• ঢাকা
  • সোমবার, ১৪ অক্টোবর, ২০২৪, ২৮ আশ্বিন ১৪৩১, ১০ রবিউস সানি ১৪৪৬

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Songbad Prokash

ইনস্টাগ্রাম

টুইটার


লিংকডইন

পিন্টারেস্ট

গুগল নিউজ


নাটকে অশ্লীলতার বিরুদ্ধে সরব অভিনেতা-নির্মাতা-প্রযোজকেরা


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: জুন ১৮, ২০২৩, ০৭:৩৫ পিএম
নাটকে অশ্লীলতার বিরুদ্ধে সরব অভিনেতা-নির্মাতা-প্রযোজকেরা

এক সময় পরিবারের সবাই মিলে টিভির সামনে ঘন্টার পর ঘন্টা কাটাত। নাটক, সিনেমা দেখে পার করতো অবসর সময়। তবে বিগত কয়েক বছরে টিভি নাটক হারাতে বসেছে তার ঐতিহ্য। অশ্লীল নাম ও ꦛভাষার ব্যবহার এত বেড়েছে যে, পরিবার নিয়ে নাটক দেখাই দায়। টেলিভিশন ও ডিজিটাল মাধ্যমে নাটকে অশ্লীলতার আগ্রাসনের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন অভিনেতা, নি🅰র্মাতা ও প্রযোজকেরা।

শনিবার (১৭ জুন) এ বি🤡ষয়ে একটি মুক্ত আলোচনার আয়োজন করে নাট্যনির্মাতাদের সংগঠন ডিরেক্টরস গিল্ড। এ আলোচনায় যোগ দেয় ছোট পর্দার প্রযোজকদের সংগঠন টেলিপ্যাব, অভিনয়শিল্পী সংঘ, টেলিভিশন নাট্যকার সংঘ ও ক্যামেরাম্যান অ্যাসোসিয়েশন। বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমিতে ডিরেক্টরস গিল্ডের সভাপতি অনন্ত হিরার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয় এই মুক্ত আলোচনা।

বক্তব্যে অনন্ত হিরা বলেন, আমাদের বাংলা নাটকের রয়েছে গৌরবময় ঐতিহ্য। কিন্তু বিগত কয়েক বছরে সেই ঐতিহ্য হারাতে বসেছি। এখন ৯৮ শতাংশ নাটকেরই বিষয়বস্তু প্রেম, অপরাধ, খুন, রক্তপাত আর যৌনতার স্থূল চিত্রায়ণ। আমাদের বর্তমান নাটক দেখলে মনে হয় প🐲্রেম ছাড়া বা প্রেমজনিত সমস্যা আর কষ্ট ছাড়া কোনো বিষয় নেই। দেশ-মাটি-মানুষের যে সংকট, রুচির যে সংকট, মান𒉰বিক সম্পর্কের সংকটগুলো আর এখন আমাদের নাটকের বিষয়বস্তু হয়ে উঠতে পারছে না।

অনন্ত হিরা আরও বলেন, আমাদের নাটক থেকে বাবা, মা, ভাই, বোন, আত্মীয়, বন্ধু চরিত্রগুলো হারিয়ে যাচ্ছে। এ বাস্তবতায় কিছুসংখ্যক নায়ক-নায়িকা ছাড়া অধিকাংশ গুণীশিল্পীর হাতে কাজ নেই। আমাদের টেলিভিশন ও ডিজিটাল মাধ্যমের নাটকে কুরুচিপূর্ণ অশ্লীল দৃশ্যধারণ, অশ্লীল সংলাপের ব্যবহার এবং নাটকের নাম নির্বাচনেও রুচিহীনতা আর অশ্লীলতার আগ্রাসন একদিকে আমাদের নাটকের ঐতিহ্যকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে। অন্যদিকে, আমরা উদ্বেগের সঙ্গে আশঙ্কা করছি, নাটকের ভিউ বাড়ানোর এই অসুস্থ অশ্লীল প্রতিযোগিতা আমাদের সামাজিক, পারিবারিক জীবনে সুস্থ ওরুচি, সুস্থ সাংস্কৃতিক চর্চা ও বিকাশে র যে প্রয়োজনীয়তা, সেটাকে হুমকির মধ্যে ফেলে দিয়েছে।

