উত্তরবঙ্গের অক্সফোর্ডখ্যাত বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী আজ। ২০০৮ সালের ১২ অক্টোবর তৎকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের শিক্ষা উপদেষ্টা ড. হোসেন জিল্লুর রহমান রংপুর বিশ্ববিদ্যালয় নামে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন। ২০০৯ সালে নারী জাগরণের অগ্রদূত বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেনের স্মরণে নাম পরিবতন করে ‘বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়’ করা হয়। এটি রংপুর বিভাগের একমাত্র পূর্ণা𓂃ঙ্গ সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়।
সবুজ ক্যাম্পাস
একসময় এ বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে আলু এবং মুলা চাষ হতো। বিকেলে ছেলেরা মাঠে খেলাধুলা করত। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় নির্মাণের শুরুতে পুরো এলাকাটি প্রায় মরুভূমিতে পরিণত হয়। তখন এখানে কোনো গাছপালা ছি🔴ল না। ছায়ার অভাব ছিল, এবং চারদিকে এক ধরনের শূন্যতা বিরাজ করত। তবে বর্তমানে সেই চিত্র বদলে গেছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের শিক্ষক ড. তুহিন ওয়াদুদের নেতৃত্বে এবং অনেকের সহযোগিতায় এই ক্যাম্পাসে ৪০০ প্রজাতির প্রায় ৩৬,০০০ গাছ রোপণ করা হয়েছে। ক্যাম্পাসে✤ অনেক প্রজাতের দুর্লভ গাছ, এদের মধ্যে রয়েছে জয়তুন, পারুল, হৈমন্তী, জয়ত্রী, ঢাকি, জাম, তেলসুর, পুত্রঞ্জীব, কানাইডিঙা, হলদু, দইবোটা, পুমুর, মহুয়া, পানিয়াল, পেস্তাবাদাম, কাজুবাদাম, চিকরাশি ও নাগেশ্বর।
এসব গাছ এখন ছায়া দিচ্ছে এবং পুরো ক্যাম্পাস সবুজে ভরে উঠেছে। বেগম রোকেয়া বিশ্বব🦂িদ্যালয় এখন অসংখ্য মানুষের মুক্ত নিঃশ্বাস এবং বিনোদন ভূ-খণ্ডে পরিণত হয়েছে।
সংকট ও সম্ভাবনা
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় বর্তমানে একাধিক সংকটের মুখোমুখি। এর মধ্যে সবচেয়ে বড় দুটি সংকট হলো অবকাঠামো এবং শিক্ষক সং𝓡কট। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকের সংখ্যা কম, যা ছাত্রছাত্রীদের শিক্ষার মানে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। এ ছাড়া শ্রেণিকক্ষের সংকটের কারণে শিক্ষা কা𝕴র্যক্রম পরিচালনা করতে বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রতিনিয়ত হিমশিম খাচ্ছে।
অবকাঠামোগত সংকটগুলোও দীর্ঘস্থায়ী। দুর্নীতির কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০ তলা বিশিষ্ট একটি ছাত্রী হল, ড. ওয়াজেদ ইন্টারন্যাশনাল রিসার্চ অ্যান্ড ট্রেনিং ইনস্টিটিউট এবং স্বাধীনতা স্মারকের নির্মাণকাজ দীর্ঘ দশ বছর ধরে স্থবির হয়ে আছে। এ ছাড়া প্রতিষ্ঠার এক যুগ পরেও বিশ্ববিদ্যালয়ে এখনো ꦚনেই কোনো অডিটোরিয়াম বা জিমনেশিয়াম।
আবাসন সংকট আরও একটি বড় সমস্যা। ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য পর্যাপ্ত আবাসিক হল সুবিধা না থাকায় শিক্ষার্থ🐓ীদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। এমনকি বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি নিজস্ব খেলার মাঠও নেই, যা শিক্ষার্থীদের শর🌜ীরচর্চা ও বিনোদনের সুযোগকে সীমিত করছে।
অন্যদিকে, বিশ্ববিদ্যালয়ের ♒শিক্ষার্থীরা নতুন উপাচার্যের কাছ আাশা করছেন যে, এই সংকটগুলো কাটিয়ে উঠতে প্রশাসন যথাযথ উদ্যোগ নেবে এবং ভবিষ্যতে বেরোবি একটি সমৃদ্ধ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পরিণত হবে।
সহশিক্ষা ও সমাজিক সংগঠন
সাংস্কৃতিক চর্চায় বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় ইতিমধ্যে অনেক দূর এগিয়ে💫ছে। গড়ে উঠেছে বেশ কিছু সামাজিক ও ও সাংস্কৃতিক সংগঠন। সহশ𒉰িক্ষা কার্যক্রমও এগিয়েছে বেশ অনেকটা পথ।
সাংস্কৃতিক অঙ্গন মাতাতে রয়েছে বিভিন্ন 🦩সাংস্কৃতিক সংগঠন ভবতরী, গুনগুন, রনন, উদীচী, চারণ সাংস্কৃতিক 𝓡কেন্দ্র, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় ফিল্ম সোসাইটি ও ইংলিশ কালচারাল সোসাইটির মতো নামকরা সাংস্কৃতিক গোষ্ঠী।
আরও রয়েছে বিতার্কিকদের প্রিয় সংগঠন বেগম রোকেয়া ইউনিভার্সিটি ডিবেট ফোরাম এবং বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় ডিবেট অ্যাসোসিয়েশন🎃।
বিশ্ববিদ্যালয়টিকে দে🌼শ ও দেশের বাইরে তুলে ধরতে রয়েছে একমাত্র সাংবাদিক সংগঠন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি (বেরোবিসাস)।
ক্যাম্পাস তুলনামূলক ছোট হওয়ায় এখানকার অনুষ্ঠানগুলোতে কেউ পৃষ্ঠপোষক হতে চায় না। পৃষ্ঠপোষক ছাড়া বড় কোনো অনুষ্ঠান করাও যায় না। বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগঠনগুলো যেহেতু বিশ্ববিদ্যালয়কে প্রতিনিধিত্ব করার জন্যই কাজ করে থাকে, সেহেতু বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে সংগঠনগুলোকে এককালীন সহযোগিতা করলে সংগঠনগুলোকে কোনো অনুষ্ঠান চান কিংবা যেকোনো জাতীয় ও আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ নিয়ে চিন্তা করতে হবে না। বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম আরো একধাপ এগিয়ে নিয়ে যায়ে এই এই সংগঠনগুলো।