‘মায়া দর্পণ’ ও ‘তরঙ্গ’র মতো যুগান্তকারী চলচ্চিত্র দিয়ে বিশ্বজুড়ে প্রশংসা কুড়িয়েছেন কুমার সাহানি। রোববার ( ২৫ ꦛফেব্রুয়ারি) কলকাতায় মারা গেছেন তিনি। ভারতে আর্টহাউজ সিনেমার অন্যতম পথিকৃৎ চলཧচ্চিত্র নির্মাতা পাঁচটি অজানা তথ্য তুলে ধরা হল-
১. কুমার সাহানি আজীবন ঋত্বিক ঘটককে তার প্রথম ও♑ প্রধান গুরু বলে মানেন। এরপর কিংবদন্তি ফরাসি চিত্রনির্মাতা রবার্ট ব্রেসোঁ, ইতালীয় চিত্রনির্মাতা রবার্তো রসেলিনি ও রুশ কিংবদন্তি সের্গেই আইজেনস্টাইনের প্রভাব নিজের সিনেমায় ধারণ করেছেন বলে সব সময় বলে এসেছেন।
২. পুনের এফটিআইআইয়ে পড়ার সময় কুমার সাহানি মণি কাউল ও জন আব্রাহ෴ামের মতো ভুব🏅নবিখ্যাত চিত্রনির্মাতার সহপাঠী ছিলেন। তাঁদের তিনজনেরই অভিন্ন গুরু ছিলেন ঋত্বিক ঘটক।
৩. পুনেতে অবস্থানকালে ঋত্বিক ঘটক প্রায়ই তাঁর প্রিয় ছাত্রদের সঙ্গে এদিক–ওদিক বেরিয়ে পড়তেন। একদিন কুমারের সঙ্গে বেরিয়ে তিনি রাস্তার মাঝখানে হঠাৎ দাঁড়িয়ে পড়লেন। কুমার ভাবলেন, প্রায়ই তিনি যা করেন, আজেবাজে কুখ্যাত জায়গায় মাঝরাতে দেশি মদ খুঁজতে বেরোন, তাই হবে হয়তো। একটা দেশি মদের দোকান ছিল শৌচাগারের পাশে। ভয়ানক জায়গা। গুরুর সঙ্গে সেখানে একগাদা গাড়ি, অসংখ্য যৌনকর্মীর মাঝখান দিয়ে দিয়ে হেঁটে যান কুমার। হঠাৎ ঋত্বিক থেমে গেলেন, বললেন, আহ৷ কুমার একটু অবাক হয়ে থেমে গেলেন, বললেন, দাদা কী হয়েছে? ঋত্বিক বললেন, ‘আরে শুনতে পাচ্ছ না? কী অপূর্ব গানটা গাইছেন আশা।’ আশা ভোঁসলের একটা হিন্দি সিনেমার গান, পাঞ্জাবি লোকগানের সুরে। তিনি বললেন, আরে শোনো, আহ, কী গাইছে। ঋত্বিকের সঙ্গে কুমারও ব𓆏াকি গানটা ওই রাস্তার মধ্যে দাঁড়িয়েই শুনলেন।
৪. কুমারকে মণি কাউল একবার বলেছিলেন, ‘আমরা তো সিনেমার পরিবার থেকেই এসেছি, আমার কাকা ফিল্ম-এডিটর, আমি সিনেমাটা জানি। কিন্তু পুনে এসে আইজেনস্টাইন, কুরোসাওয়া জানলাম৷ কিন্তু ঋত্বিকদা যখন এলেন, সবকিছু বদলে গেল। সিনেমা হয়ে উঠল আমার জীবন, আমার প্যাশꦏন।’ এটাই ছিল তাঁর পড়ানো; গৎবাঁধা নয়, শৈল্পিক।
৫. হিন্দি ঔপন্যাসিক নির্মল বর্মার কাহিনি অবলম্বনে কুমারের প্রথম চলচ্চিত্র মায়া দর্পণ (১৯৭২) সে বছর শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র হিসেবে জাতীয় পুরস্কার পায়। এর দুই বছর পর চলচ্চিত্রটি যুক্তরাষ্ট্রের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠক্রমে অন্তর্ভুক্ত হয়। এরপরও দ্বিতীয় সিনেমায় হাত দিতে কুমারের এক যুগ কেটে যায়। আর তা শুধুই প্রযোজকের অভাবে।