এ বিষয়ে নাট্যব্যক্তিত্ব মামুনুর রশীদ তার বক্তব্যে বলেন, নাটকের এ অবস্থার পেছনে অর্থনৈতিক একটা ব্যাপারও আছে। ইউটিউব বা ডিজিটাল মাধ্যমে অনেকেই উপার্জন করছে এটা ভুলে গেলে চলবে না। এমন অবস্থা দাঁড়িয়েছে যে, টিভি চ্যানেলগুলো নাটক প্রচারের পর তা ইউটিউবে দিয়ে দিচ্ছে। ইউটিউবে যে নাটকটি বেশিবার দেখা হচ্ছে, সেটাও টেলিভিশনে প্রচার হচ্ছে। এমন অনেক দেশ আছে, যেখানে ইউটিউব কনটেন্টের ক্ষেত্রে বিশ𒀰েষ নিয়ম করা হয়েছে। ফলে সেখানে যা খুশি তা দেখানো সম্ভব নয়। অশ্লীলতা, কুরুচিপূর্ণ কনটেন্ট রুখতে হলে আমাদের দেশে এমন নিয়ম করা প্রয়োজন বলে আমার মনে হয়। টাকাটা না পেলেই কিন্তু ইউটিউবের কুরুচিপূর্ণ প্রযোজনাগুলো বন্ধ হয়ে যাবে। তখন চ্যানেলগুলো আবার আগের ধারায় চলে আসবে। নাটকের এ দুরবস্থা কাটিয়ে উঠতে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। তাহলেই হয়তো এর সমাধান সম্ভব।

নাট্যকার সংঘের সভাপতি হারুন রশীদ বলেন, আমি দীর্ঘদিন সেন্সর বোর্ডে কাজ করেছি। সে সময় আমরা অনেক অংশ কেটে রাখতাম। বর্তমানে অনেক নাটকജের দৃশ্য ও সংলাপ সেই কাটা অংশের চাইতে বেশি অগ্রহণযোগ্য বলে আমার মনে হয়। এর দায় টিভি চ্যানেলগুলোকেও নিতে হবে। তারাও ভিউয়ে༺র পিছনে ছুটছে। নাটক তৈরির আগে তারা অভিনয়শিল্পী বাছাই করে দিচ্ছে। এই পন্থা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। এ ধরনের কনটেন্টের প্রথম প্রতিবাদটা কিন্তু নির্মাতাকেই করতে হবে। তাহলে সমাধানের পথটা মসৃণ হবে।

অভিনেত্রী নাজনীন হাসান চুমকী বলেন, নাটক দেখার বদলে যখন থেকে খাওয়ায় রূপান্তরিত হয়েছে, তখন থেকেই এ সংকট শুরু হয়েছে। আমি তো নাটক খাওয়াতে আসিনি। আমার সংস্কৃতি দেখাতে এসেছি। মানুষ আমাদের কথা শোনে, অভিনয় দেখে, নাট্যকার-নির্মাতাদের কথা তাদের ভাবায়। বর্তমানে আমরা আকাশ সংস্কৃতির মধ্যে আছি, যেটার মধ্যে কোনো সীমানা নেই। তার মানে কি আমরা আমাদের সংস্কৃতির বাইরে চলে যাব? আজ যে কনটেন্ট নিয়ে আলোচনা হচ্ছে, সেটা কি আমাদের সংস্কৃতির মধ্যে পড়ে? তার মানে আমরা সংস্কৃতি নিয়ে ভাবছি না। একটা সময় আমরা পরিবারের সবাই মিলে নাটক দেখতাম। সেই ব𒅌িষয়টি এখন রূপকথার গল্পের দিকে চলে যাচ্ছে।

প্রযোজক মনোয়ার পাঠান বলেন, একসময় নাটকে শিক্ষণীয় বিষয় থাকত। সে বিষয়টি নাটক থেকে বিলুপ্তির পথে। এখন নাটকে ও ওটিটিতে এমন কিছু সংলাপ ব্যবহার হয়, যেগুলো পরিবারের সামনে প্রকাশ্যে বলা যায় না। যে সংলাপ প্রকাশ্যে বলার মতো নয়, সেই সংলা🦄প কেন নাটকে আসবে? এই সমস্যা থেকে উত্তরণের দায় নাটকের সঙ্গে যুক্ত সবাইকে নিতে হবে। সোশ্যাল মিডিয়া ♏কিংবা ইউটিউবে কতটুকু দেখানো যাবে, তার একটা ন্যূনতম গাইডলাইন থাকা প্রয়োজন। এ ছাড়া আপত্তিকর কনটেন্টের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। তাহলে এ প্রবণতা কমে আসবে।

অভিনেতা, নির্মাতা ও 🐬প্রযোজক ছাড়াও আলোচনায় অংশ নেন বিভিন্ন টিভি চ্যানেলের কর্মকর্তারা।

Link copied!