ ৯০ হাজার ৭৫৮ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এছাড়া ৯২০ জনের বেশি হয়েཧছে। দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশগুলোতেও ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়ছে। বর্তমানে✅ তরল খাবার ব্যবস্থাপনা ও উপসর্গ নিয়ন্ত্রণই ডেঙ্গুর একমাত্র প্রচলিত চিকিৎসাব্যবস্থা। তাই বিশ্বব্যাপী ডেঙ্গুর চারটি সেরোটাইপের বিরুদ্ধে একটি কার্যকরী টিকা উন্নয়ন গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে।
আইসিডিডিআর,বি ও ইউভিএমের ভ্যাকসিন টেস্টিং♓ সেন্টারের (ভিটিসি) গবেষকরা ২০১৫ সালে ‘ডেঙ্গু ইন ঢাকা ইনিশিয়েটিভ (ডিডি)’ নামে গবেষণাটি শুরু করে। এ সহযোগিতামূলক প্রচেষ্টার লক্ষ্য ছিল ডেঙ্গু টিকার উন্নয়নে বাংলাদেশকে সম্পৃক্ত করা। ২০১৫ থেকে ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল, ল্যাবরেটরি পরীক্ষণ অবকাঠামো ও প্রারম্ভিকভাবে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব অধ্যয়ন সংশ্লিষ্ᩚᩚᩚᩚᩚᩚᩚᩚᩚ𒀱ᩚᩚᩚট গবেষণার জন্য আইসিডিডিআর,বিতে প্রয়োজনীয় সক্ষমতা তৈরি করা হয়।
দ্য ল্যানসেট ইনফেকশাস ডিজিজেসে প্রকাশিত এ গবেষণাটি একটি দৈবচয়নভিত্তিক ও ফেজ-২ ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল। এর মাধ্যমে টিভি-০০৫ টেট্রাভ্যালেন্ট লাইভ-অ্যাটেনুয়েটেড ডেঙ্গু টিকার নিরাপত্তা, ইমিউনোজেনিসিটি বা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরির সক্ষমতা এবং তিন বছর পর্যন্ত রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার স্থায়িত্বের অবস্থা মূল্যায়ন করা হয়েছে। গবেষকরা ২০১৬-থেকে শুরু করে বিভিন্ন বয়সের (বয়স ১-৪৯ বছর) ১৯২ জন স্বেচ্ছায় অংশগ্রহণকারীকে চারটি ভাগে ভাগ করে ৩:১ অনুপাতে টিভি-০০৫ টিকা বা প্লাসিবো দিয়েছেন এবং তিন বছর পর্যন্ত পর্যবেক্ষণ করেছেন। টিকা দেওয়ার পরে বেশিরভাগ 𝓀স্বেচ্ছাসে꧂বকের মধ্যে চারটি ডেঙ্গুর সেরোটাইপের অ্যান্টিবডি পাওয়া গেছে। যারা আগে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছিলেন তাদের অ্যান্টিবডির পরিমাণ বেশি পাওয়া গেছে। যদিও গবেষণাটি কার্যকারিতা মূল্যায়ন করার জন্য ডিজাইন করা হয়নি। তবে এখন পর্যন্ত টিকাপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের মধ্যে ডেঙ্গু সংক্রমণের কোনো ঘটনা শনাক্ত করা যায়নি। গবেষণালব্ধ এ ফলাফলগুলো ডেঙ্গু প্রবণ জনগোষ্ঠীতে ব্যাপকহারে টিভি-০০৫ ডেঙ্গু টিকা ব্যবহারের জন্য উপযোগী করে তোলার পাশাপাশি তৃতীয় ধাপের কার্যকারিতা ট্রায়াল পরিচালনার জন্য সমর্থন জোগাড় করতে সহায়তা করবে।
২০০৯ সাল থেকে ইউভিএম♒ের ভ্যাকসিন টেস্টিং সেন্টার🌃 যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব হেলথের (এনআইএইচ) তৈরি ডেঙ্গু টিকার মূল্যায়ন করে আসছে। ইউভিএম টিমের নেতৃত্বে রয়েছে প্রফেসর বেথ কির্কপ্যাট্রিক, এমডি ।
এছাড়া গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন- মেরি ক্লেয়ার ওয়ালশ, পিএ; ক্রিস্টেন পিয়ার্স, এমডি; ডোরোথি, এমএস; শন ডিয়েল, পিএইচ🌱ডি এবং মারিয়া কারমোলি, বি এস। তাদের ডেঙ্গু টিকা প্রোগ্রামটি ইউভিএম ভিটিসি এবং ইউএস ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব হেলথের ভাইরাল ডিজিজেস ল্যাবরেটরির সিনিয়র গবেষক স্টিফেন হোয়াইটহেড, পিএইচডি (যিনি একজন ভাইরোলজিস্ট ও টিভি-০০৫ টিকার উদ্ভাবকদের একজন) এবং জনস হপকিন্স স্কুল পাবলিক হেলথের আন্না ডারবিন এমডির সঙ্গে একটি দীর্ঘ পারস্পরিক সহযোগিতার ফসল। আইসিডিডিআর,বি-র সঙ্গে এ সহযোগিতামূলক কাজের আগে ইউভিএম ভিটিসি সমগ্র মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে কয়েক ডজন গুরুত্বপূর্ণ🐻 গবেষণা পরিচালনা করেছে, যা মূলত ডেঙ্গু টিকার একক ও টেট্রাভ্যালেন্ট ফর্মুলেশন এবং কনট্রোলড হিউম্যান চ্যালেঞ্জ মডেলের ছিল।
আইসিডিডিআর,বি-গবেষকদের মধ্যে প্রধান গবেষক হিসেবে রয়েছেন সিনিয়র বিজ্ঞানী রাশিদুল হক, এমবিবিএস, পিএইচডি এবং গুরু﷽ত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন মো. শফিউল আলম, পিএইচডি; সাজিয়া আফরিন, এমবিবিএস ও মো. মাসুদ আলম, এমবিবিএস।