বিএনপি-জামায়াতের ডাকা দ্বিত𝐆ীয় দফার দুই দিনের অবরোধের প্রথম দিন চলছে রোববার (৫ নভেম্বর)। এদিন বাজারে বেড়েছে কাঁচা মরিচের দাম। শনিবার (০৪ নভেম্বর) যে কাঁচা মরিচ প্রতি কেজি বিক্রি হয়েছে ১০০-১১০ টাকা। সেই একই কাঁচা মরিচ রোববার প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৬০-২০০ টাকা। এছাড়া অবরোধে নিত্যপণ্যের বাজারে সাধারণ ক্রেতাদের স🌠মাগম কমই লক্ষ্য করা গেছে।
রাজধানীর কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা যায়, স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় অবরোধের দিন ক্রেতার সমাগম কম। তবে থেমে নেই দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি। বাজারে ক্রেতার উপস্থিতি ꦚকম কেন প্রশ্ন করতেই প্রতিবেদকের কাছে নিজের আক্ষেপ প্রকাশ করেন উত্তরা আজমপুর কাঁচা বাজারের ব্যবসায়ী মো. মজিবুল ইসলাম🐓।
সংবাদ প্রকাশকে তিনি বলেন, “ব্যবসা করে শান্তি নেই। তিনদিন ভালো থাকে তো দুইদিন অবরোধ-হরতাল। এভাবে আর কতদিন বাঁচা যায়। কিছুদি꧒ন আগে তিনদিন অবরোধ ছিল। তখন ব্যব𝕴সা খুব একটা ভালো হয়নি। এক মাস না যেতেই এখন আবার দুই দিনের হরতাল। এমনিতেই হরতাল-অবরোধের মধ্যে সাধারণ মানুষ ঘর থেকে বের হতে চায় না। এভাবে চলতে থাকলে ব্যবসা করবো কি আর পরিবার নিয়ে খাবো কি।”
তিনি আরও বলেন, “আজ সকাল থেকেই বাজারে তেমন ক্রেতা নেই। যারা আসে, তারা আবার বলে এই জিনিসের দাম বেশি, ওই জিনিসের দাম বেশি। আসলেই আপনি বলেন, আমরা পণ্য বেশি দামে কিনলে কম দামে বিক্রি করলে ব্যবসা থাকবে। আমরা শুধু শুনি কাউকেই কিছু বলতে পܫারি না।”
জানা গেছে, বাজারে প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১৫০-১৫৫ টাকা, এলসি পেঁয়াজ ৮৬-৯০ টাকা, আলু ৪৬ টাকা, নতুন আলু ১৫০ টাকা, লাউ ৫০ টাকা, করলা ৫০ টাকা, পটল ৪০ টাকা, মুলা ৪০ টাকা, ঢেঁড়স ৪০ টাকা, বরবটি ৬০ টাকা, বেগুন ৫০ টাকা, ঝিঙা ৪০ টাকা, মুলা শাক ২০ টাকা, পালংশাক ২০ টাকা, লাল শাক ১০ টাকা, পুঁই শাক ৩০-৪০ টাকা, আবার কেউ ৫০ টাকাও বিক্রি করছেনౠ। ডাটা শাক ১৫ টাকা, দেশি আদা ২২০ টাকা, এলসি আদা ২১০ টাকা, রসুন দেশি ২২০ টাকা, চায়না আদা ১৭০-১৮০ টাকা, ফুলকপি ৪০-৫০ টাকা, সিম ৮০ টাকা, গাজর ১০০ টাকা, শসা ৫০ টাকা।
মহাখালী কাঁচা বাজারে এসেছেন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত মো. শফিকুল ইসলাম। কাঁচা মরিচ কিনবেন বলে অফিস থেকে একটু সময় বের করে বাজারে এসেছেন তিনি। কাঁচা মরিচ প্রতꦏি কেজি বিক্রি হচ্ছে ২শ টাকা। তাই আধা কেজি কিনেছেন। ২শ’ টাকা কেজিতে কাঁচা মরিচ বিক্রি হওয়ায় কোনো অভিযোগ না করেই তিনি বাজার থেকে বের হলেন।
শফিকুল ইসলামের সঙ্গে গণমাধ্যম পরিচয়ে কথা বললে সংবাদ প্রকাশ প্রতিবেদকের কাছেꦿ দীর্ঘ প্রতিক্রিয়া জানান তিনি।বললেন দুঃখের কথাও। তিনি বলেন, “চাকরি করি একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে। পদবী ছোটখাটো। মাসশেষে বেতন যা পাই তা দিয়ে 🍬সংসার চালাতে খুব কষ্ট হয়। মাসের শেষে মানুষের কাছে থেকে টাকা ধার করা ছাড়া চলতে খুব কষ্ট হয়।”
তিনি আরও বলেন, “সপ্তাহের সাতদিন কাঁচা বাজারের সাত রকম দাম। একেক দিন একেক দাম। বাজারে না আসলে বলা যায় না কোন জিনিসের কত দাম। ৫শ টাকা নিয়ে বাজারে আসলে যে কয়টা জিনিস কিনবো বলে ঠি🍌ক করি, দেখা যায় দু’একটা ছাড়াই বাজার করতে হয়। টাকায় কুলায় 🅷না।”
শফিকুল ইসলাম বলেন, “রাজনৈতিক দলের অবরোধ কর্মসূচি চলছে। আমরা সাধারণ মানুষ, খেটে খাই। কর্ম না করলে আমাদের সংসার চলে না। আমাদের কথা রাজনৈতিক দল বিবেচনা করলে অবরোধ দিতো না। তারা তাদের স্বার্থ হাসিলের জন্𝓀য কর্মসূচি দিচ্ছে। সামনে নির্বাচন আসছে এই হরতাল-অবরোধ, ভাঙচুর, অগ্নি সংযোগ এগুলো বাড়তে থাকবে আর আমাদ▨ের বারোটা বাজবে।
অভিযোগ আছে হাজারখানেক অথবা তার চেয়েও বেশি। কিন্তু কি করবো, কার কাছে বলবো। চলমান পরিস্থিতিতে সংসার চালাতে না পারলে পরিবার নিয়ে গ্রামে যেতে ꦅহবে। এছাড়া আমাদের আর ꦅকিছু করার নেই।”
কাঁচা বাজারে প্রায় সব জিনিসের দাম বৃদ্ধি নিয়ে ব্যবসায়ীরা বলছেন ভিন্ন কথা। তারা বলছেন, বাজারে পণ্য সংকট, অবরোধ-হরতালের কারণে পণ্যবাহী গাড়ি আগের মতো ঢাকায় প্রবেশ করছ♎ে না। আড়তদাররা যে দামে পণ্য আমাদের কাছে বিক্রি করছে সেই পণ্যই আমরা একটু লাভে ছেড়ে দিচ্ছি। বেশি লাভ করছেন আড়তদার। সীমিত লাভে পণ্য না ছাড়লে আবার পচে যাবে। সব দ🎐িকই বিবেচনা করতে হচ্ছে আমাদের।
নাম প্রকাশ না করা🎃র শর্তে কারওয়ান বাজারের এক ব্যবসায়ী সংবাদ প্রকাশকে বলেন, “যে পণ্য গতকাল কিনেছি দুই টাকায়, সেই একই পণ্য আজ তিন সাড়ে তিন বা চার টাকায় কিনতে হচ্ছে। এখন বলেন এই যে দেড় থেকে দুই টাকা বাড়লো, এটা কিভাবে? আড়তে🌠 কি পণ্য একেবারেই সংকট, যে হাহাকার অবস্থা। আসলে এখানে বড় ব্যবসায়ীদের নানা পদ্ধতি থাকে দাম বাড়ানোর। পণ্য মজুত ঠিকই আছে, কিন্তু সংকট বলে আমাদের মতো ব্যবসায়ীদের কাছে বেশি দামে বিক্রি করছে।”
তিনি আরও বলেন, আপনি মনে করে আড়ত থেকে একটি পণ্য তিন টাকায় কিনলেন অথবা খুব বেশি হলে চার টাকা। এখন সেই পণ্য আপনি কত টাকায় বিক্রি করবেন। সাধারণ ক্রেতারা আমাদের কাছে এসে নানা অভিযোগ করে থাকেন। এখন আমরা সেই অভিযোগ নিয়ে কার কাছে যাবো। আসলে আমরা ক্রেতাদের মতোই অসহায়। ক্রেতারা আমাদের কাছে এসে অভিযোগ দেয় আমরা শুনে থাকি উত্তর দিতে পারি না♐। মাঝেমধ্যে তাদের গালিও শুনতে হয়।”